ফাঁসিকাঠের দিকে হাঁটছে আসামিরা, একেবারে শেষ মুহূর্ত, কী ঘটল ভোরের তিহারে

কারোর চোখে জল

কেউ অসহায়তায় ক্রুদ্ধ

কেউ একেবারে নীরব

শুক্রবার ভোরে তিহার জেলে ফাঁসির আগের কয়েক মুহূর্ত কেমন ছিল

 

amartya lahiri | Published : Mar 20, 2020 2:05 PM IST / Updated: Mar 20 2020, 07:36 PM IST

কারোর চোখে জল, কেউ অসহায় ক্রোধে খেপে উঠেছে, কেউ একেবারে নীরব - শুক্রবার ভোরে তিহার জেলে ২০১২ সালের দিল্লি গণধর্ষণ ও হত্যা মমামলার চার আসামিকে ফাঁসি দিতে নিয়ে যাওয়ার সময় এরকমই মিশ্র আবেগ ধরা পড়ে তাদের মধ্যে। ফাঁসির রায় স্থগিতের তাদের সর্বশেষ আবেদনটি সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দেওয়ার পর ভোর ঠিক ৫ টা ৩০ মিনিটে তাদের ফাঁসি দেওয়া হয়।

তিহার জেলের একটি সূত্র জানিয়েছে, ফাঁসির মঞ্চে আনার পথে পবন ও অক্ষয় কারাগারের কর্মীদের ধাক্কা মাররে, তাদের প্রতি কটুক্তি করে। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছিল। জেলের ওই সূত্রের দাবি অসহায় বোধ থেকেই তারা বন্ধনমুক্ত হতে চেয়েছিল। অন্যদিকে একেবারে ভেঙে পড়েছিল বিনয়। কাঁদতে কাঁদতে কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার তাকে ফাঁসি না দেওয়ার অনুরোধ করছিল। আর একেবারে থম মেরে ছিল মুকেশ সিং।

বৃহস্পতিবার রাতটা আসামিরা কেউই ঘুমোয়নি। পবন, অক্ষয় এবং মুকেশ চাদের দিকে তাকিয়েছিল। আর বিনয় সারা রাত ধরে দুজন হিন্দু দেবতার ছবি এঁকেছে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রমতে, ভোর চারটের সময় দুজন চিকিৎসক তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা তাদের কক্ষে যান। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর, কর্মকর্তারা তাদের শেষ ইচ্ছা ও তারা পরিবারকে কিছু দিতে চান কিনা তা জিজ্ঞাসা করেন।

গত সাত বছর ধরে কারাগারে শ্রমিক হিসাবে কাজ করে পবন, অক্ষয় এবং বিনয়, প্রায় ১,৩০,০০০ টাকা উপার্জন করেছে। কারা কর্তৃপক্ষ এই টাকাটা তাদের পরিবারের হাতে তুলে দেবে। মুকেশ কাজ করেনি, তাই তার পরিবার-কে দেওয়ার মতো কিছুই নেই। বিনয় বৃহস্পতিবার রাতে যে দুটি ছবি এঁকেছে, তার একটি সে জেল সুপার-কে উপহার দিয়েছে, অপরটি সে তার অন্যান্য জিনিসপত্রের সঙ্গে তার মাকে দিতে বলেছে।

কারাগারের বিধি অনুসারে মৃত্যুণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসিমঞ্চ দেখতে দেওয়া হয় না। তাই এই কথোপকথনের পর, চারজন আসামিরই মুখ কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়, এবং তাদে মঞ্চে নিয়ে গিয়ে একসঙ্গে পাশাপাশি দাঁড় করানো হয়। সূত্রের দাবি প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিল দুটি লিভারই দ্রুত পর পর টানবেন পবন জল্লাদ। পরে প্রক্রিয়াটি আরও দ্রুততর করার জন্য নিশ্চিতভাবে একসঙ্গে ফাঁসি দেওয়ার জন্য অন্য লিভারটি এক জেলকর্মীকে দিয়ে টানানো হয়। তাকে আগে থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল।

এর পরে তাদের লাশ সকাল ৬টায় দেহগুলি নামিয়ে আনা হয়। ডাক্রতার তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করার পর চারটি মরদেহই ডিডিইউ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। ময়নাতদন্তের পর দেহগুলি সংশ্লিষ্ট পরিবারদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

 

Share this article
click me!