সাত বছরের লড়াই শেষ। যে দিনটার জন্য দেশের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল অবশেষে তার যবনিকা পতন হল। শুক্রবার ভোরে নির্দিষ্ট সময়ই ফাঁসি হল নির্ভয়াকাণ্ডের ৪ অপরাধী অক্ষয় ঠাকুর, পবন গুপ্তা, বিনয় শর্মা ও মুকেশ সিং-এর। কিন্তু ফাঁসির আগের রাত কেমন কেটেছিল চার ধর্ষকের। এই নিয়ে অনেকের মনেই আগ্রহ তৈরি হয়েছে। তবে জেল সূত্রে জানা যাচ্ছে ফাঁসির আগের রাতে নাকি কিছুই খায়নি ৪ জন। বিনিদ্র রাত্রি কাটিয়েছে তারা।
আরও পড়ুন: ৭ বছর পর শান্তি পেয়েছে মেয়ের আত্মা, বাঁধ মানল না বালিয়াও
গত ২ বার ফাঁসির দিন ঠিক হলেও আইনি জটিলতার কারণে শেষ মুহুর্তে তা পিছিয়ে গিয়েছিল। এবারও তেমনি কিছু ঘটবে বলে আশায় ছিল ৪ অপরাধী। তাই ফাঁসির কয়েকদিন আগে থেকেই ফের নতুন করে শুরু হয়েছিল আইনি বিকল্প ব্যবহার। এমনকি ফাঁসির আগের রাতেও অপরাধীদের আইনজীবী ফের একবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। কিন্তু কোনও কিছুতেই এবার আর লাভ হয়নি। ভোর সাড়ে পাঁচটাতে তিহাড় জেলে ফাঁসিতে ঝোলানো হয় ৪ ধর্ষককে। জেল সূত্রে জানা যাচ্ছে, ফাঁসির আগে নাকি ভয়ঙ্করভাবে মৃত্যুভয় চেপে বসেছিল অপরাধীদের মনে। সেই মৃত্যুভয় এতটাই ছিল যে তারা সারা রাত ঘুমোতে পারেনি।
তিহাড় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৪ সাজাপ্রাপ্তর কেউই তাদের শেষ ইচ্ছার কথা জেল কর্তাদের জানায়নি। এমনকি ভোরে শেষবারের মত প্রাতঃরাশও কেরনি কেউ। ফাঁসির আগে স্নান করতেও রাজি হয়নি। শেষ রাতটা ৩ নম্বর জেলে আলাদা আলাদা সেলেই কাটায় ৪ জন।
আরও পড়ুন: এতদিনে ন্যায়বিচার পেল মেয়ে, জেল কর্তৃপক্ষ এসে খবর জানাতেই হাসি ফুটল বাবার মুখে
এদিকে ফাঁসির আগের রাত থেকেই এশিয়ার সবচেয়ে বড় জেল লকডাউন করে দেয় তিহাড় কর্তৃপক্ষ। জানতে পারা গেছে, শুধু অক্ষয়, পবন, বিনয় ও মুকেশই নয়, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার আগে তিহার জেলে প্রায় সব বন্দিই জেগে ছিল। এই প্রথম দিল্লির তিহার জেলে একটি নির্দিষ্ট মামলায় একসঙ্গে ৪ অপরাধীর ফাঁসি হল, ভারতের ইতিহাসেও এই ঘটনা নজিরবিহীন।
ফাঁসির আগে ৪ অপরাধীরই মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়। ফাঁসি কার্যকর করার সাক্ষী ছিলেন কেবল ৫ জন। কারা সুপারিন্টেন্ডেন্ট, ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট, মেডিকেল অফিসার আরএমও , এলাকার ম্যাজিস্ট্রেট এবং আর একজন কারা-কর্মী। তাঁদের সামনেই ওই পিশাচকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে দেন ফাঁসুড়ে পবন জল্লাদ।