প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকে বিশ্বের অন্যতম শক্তি হিসেবে ভারতকে স্বীকার করল রাশিয়া। যা বিশ্ব মঞ্চে ভারতের অন্যতম স্বীকৃতি।
চিনকে অস্বস্তিতে রেখে আরও কাছাকাছি ভারত ও রাশিয়া। প্রধানমন্ত্রী(Indian Prime Minister) নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) ও রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট(Russian President) ভ্লাদিমির পুতিনের(Vladimir Putin) বৈঠকে বিশ্বের অন্যতম শক্তি হিসেবে ভারতকে স্বীকার করল রাশিয়া। যা বিশ্ব মঞ্চে ভারতের অন্যতম স্বীকৃতি। ২১ তম ভারত রাশিয়া বৈঠক(21st India-Russia) অনুষ্ঠিত হল দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে(Delhi's Hyderabad House)। একাধিক দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা চলল দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে। কি কি তথ্য উঠে এল এই বৈঠক থেকে, রইল ছটি বিস্তারিত পয়েন্ট।
বৈঠকে কি কি হল
১. মোদী পুতিন বৈঠকে ভারতকে বিশ্বের অন্যতম শক্তি বলে স্বীকার করল রাশিয়া। বৈঠকে পুতিন বলেন ভারত রাশিয়ার সব সময়ের বন্ধু। যে কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ভারত ও রাশিয়া একে অপরের পাশে ছিল।
২. ভারত ও রাশিয়া সন্ত্রাসবাদ, মাদক পাচার এবং সংগঠিত অপরাধ নিয়ে একই সুরে নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
৩. ভ্লাদিমির পুতিন আফগানিস্তানের উন্নয়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং এই বৈঠকে তিনি বলেন যে ভারত ও রাশিয়া এই অঞ্চলের মুখোমুখি বড় চ্যালেঞ্জগুলির বিষয়ে সমন্বয় অব্যাহত রাখবে।
৪. বৈঠকে মোদী বলেন যে কোভিড -১৯ মহামারী চলাকালীন পুতিনের দ্বিতীয় বিদেশ সফর তাঁর প্রতিশ্রুতি রাখার ঐকান্তিক ইচ্ছার ফল। ভারত-রাশিয়া সম্পর্কের প্রতি তার ব্যক্তিগত আন্তরিকতাই প্রকাশ করে।
৫. পুতিন পরিবেশ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং উচ্চ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন।
৬. দুই দেশের বিদেশ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের '2+2' বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা পর শীর্ষ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ভারতের সঙ্গে এস-৪০০ মিসাইল কেনার চুক্তি হয়েছিল ভারতের। ৩৫ হাজার কোটি টাকার বিনিময় রাশিয়া ভারতকে পাঁচটি স্কোয়াড্রন দেবে। সেইচুক্তি মতই রাশিয়া অত্যাধুনিক এই মিসাইল সিস্টেম সরবরাহ করতে শুরু করেছে। জল ও আকাশ পথে মিলাইসগুলি ভারতে আনা হচ্ছে। চলতি বছরের শেষের দিকেই প্রথম স্কোয়াড্রন ডেলিভারি শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই মিসাইল সিস্টেম ভারতকে রীতিমত শক্তিশালী করবে। কারণ এটি ৪০০ কিলোমিটার দূর থেকে শত্রু বিমান ও ক্রুজকে লক্ষ্যভেদ করতে সক্ষম হবে। এটি চারটি বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তৈরি। যা শত্রুর বিমান, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, এয়ারবর্ন ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম প্লেনকে ৪০০ কিলোমিটার, ২৫০ কিলোমিটার, মাধারি পাল্লার ১২০ কিলোমিটার ও স্বল্প পাল্লার ৪০ কিলোমিটার নিযুক্ত করতে পারে। এই মিসাইল সিস্টেম ব্যবহারের জন্য ভারতীয় বায়ু সেনার সদস্যদের রাশিয়া প্রশিক্ষণ দিয়েছে। প্রথম স্কোয়াড্রোন মোতায়নের পর দেশেই বিমান বাহিনীর কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে ব্রাসিলিয়ায় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের (BRICS Summit) সাইড-লাইনে বৈঠকের পর এটি হবে দুই নেতার মধ্যে প্রথম মুখোমুখি বৈঠক। শেষ ভারত-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী মোদীর রাশিয়ার ভ্লাদিভোস্টক সফরের সময় অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন ২০২০ সালে স্থগিত করে দেওয়া হয়।
দুই দেশ ২০১৯ সালে ফেব্রুয়ারিতে একটি আন্তঃসরকার চুক্তি করেছিল। যার পরে রাইফেলগুলি তৈরির জন্য উত্তর প্রদেশের ইন্দো-রাশিয়া রাইফেলস প্রাইভেট লিমিটেড স্থাপন করা হয়েছিল। রাইফেল তৈরির দায়িত্বে ভারতের পক্ষে থাকবে অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড আর রাশিয়ার দিকে থাকবে রোসোবরন এক্সপার্ট। আর্মির একজন মেজর জেনারেলকে এক্সিকিউটিভ অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁর মূল দায়িত্ব হবে রাইফেলগুলির যাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তৈরি হয়।