
গত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশ যে রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সঙ্কটের সম্মুখীন হচ্ছে, তা ভারতসহ সারা বিশ্বে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। একসময় উদার ও তুলনামূলকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ পরিচয়ের কারণে পাকিস্তানের থেকে আলাদা ছিল এই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটি, এখন ক্রমবর্ধমান উগ্রবাদ, সামাজিক উত্তেজনা এবং সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার অভিযোগের কারণে খবরের শিরোনামে। শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, দুর্বল আইন-শৃঙ্খলা, বিনিয়োগে তীব্র হ্রাস এবং রাজস্বের অভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিকে গভীর সঙ্কটে নিমজ্জিত করেছে।
পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে নেমে এসেছে যে দেশটি ক্রমশ ঋণের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে এবং সরকারি ব্যয় ক্রমাগত বাড়ছে। উপলব্ধ তথ্য অনুসারে, গত বছরে বাংলাদেশের মোট সরকারি ঋণ প্রায় ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ২০২৫ সালের জুন নাগাদ ২১ ট্রিলিয়ন টাকারও বেশি পৌঁছেছে, যার মধ্যে বিদেশী ও দেশীয় ঋণ উভয়ই রয়েছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) অনুসারে, বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ পরিস্থিতি মাঝারি ঝুঁকির স্তরে পৌঁছেছে, ঋণ-রপ্তানি অনুপাত প্রায় ১৬২ শতাংশে পৌঁছেছে, যা নিরাপদ সীমার অনেক উপরে। যদি রপ্তানি আরও হ্রাস পায়, তাহলে দেশটি একটি গুরুতর আর্থিক সঙ্কটের মুখোমুখি হতে পারে, এমনকি দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকির মুখোমুখি হতে পারে।
এই অর্থনৈতিক চাপের কারণে, বাংলাদেশ ভারত থেকে ভর্তুকি হারে ৫০,০০০ টন চাল আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা অন্যান্য দেশের তুলনায় এর খরচ কমিয়ে কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় করবে।
যদিও নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর থেকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে কিছুটা টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে, ভারত ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশকে আর্থিক সহায়তা, ঋণ এবং অবকাঠামো উন্নয়ন সহায়তা, যেমন রাস্তা, সেতু এবং বিদ্যুৎ প্রকল্প প্রদান করে আসছে। এটি বর্তমান সঙ্কটেও সম্পর্কের গুরুত্বকে তুলে ধরে।