চিনে কোরানা ভাইরাস মহামারীর আকার নিয়েছে। ১০ ফেব্রুয়ারি সোমবার মৃত্যু হয়েছে ১০৮ জনের। এখনও পর্যন্ত এটাই একদিনে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা। সামগ্রিক ভাবে সোমবার পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০১৬।
সোমবার চিনের মূল ভূখণ্ডে নতুন করে আরও ২,৪৭৮ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস মিলেছে। এখনও পর্যন্ত গোটা দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪২,৬৩৮ বলে জানিয়েছে জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন। এদিকে সোমবার করোনায় মৃত্যু হওয়া সকলেই হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা বলে জানা যাচ্ছে। যাদের মধ্যে রাজধানী উহানে মৃতের সংখ্যা ৬৭। এই উহানি হল করোনা ভাইরাসের এপিসেন্টার।
হুবেই ছাড়াও করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে হেলিংজিয়ং, আনহুই এবং হুনান প্রদেশেও। তিয়ানজিয়ান এবং বেজিং-এর পরিস্থিতিও ক্রমেই খারাপ হচ্ছে।
করোনা ভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার কারণ অনুসন্ধানে চীনে বিশেষজ্ঞ তদন্ত দল পাঠিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু । সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানোম বলেন, ‘চীনে কখনও ভ্রমণ করেননি এমন মানুষের মধ্যেও করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ব্যাপারটি উদ্বেগজনক। আর এটা ‘কেবল শুরু’ হতে পারে। সামনে আরও কঠিন সময় আসছে।’ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধান আরও বলেন, ‘একটি ক্রমবর্ধমান জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার জন্য সব দেশকেই করোনা ভাইরাসের জন্য তৈরি থাকতে হবে। এর অর্থ হল দ্রুত পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরি ব্যবস্থা তৈরি রাখা, বিভিন্ন সরঞ্জামের ব্যবস্থা রাখা যা জনস্বাস্থ্যের প্রয়োজনে লাগবে।’ তিনি বলেন, চীনের বাইরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কিছুটা ধীরগতিতে দেখা যাচ্ছে। তবে তা আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে। যে ধরনের নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে সেগুলো যদি কোনওভাবে লঙ্ঘন করা হয়, তাহলে এই ভাইরাস জয়ী হবে।
এখন পর্যন্ত অন্তত ২৮টি দেশে শনাক্ত হয়েছে করোনা ভাইরাস। চীনের বাইরে হংকং ও ফিলিপিন্সে ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
প্রতিনিয়ত এই ভাইরাসে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি, কাশির মতো সমস্যা দেখা দেয়। ভাইরাসটি যাতে ছড়িয়ে না যায়, সেজন্য হুবেই প্রদেশকে পুরো দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে চীন। ওই অঞ্চলের সঙ্গে চীনসহ বাইরের দুনিয়ার সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।