স্কুলে চলছিল সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে নাটক। অভিযোগ, সেই অপরাধেই স্কুলের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা করল পুলিশ। শুধু তাই নয়, স্কুলে ঢুকে ছোট ছোট পড়ুয়াদের রীতমতো জেরা করা হল তিনদিন ধরে। ক্লাস ফোর-ফাইভের পড়ুয়াদের বসিয়ে টানা প্রশ্ন করা হল। কে তাদের শিখিয়েছিল, কী শিখিয়েছিল, বারবার জানতে চাওয়া হল। অবশ্য় পুলিশের অভিযোগ, ওই নাটকে প্রধানমন্ত্রীকে অসম্মান করা হয়েছে।
কর্নাটকের বিদার শহরের এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য় ছড়িয়েছে। রবিবার নাটকটি মঞ্চস্থ করা হয়েছিল শাহিন এডুকেশন ইনস্টিট্য়ুটে। সেখানকার সিইও তৌসিফ মাদিকেরি অভিযোগ করেন, পুলিশ স্কুলের পড়ুয়া ও শিক্ষকদের মানসিকভাবে হেনস্থা করে গত তিনদিন ধরে। প্রসঙ্গত, এবিভিপি কর্মী নীলেশ রাকশল গত ২৬ জানুয়ারি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন আর তার ভিত্তিতেই দেশদ্রোহিতার মামলা করা হয় স্কুলের বিরুদ্ধে। নীলেশের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষ মুসলিমদের মধ্য়ে এক ধরনের আতঙ্ক তৈরি করতে চেয়েছিল যে, সিএএ বা এনআরসি হলে তাদের দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। স্কুলের ম্য়ানেজমেন্টের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪(এ) ও ১৫৩(এ) ধারায় মামলা করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে 'বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্য়ে বিদ্বেষ তৈরি করা'র অভিযোগ আনা হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগও আনা হয়েছে যে, তারা পড়ুয়াদের ব্য়বহার করেছে নাটকের মাধ্য়মে, যেখানে খোদ প্রধানমন্ত্রীকে খাটো করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই বিহার থেকে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে শাহিনবাগ আন্দোলনের অন্য়তম সংগঠক শারজিল ইমামকে। শারজিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি প্রকাশ্য়ে অসম ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে দেশ থেকে আলাদা করার কথা বলেছিলেন। তবে ব্য়ক্তির বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা সম্প্রতি এদেশে খুব স্বাভাবিক হয়ে গেলেও, কোনও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা বিশেষ করে একটি স্কুলের বিরুদ্ধে, কিছুটা অভিনবই বটে।