যৌন কামনা বশে রাখতে যৌনাঙ্গচ্ছেদ, বাবা-মা-এর কুসংস্কারের বলি ১২ বছরের কিশোরী

মেয়েদের যৌন কামনা রাখতে হবে বশে।

ছোট বয়সেই তাই কেটে দিতে হবে তার যৌনাঙ্গ।

এই কুসংস্কারের বশেই প্রাণ গেল ১২ বছরের এক কিশোরীর।

বাবা-মা এবং চিকিৎসকের নামে জারি গ্রেফতারি পরোয়ানা।

 

amartya lahiri | Published : Jan 31, 2020 5:09 PM IST / Updated: Jan 31 2020, 10:40 PM IST

মেয়ে, তাই তার যৌন কামনা রাখতে হবে বশে। ছোট বয়সেই কেটে দাও তার যৌনাঙ্গ। এই কুসংস্কারের বশেই প্রাণ গেল ১২ বছরের এক কিশোরীর। বাবা-মা'ই তাকে নিয়ে আসেন এক চিকিৎসকের কাছে। আর তারপর ওই নিষ্ঠুর কাজ, আর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে নিথর হয়ে যায় ওই কিশোরী। গত সপ্তাহে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণের মিশরের আসিয়ুত প্রদেশে। শুক্রবার সকালে ওই কিশোরীর বাবা-মা এবং ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

তবে এটি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বলেই দাবি মিশরিয় সমাজকর্মীদের। দীর্ঘদিন ধরে এই অঞ্চলে মহিলাদের যৌনাঙ্গচ্ছেদের এই প্রথা চলে আসছে। শুক্রবার তাদওয়েইন জেন্ডার স্টাডি কেন্দ্রের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আমেল ফাহমি বলেছেন, আরও অনেক মিশরীয় নাবালিকারই এই পরিণতি হবে। কারণ, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এর প্রথা রুখতে কোনও স্পষ্ট কৌশল গ্রহণ করা হয়নি। আইন করে এই প্রথাকে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হলেও এখনও বিচার বিভাগই মহিলাদের যৌনাঙ্গচ্ছেদ-কে অপররাধ হিসাবে দেখে না।

বস্তুত বহু শতাব্দী ধরে মিশর ও অন্যান্য মধ্যপ্রাচ্যের শহরে মুসলিম সমম্প্রদায়ের মধ্যে মহিলাদের যৌনাঙ্গচ্ছেদের প্রথা চালু রয়েছে। প্রচলিত বিশ্বাস মতে, এতে করে মহিলাদের যৌন কামনা-কে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তবে ২০০৮ সালে তীব্র বিরোধিতার মধ্য়েও মিশরের সংসদে মহিলাদের যৌনাঙ্গচ্ছেদ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আইন পাস করা হয়। ২০১৬ সালে আইনের সাজাও কঠোর করা হয়।

নারী-অধিকারকর্মীদের অভিযোগ, তাতে অবস্থার কিছু পরিবর্তন ঘটেনি। ২০১৫ সালের সরকারি সমীক্ষাতেই দেখা গিয়েছে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী মিশরীয় মহিলাদের ৮৭ শতাংশেরই যৌনাঙ্গচ্ছেদ ঘটানো করা হয়েছে। কারণ আইন করা হলেও সেই আইনে ফাঁক রাখা হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, আইন অনুসারে চিকিৎসা সংক্রান্ত কারণে মহিলাদের যৌনাঙ্গচ্ছেদ বৈধ। এই ফাঁক গলেই বাবা-মা এবং চিকিৎসকরা দাবি করছেন তাঁরা মেয়েদের 'যৌনাঙ্গচ্ছেদ' করছেন না, 'ত্বকের অস্বস্তিকর বৃদ্ধি' দূর করছেন।

Share this article
click me!