সাহসিকতার জন্য শৌর্ষচক্র পেয়েছিলেন তিনি
কিন্তু সরকার তাঁর নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি বলে অভিযোগ
শুক্রবার দুষ্কৃতীদের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে বলবিন্দর সিং-এর
এর আগে ১৫ বারেরও বেশি তাঁর উপর হামলা হয়েছে
শুক্রবার পঞ্জাবের ত্রান তরণ জেলায় অজ্ঞাত পরিচয় হামলাকারীদের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে শৌর্য চক্র পদকপ্রাপ্ত বলবিন্দর সিং-এর। জানা গিয়েছে, শুক্রবার ৬২ বছরের বলবিন্দর সিং ভিখিউইন্দ গ্রামে তাঁর অফিসে ছিলেন। অফিসটি তাঁর বাড়ির কাছেই। সেই সময়ই মোটরবাইকে করে এসে দুষ্কৃতীরা তাঁকে গুলি করে। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে পঞ্জাবে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করা বলবিন্দরের উপর এর আগে বহুবার হামলা করেছে জঙ্গিরা। তারপরও তাঁর ও তাঁর পরিবারের উপযুক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
শৌর্য চক্র পুরষ্কারধারী বলবিন্দর সিং-এর হত্যার ভয়াবহ ঘটনাটি সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। অজ্ঞাতপরিচয় এক বন্দুকধারীরা ও তার এক সহযোগী মোটরবাইক নিয়ে কম্বাউন্ডে প্রবেশ করে। বলবিন্দর সিং-এর উপর দু'বার গুলি চালাতে গিয়েছে তাদের। তবে তাঁর উপর এই প্রথম হামলা হল তা নয়। পঞ্জাবে খালিস্তানি সন্ত্রাসবাদীদের বৃদ্ধি রুখে দেওয়ার পিছনে বিরাট ভূমিকা রয়েছে বলবিন্দর সিং-এর। ১৯৯৩ সালেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রক তাঁকে শৌর্য চক্র প্রদান করেছিল। ১৯৯০ এর দশক থেকেই সন্ত্রাসীদের ক্রমাগত হুমকির সম্মুখীন হয়েছিল বলবিন্দর ও তাঁর পরিবারকে। ১৫ বারেরও বেশি তাঁর উপর সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছে, প্রত্যেকবারই বেঁচে গিয়েছিলেন। এইবার আর তা সম্ভব হয়নি।
২০১৩ সালেও কিছু অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকধারী তাঁর শয়নকক্ষে জানালা দিয়ে গুলি চালিয়েছিল। কিন্তু বলবিন্দর বা তাঁর পরিবারের কেউ সেই ঘরে না থাকায় কেউ হতাহত হননি। এইবার ভয়াবহ ঘটনা ঘটানোর আগে দুষ্কৃতীরা তাঁর গতিবিধি বেশ কয়েকদিন ধরে অনুসরণ করেছিল বলে সন্দেহ করছে তাঁর পরিবার। বস্তুত শুধু বলবিন্দরই নন, তাঁর গোটা পরিবারই সন্ত্রাসবাদীদের হিটলিস্টে রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে।
তাঁদের অভিযোগ শৌর্য চক্র পুরষ্কার প্রাপ্ত বলবিন্দর ও তাঁর পরিবারের উপর বরাবরই এই ধরণের হুমকি ছিল। তবে রাজ্য পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলি-সহ পঞ্জাব সরকার-ও তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়টা বিবেচনা করেনি। তাঁর ভাই রঞ্জিত জানিয়েছেন, এক বছর আগে রাজ্য পুলিশের অনুরোধে রাজ্য সরকার বলবিন্দর সিং ও তাঁর পরিবারের উপর থেকে নিরাপত্তার আচ্ছাদনটা সরিয়ে নিয়েছিল। আর তার পরের বছরই ঘটে গেল অঘটন।