এক মুহূর্ত আগেই বাড়িটা ছিল ফুল দিয়ে সাজানো। চলছিল গান-বাজনা, খাওয়া দাওয়া, হই হুল্লোর। মুহূর্তেই পাল্টে গেল ছবিটা। ছন্নছাড়া বাড়িটা ভরে গেল চাপ চাপ রক্তে। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল শহরের ঘটনা। শনিবার রাতে পশ্চিম কাবুলে শিয়া সম্প্রদায়ের এক বিবাহ আসরে এই আত্মঘাতি বোমা হামলায় এখনও পর্যন্ত অন্তত ৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছিল মৃতের সংখ্যা ২০। তারপর যত সময় গিয়েছে নিহতের তালিকাটা ততই লম্বা হয়েছে। সরকারের পক্ষে দাবি করা হচ্ছে আফগানিস্তানে এই বছর এটাই সবচেয়ে মারাত্মক সন্ত্রাসবাদী হামলা।
আরও অন্তত ১৮০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাই মৃতের সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। হতাহতের মধ্যে বেশ কয়েকজন মহিলা ও শিশুও রয়েছেন বলে সরকারি বয়ানে জানানো হয়েছে। আহতদের কাছের এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখনও কোনও গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে এই হামলার পিছনে তালিবান ও আইএস জঙ্গিদের স্থানীয় শাখা জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। তারা সুন্নি সম্প্রদায়ভুক্ত, এবং গত কয়েক মাসে ক্রমেই শিয়া সম্প্রদায়ের উপর তাদের হামলার ঘটনা বাড়ছে।
জানা গিয়েছে, বিয়ের পর এদিন ছিল খাওয়া-দাওয়ার আসর। অন্তত ১২০০ অতিথি আমন্ত্রিত ছিল বলে দাবি করেছেন বরের পরিবারের একজন। তিনি জানিয়েছেন, বিবাহের আসরে গান-বাজনার একটি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল। রাত ১০টা ৪০ মিনিট নাগাদ বিস্ফোরণটি ঘটে সেখানেই। তাঁর দাবি অতিথিদের মধ্যেই গায়ে বিস্ফোরক বেঁধে মিলে মিশে ছিলেন আত্মঘাতি জঙ্গিরা। তবে বর ও বউ পাশের একটি ঘরে থাকায় তাঁরা অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন।
আফগানিস্তানে এখন তালিবানি জঙ্গিদের সঙ্গে প্রশাসন শান্তি প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে তালিবানদের আলোচনা ইতিবাচকভাবেই এগোচ্ছিল। কিন্তু, পশ্চিম কাবুলে শিয়া সম্প্রদায়ের উপর যেভাবে হামলার ঘটনা দিনকে দিন বাড়ছে তাতে তালিবানরা আদৌ শান্তি প্রক্রিয়াকে গুরুত্ব দিচ্ছে কিনা তাই নিয়েই প্রশ্ন তুলছে আফগান সরকার। এই ঘটনার সপ্তাহ তিনেক আগে এই পশ্চিম কাবুলেরই এক জায়গায় আত্মঘাতি বিস্ফোরণে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আহত হয়েছিলেন ১৪৫ জন।