দেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে করোনা সংক্রমণ। ইতিমধ্যে বিশ্বের ক্রম তালিকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় ভারত রয়েছে ৪ নম্বরে। এই পরিস্থিতিতে পুরীতে রথযাত্রার আয়োজন করা হলে তাতে প্রচুর মানুষের সমাগম হবে। এর জেরে মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ আরও বাড়বে। তাই রথযাত্রা যাতে পিছিয়ে দেওয়া হয় তারজন্য দেশের শীর্ষ আদালতে আবেদন করেছিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। আর এই অবেদনের পরেই এবারের রথযাত্রায় স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ফলে ইতিহাসে এই প্রথমবার পুরীতে পালিত হবে না রথযাত্রা উৎসব। আর এই নিয়েই এখন উত্তাল গোটা ওড়িশা। এমনকি গোটা বিষয়টিতে চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছেন পুরীর শঙ্করাচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী।
পরিকল্পনা করে পুরীর রথযাত্রা ভেস্তে দেওয়ার চেষ্টা চলছে৷ এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুললেন পুরীর শঙ্করাচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী৷ তাঁর অভিযোগ করোনা সংক্রমণকে ছুঁতো হিসেবে দেখিয়ে পরিকল্পনা করে রথযাত্রা আটকানোর চেষ্টা চলছে। রথযাত্রা বানচাল করতে পুরীর শঙ্করাচার্য নিশ্চলানন্দ সরস্বতী রাজ্য সরকারের দিকেই চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন।
পুরীর শঙ্করাচার্য রবিবার বলেন, ‘রথযাত্রা বাতিলের সিদ্ধান্ত সঠিক নয়। জগন্নাথ দেবদের রথে চড়ার অনুমতি অন্তত দিতে পারত সুপ্রিম কোর্ট। তবে, ভক্তদের জমায়েত বন্ধ করা প্রয়োজন। সীমিত ভক্ত ও পুলিশ নিয়ে এই উৎসব করা যেত। উৎসবের লাইভ টেলিকাস্টও করা যেতে পারত।’ পুরীর গজপতি রাজা দিব্যসিংহ দেবও অনুষ্ঠানের ঘটা কমালেও রথযাত্রার আচার অলঙ্ঘনীয় বলেই মনে করছেন। এই অবস্থায় রাজার আবেদন, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী যেন সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে রথযাত্রা স্থগিতের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি করেন।
রথযাত্রা না হলে জগন্নাথ দর্শনে অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে বলে আবার আশঙ্কা করছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। তাঁদের যুক্তি ভক্তদের থাকার দরকার নেই। কিন্তু জগন্নাথদেবের জন্যই রথযাত্রা জরুরি। তাই পুরীর রথযাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা যাতে পুনর্বিবেচনা করা হয় তার জন্য সুপ্রিম কোর্টে একাধিক আবেদন জমা পড়েছে। যার মধ্যে রয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদও। রথযাত্রার স্থগিতাদেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি নিয়ে আদালতে গিয়েছেন বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্রও। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার জন্য ইতিমধ্যেই শীর্ষ আদালতে অন্তত চারটি আবেদন জমা পড়েছে৷ ভক্তদের বদলে পুলিশকর্মী অথবা হাতি বা যন্ত্রের সাহায্যে রথ টেনে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাবও রেখেছেন আবেদনকারীরা৷ এদিকে রবিবার রাত পর্যন্ত শ্রী মন্দিরে রথযাত্রার আগের সব অনুষ্ঠানই সুসম্পন্ন হয়েছে।