গত কয়েকদিন ধরেই জেইই-নিট স্থগিদের জন্য কেন্দ্রের কাছে বারবার দরবার করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবারও তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে অনুরোধ করেন, আপনি সুপ্রিম কোর্টে যান। পড়ুয়াদের এভাবে বিপদের মধ্যে ফেলা যায় না। করোনার এই আবহে পরীক্ষার্থীদের স্বার্থে কেন্দ্রের সঙ্গে লড়াই করতেই হবে। বুধবার জেইই-নিট নিয়ে বিজেপি বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে জোর দিয়ে বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মতে, পরীক্ষা স্থগিত করতে কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে 'আবেদন না জানালে', বিরোধী রাজ্যগুলির 'উচিত একসঙ্গে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ' হওয়া। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই প্রস্তাবে সহমত হয় জয়েন্ট, নিট নিয়ে অবশেষে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হল পশ্চিমবঙ্গ সহ ৬ রাজ্য। গত ১৭ অগাস্ট সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা করার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিমকোর্টে রিভিউ পিটিশন দায়ের করেছে পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান, ছত্তিশগড় , পাঞ্জাব ও মহারাষ্ট্রের মতো অ-বিজেপি রাজ্যগুলি।
করোনাকালে সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিক্যালের প্রবেশিকা পরীক্ষা স্থগিত রাখতে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। এমন অবস্থায় কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী ও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যৌথ আহ্বানে বুধবার বিরোধী দলগুলির ভার্চুয়াল বৈঠক ডাকা হয়। কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা ছাড়াও জল্পনায় জল ঢেলে বৈঠকে উপস্থিত হন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে এবং ঝাড়খণ্ডের হেমন্ত সোরেন।
মামলার মূল নথি তৈরি করছেন অভিষেক মনু সিংভি, তাঁর সঙ্গে রয়েছেন আরও কয়েক জন বিশিষ্ট আইনজীবী। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে জয়েন্ট । এদিকে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিওয়াল বৃহস্পতিবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন অভিভাবকরা পরীক্ষ চাইছিলেন। এটা তাদের ভবিষ্যতের প্রশ্ন। এদিকে সুপ্রিম কোর্টও পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। শীর্ষ আদালত তার রায়ে জানিয়েছে, জীবন থেমে থাকতে পারে না। পড়ুয়ারা কি একটা গোটা বছর নষ্ট করতে চায়!
এদিকে মেডিকেল এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষার দিন না পিছানোর অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছেন ১৫০ জন শিক্ষাবিদ। তাঁদের মত, এই সময়ে পরীক্ষার দিন আবার পিছানো মানে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের সঙ্গে আপস করা। আগামী মঙ্গলবার, ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে জেইই। নিট হওয়ার কথা ১৩ সেপ্টেম্বর। ফলে, শীর্ষ আদালত শুক্রবারই এই ব্যাপারে রায় ঘোষণা করতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।