
সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁও অঞ্চলে সংঘটিত একটি ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন নিরীহ নাগরিক। ভারত এই ঘটনাকে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে এক সরাসরি আগ্রাসন বলে আখ্যা দিয়েছে এবং এর দায় সুনির্দিষ্টভাবে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠীর ওপরই বর্তায়। জবাবে কেন্দ্রীয় সরকার যে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে, তা দুই দেশের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কে বেশ বড়োসড়ো ফাটল ধরেছে। পাকিস্তানও পাল্টা জবাব দিতে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছে।
এছাড়াও পাকিস্তানের তরফ থেকে ভারতীয় বিমানের জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে পাকিস্তান আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ায়। এখন প্রসঙ্গ উঠে আসে, ভারতও যদি একই পদক্ষেপ নিত তবে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে কোন কোন সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো?
বর্তমানে পাকিস্তানের বহু যাত্রিবাহী ও মালবাহী বিমান ভারতীয় আকাশসীমা ব্যবহার করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, উপসাগরীয় অঞ্চল এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাতায়াত করে। যদি ভারত পাকিস্তানের জন্য আকাশপথ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়, তবে পাকিস্তানকে ইরান, আফগানিস্তান বা মধ্য এশিয়ার উপর দিয়ে ঘুরপথে যেতে হবে।
এতে পাকিস্তানের বিমানগুলির সময়ও যেমন বেশি ব্যয় হবে তেমনই জ্বালানিও বেশি খরচ হবে। হলে মজুত রাখতে হবে অতিরিক্ত জ্বালানিও। এতে বিমানের ভারসাম্য বজায় রাখতে যাত্রীবাহী ও মালবাহী বিমানগুলির ক্ষেত্রে যাত্রী ও মালের পরিমাণে টানতে হতে পারে বিমানের ওজন নিয়ন্ত্রিত রাখতে। যাত্রীসংখ্যা কমলে সভাপতি বিমান সংস্থাগুলির আয় কমবে এবং বাড়বে খরচ। এমনিতেই পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (PIA) আগে থেকেই আর্থিক সংকটে, আরও বিপাকে পড়বে যদি ভারতও পাকিস্তানের জন্য আকাসীমা বন্ধ করে দেয়।
এক্ষেত্রে আরও একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই ICAO-র সদস্য। আন্তর্জাতিক অসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা (ICAO) অনুসারে, সদস্য রাষ্ট্রগুলি বাণিজ্যিক বা যাত্রী পরিবহনের জন্য একে অপরকে আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি দিতে বাধ্য। তবে এই নিয়মে একটি ব্যতিক্রম রয়েছে—জাতীয় সুরক্ষা বা জরুরি অবস্থার ভিত্তিতে কোনও দেশ চাইলে নিজের আকাশসীমা বন্ধ করেও দিতে পারে।