সত্য জ্ঞানের বড়ই অভাব, কার্গিল বিজয় দিবসের আগে সামনে এল এক নির্মম সত্য

  • একদিন পরেই কার্গিল বিজয় দিবসের দুই দশক পূর্তি
  • আজকের প্রজন্মের মধ্যে কীভাবে বেঁচে আছে সেই ঐতিহাসিক ঘটনা
  • এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে অবাকই হতে হয়

Indrani Mukherjee | Published : Jul 25, 2019 11:45 AM IST / Updated: Jul 25 2019, 05:17 PM IST

একদিন পরেই কার্গিল বিজয় দিবসের দুই দশক পূর্তি। কিন্তু, কার্গিল আজকের প্রজন্মের মধ্যে কীভাবে বেঁচে আছে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে অবাকই হতে হয়। রাজধানী দিল্লির বুকে রয়েছে একাধিক শহিদ স্মৃতি সৌধ। এসবই তৈরি হয়েছে দেশের জন্য প্রাণ দেওয়া সেনাদের সম্মান জানাতে। এইসব স্মৃতি সৌধে এখন নবতম সংযোজন ওয়ার মেমোরিয়াল। তবে রয়ে গিয়েছে কার্গিল যুদ্ধে জয়ের প্রতীক হিসাবে বিজয়দিবসের প্রতীকটি। তাই দেখতে এখন জমছে ভীড়।

১৯৯৯ সালে ২৬ জুলাই দিনটিতেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধ কার্গিল যুদ্ধে জয়লাভ করেছিল ভারত। সেই যুদ্ধ প্রাণ গিয়েছিল প্রায় ৫০০ জন ভারতীয় সেনার, পাশাপাশি আহত হয়েছিল প্রায় ১৩০০-রও বেশি ভারতীয় সেনা। কার্গিল বিজয়ের ২০ বছর পূর্তিতে দেশজুড়ে এখন জাতীয়বাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। কিন্তু, শহিদ সেনাদের স্মৃতিসৌধ দেখতে আসা মানুষদের কার্গিল নিয়ে প্রশ্ন করলেই ভিড়মি খেতে হয়।   

যেমন বেঙ্গালুরু নিবাসী ২০ বছরের সোনালা সাক্সেনাকে যখন প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, সে কার্গিল যুদ্ধের বিষয়ে ঠিক কতখানি জানে। এর উত্তরে সে দিয়েছিল এক টুকরো মিষ্টি হাসি। সেইসঙ্গে জানিয়েছিল, একজনের কাছ থেকে শুনে সে স্মৃতিসৌধ দেখতে এসেছে। তাঁর আরও দুই বন্ধু দীপক সিং এবং রাজেশ কুমারকে একই প্রশ্ন করা হয়। দুজনেই পাঠ্যবইতে কার্গিল যুদ্ধের বিষয়টি পড়েছে বলে জানায়। এর বাইরে এই নিয়ে খুব একটা তথ্য তাদের দুজনের কারও কাছে নেই বলে দাবি করে।   

২০ বছর বয়সী আর এক ম্যানেজমেন্টের ছাত্রের কথায়, মোবাইল ফোনে তাঁরা যে ধরণের খবর পায় সেইসব খবর নিয়ে তাঁরা প্রায়শই আলোচনা করে। কিন্তু সেই আলোচনা অবশ্য ১০ মিনিটের বেশি স্থায়ী হয় না বলেও জানায় সে। কার্গিল যুদ্ধের বিষয়টি সে কেবলই শুনেছে বলেই জানিয়ে ওই ছাত্র। আর এক ছাত্রের কথায় বলিউডে 'উরি: দ্যা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক'-এর মতো ছবি ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা আরও বাড়িয়ে তোলে বলে মত তার। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি কলেজের অধ্যাপক অবশ্য আজকের প্রজন্মের এই প্রবণতাকে স্বীকার করে নিয়েছেন। তাঁর মতে, তাঁর ছাত্রছাত্রীরা কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে খুবই আগ্রাসী, জাতীয়তাবাদী এবং সাম্প্রদায়িক মতামত পোষণ করে। 

নব্য প্রজন্মের মধ্যে এই কার্গিল যুদ্ধ নিয়ে জ্ঞানের অভাবের জন্য অনেকে ইতিহাসের যথাযথ সংক্ষণের অভাবকে দায়ী করেন। প্রাক্তন কূটনীতিক তথা পররাষ্ট্র বিষয়ক বিশেষজ্ঞের দাবি, ঐতিহাসিক স্মৃতির উদযাপন কেবল একটা অনুষ্ঠান মাত্র, আধুনিক যুগে এইধরণের অনুষ্ঠানের বার্তা কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছায় না। এইসব বিষয়ে সাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার একটিমাত্র উপায় তা হল প্রতিনিয়ত যোগাযোগ ব্যবস্থা রক্ষা করা। তাঁর মতে স্মৃতিস্তম্ভের পাশাপাশি ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজন যাদুঘর। তাঁর দাবি একমাত্র জাদুঘরেই ইতিহাসকে সংরক্ষণ করে রাখা যায়। তিনি আরও বলেন দেশভাগের যাবতীয় ইতিহাস ধরে রাখতে পঞ্জাবে গড়ে উঠেছিল একটি জাদুঘর। একইভাবে কার্গিল-এর ইতিহাসেও সংরক্ষণ প্রয়োজন, যাতে সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি না ঘটে।  

Share this article
click me!