দেশজোড়া বিক্ষোভের মাঝে উন্নাও গণধর্ষিতার দুর্ঘটনার তদন্তভার হাতে তুলে নিয়েছে সিবিআই। জানা গিয়েছে ইতিমধ্যেই তদন্তে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্রের সন্ধান পেয়েছেন সিবিআই এর গোয়েন্দারা। দুর্ঘটনাস্থল থেকে বাজেয়াপ্ত, ঘাতক ট্রাকটির নম্বরপ্লেটের ওপর কালি লেপা ছিল। কিন্তু স্থানীয় টোল প্লাজার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে সিবিআই গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন ঘটনার প্রায় ৪০ মিনিট আগে ট্রাকটির নম্বর প্লেটে কালির কোনও চিহ্ন মাত্র ছিল না। ফলে তদন্তকারীরা এক প্রকার নিশ্চিত যে ঘটনাটিকে সুকৌশলে দুর্ঘটনার রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে ।
দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে রায়বরেলির লালগঞ্জ। ঘটনার প্রায় ৪০ মিনিট আগে লালগঞ্জ টোল প্লাজা অতিক্রম করে ঘাতক ট্রাকটি। টোল প্লাজার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন সেই সময় ট্রাকটির নম্বর প্লেটে কোনোরকমের কালি লেপা ছিল না । বস্তুত লালগঞ্জ টোল প্লাজার সিসিটিভি ফুটেজ থেকেই ট্রাকটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর-সহ যাবতীয় তথ্যের সন্ধান পান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা । যার ফলে তাঁরা একপ্রকার নিশ্চিত যে টোল প্লাজা এবং দুর্ঘটনাস্থলের মাঝখানে কোনও এক স্থানে, ট্রাকটি দাঁড় করিয়ে তাঁর নম্বর প্লেটে কালি লেপা হয়, যাতে ধর্ষিতার গাড়িতে ধাক্কা মারার পরে সেটিকে শনাক্ত করা না যায়।
স্থানীয় পুলিশের দাবী ট্রাকটির মালিক দেবেন্দ্র সিং স্বীকার করে নিয়েছেন যে ট্রাকটির নম্বর প্লেটে কালি লেপা হয়েছিল। যদিও ট্রাক মালিকের দাবি ঋণপ্রদানকারী সংস্থাকে ধোকা দিতেই ট্রাকটির চালক এমন কাজ করেছিলেন। রায়বরেলির পুলিশ সুপার সুশীল কুমার সিং জানিয়েছেন প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে লালগঞ্জ টোল প্লাজা পেরিয়ে কোনও একটি জায়গায় ট্রাকটির চালক নম্বর প্লেটে কালি লেপেছেন।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে সোহরাব বলে একটি জায়গায় বালি ডেলিভারি করেছিল ট্রাকটি। তারপর, লালগঞ্জ টোল প্লাজা ছাড়িয়ে ফতেপুরের দিকে যাচ্ছিল সেটি। মাঝপথেই ঘটে ওই দুর্ঘটনা। প্রাণ হারান উন্নাও গণধর্ষিতার দুই আত্মীয়। গুরুতরভাবে জখম হন ধর্ষিতা এবং তাঁর আইনজীবী। জানা গিয়েছে উন্নাও থেকে লখনউ যাচ্ছিলেন তাঁরা। ধর্ষিতার পরিবারের অভিযোগ, গণধর্ষণ কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গারের অনুগামীরাই এই দুর্ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। তাঁদের আরও দাবি দীর্ঘদিন ধরেই তাঁদের উপর অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। তাতে কর্ণপাত না করার মাশুলই তাঁদের দিতে হল।
ইতিমধ্যেই ঘাতক ট্রাকটির চালক এবং খালাসিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সুশীল কুমারের দাবী ঘটনার তদন্তভার ইতিমধ্যেই সিবিআই-এর হাতে, এবং তাঁরা আশাবাদী যে খুব শীঘ্রই প্রকৃত ঘটনা সামনে বেরিয়ে আসবে, এবং অপরাধীদেরও শনাক্ত করা সম্ভব হবে।