
১৯৭১ সালের গণহত্যার জন্য এবার বাংলাদেশ সরাসরি পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে বলল। রবিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হোসেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রী ইসাক দারের কাছে এই বিষয়টি উত্থাপন করেন। "১৯৭১ সালে পাকিস্তান কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমা, সম্পদের ভাগাভাগি, ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্তদের জন্য বরাদ্দকৃত বিদেশি সাহায্য হস্তান্তর, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন সহ দীর্ঘদিনের ঐতিহাসিক সমস্যাগুলির দ্রুত সমাধানের জন্য বাংলাদেশ আহ্বান জানিয়েছে যাতে একটি স্থায়ী ও ভবিষ্যৎমুখী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করা যায়"। দুই দেশের বৈঠকের পর বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রকের তরফ থেকে একটি বিবৃতি জারি করে এমনটাই জানান হয়েছে।
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রী তার বাংলাদেশি প্রতিপক্ষের আমন্ত্রণে ২৩ থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত দুই দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে ছিলেন। বিকেলে ইসাক দার দেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেন। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি এবং ৫টি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে। রবিবার বিকেলে ঢাকায় স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোঃ তৌহিদ হোসেন এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক ডার উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তিতে উভয় দেশের সরকারি ও কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা মকুবের বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকগুলি নিম্নলিখিত ক্ষেত্রগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে, যেমন: দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বিষয়ে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন, সাংস্কৃতিক বিনিময়, বিদেশী পরিষেবা একাডেমিগুলির মধ্যে সহযোগিতা, রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থাগুলির মধ্যে সহযোগিতা এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) এবং পাকিস্তানের ইনস্টিটিউট অফ স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ ইসলামাবাদ (আইএসএসআই)-এর মধ্যে সহযোগিতা।
এর আগে, পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান এবং বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা এস কে বশির উদ্দিন বৃহস্পতিবার ঢাকায় অর্থনৈতিক সহযোগিতা, পারস্পরিক বিনিয়োগ এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে গভীর আলোচনা করেছেন, শুক্রবার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।