ভারতীয়দের সমস্ত আবেগকে একসঙ্গে ধরে রাখে দেশের সেনাবাহিনী। সেই সেনাবাহিনীর ওপর হামলা হলে রাগে রক্ত ফুটতে থাকে দেশবাসীর। প্রায় ছয় দিন পর সিয়াচেনের হিমবাহের নীচে থেকে জীবিত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল এক সেনাকে, তাঁর আরোগ্য কামনা করে দেশের নাগরিক নিজ নিজ আরাধ্য দেবতার কাছে প্রার্থনা করতে শুরু করেছিলেন। যখন জানা গিয়েছিল, ওই সেনার এক একটা অঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দিচ্ছে তখন দেশের অনেকেই তাঁকে নিজের কিডনি দিয়ে সাহায্য করতে চেয়েছিলেন। সেনা নিয়ে ভারতীয়দের আবেগ এমনটাই। আর সেই আবেগকে পাশে নিয়েই সিয়াচেনে অক্সিজেন প্রদানকারী গাছ লাগানোর ব্যবস্থা করলেন পুনার এক বয়স্ক দম্পতি।
সিয়াচেন সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫,৪০০ মিটার ওপরে অবস্থিত। এখানে অক্সিজেন এতটাই কম, টহল দেওয়ার সময় সেনাদের অনেক সময় অক্সিজেনের মাস্ক পরতে হয়। এই ধরনের জায়গায় বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়াতে পারে, এমন গাছ লাগানোর ব্যবস্থা করলেন পুনার প্রবীণ দম্পতি। এই ধরনের গাছকে সিয়াচেনের মতো পরিবেশে খাপ খাওয়ানো জন্য যোগেশ চিথাদে ও সুমিত্রা চিথাদেকে চার বছর ধরে কাজ করতে হয়েছে। বিক্রি করতে হয়েছে গয়নাও। গণতহবিল থেকে তাঁরা ২ কোটি সাহায্য পান বলে জানা গিয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে তাঁরা নিজেদের বাড়ি বিক্রিরও পরিকল্পনা করেছিলেন। এর ফলে ২০,০০০ সেনা উপকৃত হবেন বলে যোগেশ চিথাদে জানিয়েছেন।
যোগেশ চিথাদে আরও জানিয়েছেন যে, 'সিয়াচেনে পোস্টিংয়ে থাকা পরমবীরচক্রে পুরস্কৃত ক্যাপ্টেন বানা সিংয়ের কথায় আমার এই গাছ লাগানোর পরিকল্পনা মাথায় আসে। ক্যাপ্টেন বানা সিং একবার রাখি বন্ধনের সময় আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন। সেই সময় তিনি সিয়াচেনে কম অক্সিজেনের কথা বলেছিলেন। তার ফলে সেনা জওয়ানদের সেখানে শ্বাস নিতে কীরকম কষ্ট হয়, সে গল্পও করেছিলেন ক্যাপ্টেন বানা সিং। তখনই সিয়াচেনে অক্সিজেন প্রদানকারী গাছ লাগানোর পরিকল্পনা মাথায় আসে।' যোগেশ চিথাদে নিজেও বায়ুসেনার অফিসার ছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর এবং তাঁর স্ত্রীর এমন উদ্যোগ সেনা মহলে বাহবা কুড়োচ্ছে।