
Bangladesh Clothing Rules News: ২০২৫ সালের শেষে এসেও পোশাক বিধিতে তালিবানি ফতোয়া। মহিলারা কী পরবেন আর কী পরবেন না তা ঠিক করে দেবে রাষ্ট্র! কর্মক্ষেত্রে এবার মহিলাদের জন্য 'ড্রেস কোড' বেঁধে দিলো বাংলাদেশ সরকার। তবে ঠিক সরকার নয়, বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের তরফে জারি করা হয়েছে এই পোশাক বিধি। গত ২১ জুলাই জারি হওয়া এই নির্দেশিকা সামনে আসতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের তরফে অফিসে মহিলা ও পুরুষ কর্মচারী বা আধিকারিকদের জন্য পোশাক বিধি বলে দেওয়া হয়েছে। কে কী পোশাক পরবেন তা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের তরফে প্রকাশিত একটি বিজ্ঞপ্তিও সামনে এসেছে।
কী বলা হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে (Bangladesh News):-
বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের তরফে প্রকাশিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে যে, এবার থেকে ব্যাঙ্কের কোনও মহিলা অফিসার শাড়ি বা সালোয়াড় কামিজ বাদে লেগিন্স, শর্ট ড্রেস, স্লিভলেস জামাকাপড় পরে অফিসে ঢুকতে পারবেন না। প্রত্যেক মহিলা আধিকারিকদের শাড়ি এবং সালোয়ড় কামিজ পরা বাধ্যতামূলক বলেও জানানো হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে। একই সঙ্গে মহিলাদের মাথায় হিজাব পরার নিদানও দেওয়া হয়েছে। তবে সেই হিজাব হতে হবে সাদামাটা কোনও রকম কারুকার্যহীন। এদিকে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসতেই বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার প্রধাম মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সেদেশের একাংশ জনতা। পোশাক পরার স্বাধীনতায় সরকারি হস্তক্ষেপ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
তবে শুধু এই পোশাক বিধি মহিলাদের ক্ষেত্রেই নয়, পুরুষরাও কেমন জামা পরে অফিসে আসবেন তাও ঠিক করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক। সূত্রের খবর, পুরুষ কর্মচারীদের পরতে হবে শুধুমাত্র ফরম্যাল ফুল অথবা হাফ শার্ট ও ফরম্যাল প্যান্ট। জিন্সের প্যান্ট পরাও নিষিদ্ধ। এই বিষয়ে অবশ্য ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সাফ বার্তা, ব্যাঙ্কের সব কর্মীদের মধ্যে পোশাকে সাম্য ও ঐক্য আনতেই এই নয়া নির্দেশ জারি হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে শালীন পোশাক বাধ্যতামলূক।
বাংলাদেশে পোশাক বিধি নিয়ে বিতর্ক:-
মহিলাদের উপর পোশাক বিধির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফতোয়া প্রকাশিত হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন সেদেশের জনগণের একাংশ। কেউ কেউ বিষয়টি সরকারের বিরুদ্ধে একনায়কতন্ত্রের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন। আবার কেউ কেউ বলেছেন- 'বাংলাদেশে নয়, যেন তালিবানি আফগানিস্তানে বাস করছি।' বিষয়টি নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাংলাদেশের মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম। তিনি বলেন, ''ব্যাঙ্কে কি কেউ অশালীন পোশাক পরে কাজে যায় নাকি? বৈষম্য দূর করতে পোশাকের প্রসঙ্গ আসছে কেন? তাঁর ইঙ্গিত, কে, কোথায় বসে এই নির্দেশ দিচ্ছেন বা কাকে সন্তুষ্ট করতে এই তালিবানি ফতোয়া, বাংলাদেশের মানুষের সেটা বুঝতে বাকি নেই। বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের উচিত নারী-পুরুষ নির্বিশেষে পেশাগত দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করছে কি না, সেটা দেখা ও গ্রাহকদের পরিষেবা পাওয়া নিশ্চিত করা।''
অন্যদিকে, চাপের মুখে পড়ে বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের তরফেে তড়িঘড়ি এই সিদ্ধান্ত বদল করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে এখন দেখার ইউনূস জমানায় বাংলাদেশে এই তালিবানি ফতোয়ার উত্তাপ কোন দিকে যায়।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।