৩০ বছর পরে অভিভাবকদের কাছে ফিরল ছেলে
২ বছর বয়সে অপহরণ করা হয়
হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে পেয়ে খুশি মা
কোনও দিন এমনটা হবে তা স্বপ্নেও ভাবেননি লি জিংজি। কারণ ১৯৮৮ সালে তাঁর ছেলেকে চুরি করা হয়েছিল। তারপর থেকে ছেলেকে পাগলের মত খুঁজেছেন। ছেলেকে খুঁজতে গিয়ে চাকরিও ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। গত তিন দশক ধরে ছেলের প্রতীক্ষায় পথ চেয়ে বসেছিলেন। বসে ছিলেন বললে খুব খুব হবে। কারণ এক লক্ষেরও বেশিবার দ্বারস্থ হয়েছেন প্রশাসনের। বেশ কয়েকটি টিভি চ্যালেনে উপস্থিত হয়ে তাঁর হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। উল্টে তাঁর অভিযোগ লি-কে প্রায় ৩০০ বার বিভ্রান্ত করা হয়েছে।
কিন্তু সুদিন এসেছিল গত ১৮ মে। সেদিন তাঁর ছেলে আবারও ফিরে এল তাঁর কাছে। কিন্তু লি-র ছেলে শৈশব, কৈশরের রাস্তা পার হয়ে রীতিমত যুব। লি-রে হারিয়ে যাওয়া ছেলের নাম মাও। এখন তাঁর বয়স ৩২ বছর। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী বললে খুব একটা ভুল হবে না। যখন সে অপহৃত হয় তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২। তারপর কেটে গেছে ৩০টি বসন্ত।
কিন্তু প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে এতদিন পর হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে কী করে ফিরে পেলেন লি? এপ্রিলের শেষের দিকে শির পুলিশ খবর পায় সেচুয়ান প্রদেশের এক ব্যক্তি শানসির কাছ থেকে একটি শিশু কিনেছিল। তারপরই মাওকে পর্যবেক্ষণ করে পুলিশ। চিনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, মাও-এর শৈশবের ছবি বয়স্ক করেছে সফটওয়ারে ফেলে। সমস্ত ডাটাবেস স্ক্যান করেছে। পাশাপাশি বর্তমান ও শৈশবের মাওকে মিলিয়েছে। সেই মিল চিহ্নিত হলে মাও-এর ডিএনএ টেস্ট করা হয়। তাঁর জন্মগত বাবা ও মায়ের সঙ্গে ডিএনএ মিলে যাওয়ার পরই ফিরিয়ে দওয়া হয় তাঁর মায়ের কাছে। আর সেই দৃশ্য ছিল বড়ই আবেগ প্রবন। মাও জানিয়েছে সে তাঁর জন্মগত অভিভাবকদের কাছেই ফিরে যেতে চায়। তাঁদের কাছেই থাকতে চায়।
চিনে নিখোঁজ হওয়া শিশুদের সম্পর্কে কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয় না। তবে তবে ২০১৬ সাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় শিশু নিখোঁজ রুখতে সতর্ক করা হয়। চিনের রাষ্ট্রীয় প্রশাসন জানিয়েছে গত এক বছরে প্রায় ৩০০ নিখোঁজ শিশুকে অভিভাবকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া গেছে। ১৯৮০ সাল থেকেই চিনে শিশু অপরহরণ ও শিশু পাচার ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল। কারণ এই সময় থেকেই এক সন্তান নীতি কার্যকর করেছিল রাষ্ট্র।