ত্রিপুরার বিধায়কদের একটি বড় অংশ পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ত্রিপুরার রাজপরিবারের সদস্য ও উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেব বর্মনকে চেয়েছিলেন। যদিও মানিক সাহা এই নিয়ে সাংবাদিকদের কিছুই বলেননি।
হঠাৎ করেই ত্রিপুরার রাজনৈতিক মোড় পরিবর্তন হয়ে যায়। বিপ্লব দেব প্রাক্তন। বর্তমান হলেন বিজেপি নেতা মানিক সাহা। বিপ্লব দেব রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে এসেই বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তারপর তিনি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মানিক সাহার নাম ঘোষণা করেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি সবরকম ভাবে সহযোগিতা করবেন। তবে মানিক সাহার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার রাস্তা মোটেও ফুল বিছান ছিল না। মানিক সাহার নাম ঘোষণা করা হতেই রাজ্যের মন্ত্রী রাম প্রসাদ পাল সেই প্রস্তাবে বিরোধিতা করেন। তারপর বিধায়কদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। বিজেপি সূত্রের খবর রাম প্রসাদ পাল রাগের চোটে একটি চেয়ারও ভেঙে দেন।
সূত্রের খবর ত্রিপুরার বিধায়কদের একটি বড় অংশ পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ত্রিপুরার রাজপরিবারের সদস্য ও উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেব বর্মনকে চেয়েছিলেন। যদিও মানিক সাহা এই নিয়ে সাংবাদিকদের কিছুই বলেননি। তিনি শুধু বলেছেন তিনি আগেও যেমন বিজেপির কর্মী ছিলেন এখনও তেমন বিজেপির কর্মী হিসেবেই দল তাঁকে যা কাজ দেবে তাই করবেন তিনি।
মাত্র এক বছর পরই ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচন। তাই মানিক সাহার সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ। তাঁর মূল প্রতিপক্ষ সিপিএম-এর মানিক সরকার। তেমন কোনও রাজনৈতিক পরিবর্তন না হলে সিপিএম-এর মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী মানিক সরকার। দীর্ঘ পাঁচ বছর বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তিনি ছিলেন প্রথম সারিতে। অন্যদিকে এবার ত্রিপুরা জয়ের রাজনৈতিক লড়াই খুব একটা সহজ নয়। বিরোধী শিবিরে রয়েছে কংগ্রেস ও তৃণমূলও। তৃণমূল যে ত্রিপুরারয় রাজনৈতিক ভিত শক্ত করতে চাইছে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে পুরসভা নির্বাচনে। তেমনভাবে কোনও আসন না পেলেও লড়াইয়ে রয়েছে তৃণমূল। কিছুটা শক্তি হারালেও কংগ্রেস যে চেষ্টা করবে না এমন বলা যায় না।
যাইহোক মানিক সাহা কিন্তু একজন চিকিৎসক। ৬৯ বছরের ডেন্টাল সার্জন তিনি। পাশাপাশি দীর্ঘদিনের পোড় খাওয়ার রাজনীতিবিদ। তিনি ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজ, আগরতলা বিআর আম্বেদকর মেমোরিয়াল টিচিং হাসপাতালে অধ্যাপক ছিলেন। বিভাগীয় অধ্যাপকের দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। ২০১৬ সালে বিজেপিতে যোগ দেন। ত্রিপুরা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিও ছিলেন তিনি। মানিক সাহা বিপ্লব দেবের ঘনিষ্ট হিসেবেই পরিচিত রাজ্যরাজনীতিতে। ২০২১ সালে ত্রিপুরা বিজেপির প্রদেশ কমিটির সভাপতিও হন তিনি। বিজেপির অনুগত সৈনিক হিসেবেও নিজেকে তুলে ধরেন। তবে তাঁর লড়াই খুব একটা সহজ নয়। ঘরে বাইরে সর্বত্রই তাঁকে লড়াই করতে হবে।