দেশে এই প্রথম কোনও রূপান্তরকামী দম্পতির সন্তান আলো দেখল পৃথিবীর- জানুন সেই স্বপ্নপূরণের গল্প

পুরুষ থেকে নারী হয়ে ওঠার নানান প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁরা। এরই মাঝে জাহাদ অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। আটমাস গর্ভে ধারণ করেন তাঁর পরম কাঙ্খিত সন্তানকে।

Web Desk - ANB | Published : Feb 8, 2023 11:02 AM IST / Updated: Feb 08 2023, 06:59 PM IST

পুরুষ থেকে নারী হওয়ার মাঝের যাত্রাপথেই গর্ভবতী হলেন রূপান্তরকামী। মিরাকল বলবেন নাকি একে বলবেন একজনের স্বপ্নপূরণের গল্প- তা পাঠকই ঠিক করবেন। তবে এই কাহিনি হার মানাবে রূপকথাকেও। কেরলের রূপান্তরকামী দম্পতি সগর্বে ঘোষণা করলেন নিজেদের বাবা মা হওয়ার কথা। সরকারি হাসপাতালে সম্পূর্ণ সুস্থ শিশুর জন্ম দিয়েছেন ওই রূপান্তরকামী মহিলা।

বুধবার সকাল সাড়ে নটায় সি সেকশনের মাধ্যমে তিনি শিশুর জন্ম দেন। জাহাদ এবং জিয়া পাভাল কেরালার রূপান্তরকামী বাসিন্দা। একসঙ্গে থাকতে শুরুও করেছিলেন। পুরুষ থেকে নারী হওয়ার মাঝে গর্ভবতী হলেন জাহাদ। কেমন করে সম্ভব হল জেনে নিন। জানা গিয়েছে, কেরালার তিরুঅনন্তপুরমের বাসিন্দা জাহাদ এবং কোঝিকোড়ের বাসিন্দা জিয়া পাভাল। দুবছর আগে দম্পতি হিসেবে পথ চলা শুরু হয় তাঁদের। আর পাঁচটা রূপান্তরকামী দম্পতির মত লুকিয়ে নয়, রীতিমত সামাজিক মর্যাদা চেয়েছিলেন তাঁরা। সেই পথে হেঁটে একে অপরের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন।

পুরুষ থেকে নারী হয়ে ওঠার নানান প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁরা। এরই মাঝে জাহাদ অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। আটমাস গর্ভে ধারণ করেন তাঁর পরম কাঙ্খিত সন্তানকে। নারী সত্ত্বা না থাকলেও পুরুষ শরীরে বেড়ে উঠছে নব প্রাণ। ভারতে এমন ঘটনা প্রথম, তাই এই খবর শুনে অবাক হয়েছেন অনেকেই।

সংবাদসংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাতকারে জিয়া পাভাল জানান, বুধবার তাঁদের সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছে। তাঁর সঙ্গী জাহাদ ও শিশু দুজনেই সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে। তবে সন্তান ছেলে না মেয়ে, তা সংবাদমাধ্যমের সামনে প্রকাশ করেননি তাঁরা। পাভাল বলেন এই বিষয়ে এখনই কিছু জানাবেন না তাঁরা।

উল্লেখ্য ওই দম্পতির হরমোন থেরাপি চলছিল গত তিন বছর ধরে। সন্তান গর্ভে আসার পর সেই থেরাপির সন্তানের স্বাস্থ্যের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। জাহাদ নিজে পুরুষ হতে চেয়েছিলেন। তবে সন্তান ধারণের পর হরমোন থেরাপি প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হয়। জাহাদের স্তন অপসারণের প্রক্রিয়াও চলছিল, যা সন্তান ধারণের পর স্থগিত করে দেওয়া হয়।

মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, ওই দম্পতি প্রাথমিকভাবে একটি শিশু দত্তক নেওয়ার কথা ভেবেছিলেন এবং এমনকি প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসাও করেছিলেন। তবে তারা এটির জন্য আইনি প্রক্রিয়াটিকে চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করেন। কারণ তারা একজন ট্রান্সজেন্ডার দম্পতি।

পরবর্তীকালে, জাহাদ যিনি জৈবিকভাবে এখনও একজন মহিলা, স্বাভাবিকভাবেই একটি শিশু গর্ভধারণ করতে পারে এই ধারণাটি তাদের মনে হয়েছিল। জাহাদ যে নারীত্ব থেকে দূরে থাকার প্রক্রিয়ায় ছিলেন সে বিষয়ে পিছিয়ে পড়তে ইচ্ছুক ছিলেন না, তবে তাঁর সঙ্গী জিয়ার মন রাখতেই গর্ভধারণ করেন তিনি।

Share this article
click me!