রেস্তোরাঁর মধ্যে আগুন। আর তাতেই আতঙ্ক ছড়াল ভিয়েতনামে। এর আগেও ভিয়েতনামে রেস্তোরাঁয় একাধিকবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। যদিও, সেই সব ঘটনায় মৃতের সংখ্যা তুলনায় অনেক কম ছিল।
কারাওকে বারে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারালেন ৩২ জন। ভিয়েতনামের দক্ষিণে থুয়ান আন সিটি-তে মঙ্গলবার রাতে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। আগুনের ব্যপ্তি এতটাই ছিল যে তা দ্বিতীয় তলা পর্যন্ত পৌঁছে যায়। আতঙ্কে বহু মানুষ দোতলা থেকে নিচে ঝাঁপও দেয় বলে জানা গিয়েছে। আগুনে জেরে কারাওকে বারের ভিতরে বহুক্ষণ আটকে ছিলেন বহু মানুষ এবং রেস্তোরাঁর কর্মী। অগ্নিকাণ্ডের জেরে তৈরি হওয়া ধোঁয়ায় পুরো ঢেকে গিয়েছিল সিড়ি এবং এমার্জেন্সি এক্সিটের অংশ। যার ফলে উদ্ধারকাজে বিলম্ব হয়।
আগুন এবং ধোঁয়া আতঙ্কে অনেকেই ব্যালকনিতে এসে ভিড় করতে শুরু করেন। কারাওয়েকে বারের ইন্টেরিয়রের বেশিরভাগটাই কাঠ দিয়ে তৈরি। যার ফলে আগুন দ্রুত থড়িয়ে পড়ে। এই সময় আতঙ্ক সামলাতে না পেরে বহু মানুষ ব্যালকনি থেকে নিচে ঝাঁপ দিতে শুরু করে। এতেই বহু মানুষ চোট পান এবং এদেরর মধ্যে অনেকের মৃত্যু হয়। পরে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায় কারাওকে বার থেকে গল গল করে ধোঁয়া বের হচ্ছে। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা থুয়ান আন সিটির মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করে। কারণ, কারাওকে বারটি যে এলাকায় সেটি একটি পুরোপুরি লোকের বসতিতে ভর্তি। আশপাশে অধিকাংশ বিল্ডিং-ই রেসিডেন্সিয়াল। ভিয়েতনামের বাণিজ্যিক বন্দর শহর হোচিমিন সিটি-ক উত্তরে অবস্থিত এই থুয়ান আন সিটি।
ভিয়েতনামের সরকারি সংবাদমাধ্যম কং আন নহান ডান-এর প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় ৩২ জনের মৃত্যুর খবরকে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করা হয়েছে। এরমধ্যে ১৭ জন পুরুষ এবং ১৫ জন মহিলা। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার ব্রিগেড ক্রেনের সাহায্য নেয়। কিন্তু, তাতেও দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। জানা গিয়েছে রেস্তোরাঁর ভিতরে প্রচুর পরিমাণে দাহ্য বস্তু থাকায় আগুন নিবতে সময় নেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণের আসার পর উদ্ধারকাজে রেস্তোরাঁর বাথরুম থেকে ৮ জনের দেহ উদ্ধার হয়। মনে করা হচ্ছে আগুনের জেরে তৈরি হওয়া ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে এদের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন - ভারতের প্রসংশা করেই বিপত্তি! গদি খোয়ানোর আশঙ্কায় বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী
ভিয়েত নামের কমিউনিস্ট পার্টির এক শীর্ষ আধিকারিক অবশ্য প্রথমে জানিয়েছিলেন অগ্নিকাণ্ডে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১১ জন আহত হওয়ার কথাও বলেছিলেন তিনি। এই অগ্নিকাণ্ডের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন যে, ফায়ার ব্রিগেড যখন এসে পৌঁছায় তখন কারাওকে বার-এর রিসেপশনিস্ট জানিয়েছিলেন যে ভিতরে অন্তত ৪০ জন আটকে ছিলেন। এরমধ্যে কিছুজন ছুটে মেন এন্টান্স দিয়ে বাইরে এসেছেন। যারা পারেননি তারা ব্যালকনি থেকে ঝাঁপ দিতে গিয়ে হাত-পা ভেঙেছেন।
আরও পড়ুন - কথা রাখলেন হাসিনা, সীমান্ত পেরিয়ে ৪ টন ইলিশ এল রাজ্যে- পুজোর মুখে আরও ইলিশ আসবে
আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর কারাওকে বারের ৩০টি রুমে তল্লাশি চালায় উদ্ধারকারী বাহিনী। বারটিতে ফায়ার কন্ডিশন মানা হয়েছিল কি না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে অনুমান শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছিল। যদিও, ফারায় ব্রিগেড এই কারণে নিশ্চয়তা দেয়নি। এর আগে ভিয়েতনামে বেশকিছু অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাতে প্রাণহানি হয়েছে। যারমধ্যে উল্লেখযোগ্য ২০১৮ সালে হোচিমিন সিটি-র একটি অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে। সেখানে ১৩ জন মারা গিয়েছিল। ২০১৬ সালে হানই-এ একটি কারাওয়েকে সুবিধাযুক্ত রেস্তোরাঁতেও আগুন লেগেছিল। সেই ঘটনাতেও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
আরও পড়ুন - ভারতের সাহায্য তৈরি হবে বাংলাদেশের সবথেকে বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মোদী-হাসিনা স্বাক্ষর করলেন ৭টি মউতে