বৃহস্পতিবার লোকসভায় পাস হয়ে গেল তিন তালাক বিল। এই বিলে বলা হয়েছে তিন তালাক দেওয়াটা ফৌজদারি অপরাধ এবং সেই ক্ষেত্রে মুসলিম পুরুষদের তিন বছর পর্যন্ত জেল হবে। লোকসভায় এদিন এই বিলের পক্ষে ভোট দেন ৩০৩ জন সাংসদ, আর বিপক্ষে ভোট পড়েছে ৮২টি।
বিরোধীরা অবশ্য এই বিলের বেশ কিছু সংশোধনী প্রস্তাব এনেছিল। তার সবকটিই নাকচ হয়ে গিয়েছে। বিলের যে ধারাটির মারফত তিন তালাক দিলে তিন বছরের জেলের সাজার ব্যবস্থা করা হয়েছে, তার পক্ষে ভোট পড়ে ৩০২টি, আর বিপক্ষে ৭৮টি। তবে বিল নিয়ে ভোটাভুটির আগেই বিলের বিরোধিতা করে কক্ষত্যাগ করেন, জেডিইউ, তৃণমূল কংগ্রেস ও কংগ্রেস সাংসদরা। তাদের দাবি ছিল বিলটি পর্যালোচনার জন্য লোকসভার স্ট্যান্ডিং কমিটিতে পাঠানোর, কিন্তু সেই দাবি মানেনি সরকার।
এদিন অবশ্য এই বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার পর থেকেই তীব্র বিতর্ক হয় লোকসভায়। মিমের নেতা আসাউদ্দিন ওয়াইসি প্রশ্ন তোলেন যদি তিন তালাক দেওয়ার জন্য মুসলিম পুরুষদের জেলেই যেতে হয, তাহলে জেলের ভিতর থেকে তাঁরা কীভাবে স্ত্রীদের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবেন? কংগ্রেস দাবি করে শুধু মুসলিম নারীদের কথা ভাবলেই চলবে না, একই বাবে বিবাহ বিচ্ছিন্না হিন্দু ও পার্সি নারীদের সুরক্ষারও বন্দোবস্ত করতে হবে। সিপিএমের বক্তব্য সুপ্রিম কোর্ট তিন তালাক-কে বাতিল ঘোষণা করার পর এই বিলের প্রয়োজন নেই।
কিন্তু বিরোদীদের দাবি খারিজ করে আইন মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, এই বিল আনা হচ্ছে শুধুমাত্র লিঙ্গ বৈষম্য দূর করার জন্য। সুপ্রিম কোর্ট ২০১৭ সালের অগাস্ট মাসে তিন তালাক বাতিল করলেও তার পর থেকে এখনও পর্যন্ত ৩০০টিরও বেশি তিন তালাক-এর ঘটনা ঘটেছে দেশে। তাই এ জন্য একটি কড়া আইন প্রণয়নের প্রয়োজন রয়েছে।
বিলটি এবার রাস হওয়ার জন্য পাঠানো হবে রাজ্যসভায়। এর আগে প্রথম মোদী সরকারের সময় তিন তিন বার লোকসভায় এই বিলের খসড়া প্রস্তাব বাতিল হয়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয়বার মোদী ক্ষমতায় আসার পর গত জুন মাসে নতুন করে এই বিল আনা হয়। তবে রাজ্য সভায় এখনও বিজেপির সংখ্যাগরীষ্ঠতা নেই। কাজেই লোকসভায় পাস হলেও রাজ্যসভায় বিলটি আটকে যেতে পারে।