যাত্রীই যখন চোর, ট্রেনের 'উতকৃষ্ট কোচ' থেকে হাওয়া কল-আয়না, কমোডের ঢাকনা-ও

২০১৮ সালে যাত্রীসাচ্ছন্দের কথা ভারতীয় রেল চালু করেছিল 'উৎকৃষ্ট' প্রকল্প

কামড়াগুলিতে দেওয়া হয়েছিল আধুনিকতার ছোঁয়া

সেই 'উৎকৃষ্ট' কামড়ারই বাথরুম ফিটিংস গিয়েছে চুরি

কী কী জিনিস সরিয়েছেন যাত্রীরা জানলে অবাক হতে হয়

 

amartya lahiri | Published : Feb 21, 2020 11:46 AM IST

বছর দেড়েক  আগে ভারতীয় রেল যাত্রীদের সাচ্ছন্দের কথা ভেবে তাদের দূরপাল্লার ট্রেনের কামড়াগুলিকে উন্নত করা শুরু করেছিল। রেলমন্ত্রক থেকে প্রায় ৩০০টি 'উৎকৃষ্ট' কামড়া চালু করা হয়েছিল। কিন্তু বছর গড়াতে না গড়াতেই দেখা যাচ্ছে ট্রেনের কামড়া উৎকৃষ্ট হলে কী হবে, যাত্রীরা অনুৎকৃষ্টই থেকে গিয়েছে। ট্রেনের বাথরুমের বেশিরভাগ ফিটিংস-ই গায়েব। রেল কর্তারা মেনে নিয়েছেন কিছু কিছু ক্ষেত্রে চোরেদের কাজ, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যাত্রীরাই বাথরুমে হাতসাফাই করেছেন।

ভারতীয় যাত্রীদের কাছে ট্রেনভ্রমণ শুধু পরিবহণ নয়, বরং শোষণেরও একটি বিষয়, তার ভুরি ভুরি প্রমাণ মিলেছে। এই যেমন মাসখানেক আগে চালু হওয়া তেজস এক্সপ্রেস। দেশের প্রথম উচ্চ-গতির আধা-বিলাসবহুল ট্রেন। চোর-ডাকাতের চড়ার উপায় নেই, সমাজের উচ্চস্তরের মানুষরাই চড়েন। মুম্বই থেকে গোয়া-র মধ্যে চলা, সেই ট্রেনেও প্রথম যাত্রা থেকেই হেডফোন ছিঁড়ে দেওয়া, এলসিডি স্ক্রিন ভেঙে দেওয়া, শৌচাগার চূড়ান্ত নোংরা করার মতো ঘটনা ঘটে চলেছে।

তবে অবাক হতে হয় উৎকৃষ্ট কামড়ার কথা জানলে। ভারতীয় রেলপথের দেওয়া সরকারি তথ্যে জানা গিয়েছে, গত দেড় বছরে উৎকৃষ্ট কামড়ার শৌচাগারে চুরির কারণে কেন্দ্রীয় রেলপথের ১৫.২৫ লক্ষ টাকার এবং পশ্চিম রেলপথের ৩৮.৫৮ লক্ষ টাকার লোকসান হয়েছে। চুরি যাওয়া জিনিসের মধ্যে রয়েছে, ৫০০০-এরও বেশি স্ট্রেইনলেস স্টিলের জলের কল, প্রায় ২,০০০টি স্টিল ফ্রেমের আয়না, প্রায় ৫০০টি তরল সাবানের পাত্র, প্রায় ৩,০০০টি টয়লেট ফ্লাশ ভালভ ইত্যাদি। তবে রেলকর্তারা সবচেয়ে অবাক হয়েছেন, বেশ কয়েক ডজন কমোডের সিট কভার-ও চুরি যাওয়াতে।

২০১৮ সালের অক্টোবরে কেন্দ্রীয় সরকারের রেল মন্ত্রক যাত্রীদের অত্যাধুনিক সুবিধা দেওয়ার জন্য ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে 'উৎকৃষ্ট' প্রকল্প চালু করেছিল। অন্দরের সাজসজ্জা থেকে আসন, শৌচাগার - সবেতেই দেওয়া হয়েছিল আধুনিকতার ছোঁয়া। ভিতরে টিমটিমে হলুদ আলোক বদলে লাগানো হয়েছিল ঝকঝকে এলইডি লাইট। শৌচাগারগুলি থাকে একেবারে গন্ধহীন। মধ্য ও পশ্চিম রেলপথেই উৎকৃষ্ট প্রকল্পে তৈরি র‌েকগুলি সরবরাহ করা হয়েছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে ভারতীয় রেলযাত্রীদের মনোভাব আধুনিক হতে পারেনি এখনও।

 

Share this article
click me!