পাইলট বাবা আটকে দক্ষিণ কোরিয়ায়
রাষ্ট্রসংঘের কাজে গিয়ে সুদানে আটকে পড়েছেন মা
আর তাদের দুই শিশু পড়ে রয়েছে উগান্ডায়
লকডাউনের কারণে কবে তাঁরা ফের একসঙ্গে মিলিত হবেন, কেউ জানে না
বাবা রয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ায়, মা সুদানে আর তাদের দুই ছেলে উগাণ্ডায়। লকডাউন ঘোষণার পর তাঁরা আটকা পড়েছেন। দুই ছেলে তাদের বাবা-মা ছাড়া এবং স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে ছেড়ে পড়ে আছেন এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশের তিনটি দেশে। একমাত্র ফোনে ভার্চ্যুয়াল যোগাযোগ রয়েছে, কিন্তু কেউই তারা একত্রিত হতে পারছেন না। কবে আবার সবাই এসঙ্গে হতে পারবেন তা–ও জানেন না।
ইউনাইটেড নেশন-এর পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স অফিসার নূর আয়েশা কর্মসুত্রে রয়েছেন সুদানে। তাঁর পাইলট স্বামী রাশিদুল হাসানও একই কারণে আছেন দক্ষিণ কোরিয়ায় এবং তাঁদের দুই ছেলে আরিয়ান নূর (১০) ও আরিজ নূর (৮) রয়েছে উগাণ্ডায় তাদের দাদু-ঠাকুমার কাছে।
৮-১০ বছরের শিশুদের পক্ষে এত দিন ধরে মাকে ছেড়ে থাকার কথা ভাবাও অসম্ভব। মার্চ মাসের ২০ তারিখ নূর আয়েশা উগান্ডায় ছেলেদের কাছে যেতে পেরেছিলেন। কিন্তু দু’দিন পরেই তাঁকে উগান্ডা ছেড়ে সুদানে ফিরে আসতে হয়। তারপর থেকেই তিনি আটকা পরে যান।
অন্যদিকে রাশিদুল হাসান ছেলেদের ছেড়ে ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে উগান্ডা ছেড়েছেন, তার পর থেকে আটকে আছেন দক্ষিণ কোরিয়ায়। আয়েশা ইউএনের বিশেষ ফ্লাইটে উগান্ডায় যাওয়ার ব্যবস্থা করছেন কিন্তু উগান্ডা সরকার কবে নাগাদ সেই অনুমতি দেবে, তা এখনও অনিশ্চিত।
নূর আয়েশা আছেন দক্ষিণ সুদানে মিশনের কমপাউন্ডে। সেখানেই অফিস, থাকার জায়গা। কমপাউন্ডের ভেতরেই বাজার, রেস্টুরেন্টসহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা আছে। পরিবার ছেড়ে থাকা ছাড়া তাঁর আর তেমন কোনও সমস্যা নেই।
দক্ষিণ সুদানের করোনা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। ইউএন মিশন চাইছে সেখানে থাকা কর্মীদের তাড়াতাড়ি বাড়ি পাঠিয়ে দিতে। আপাতত বাড়ি থেকেই অফিস। কিন্তু সীমান্ত বন্ধ এবং যোগাযোগবিচ্ছিন্নতা-সহ নানান জটিলতায় কর্মীরা বাড়ি ফিরতে পারছেন না।
অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় আটকে পড়া রাশিদুল হাসানও এতদিন স্ত্রী-পুত্র পরিবার ছেড়ে হাঁপিয়ে উঠেছেন। কবে ফের সবাই কাছাকাছি হতে পারবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। প্রতিদিনকার নিয়ম মাফিক কাজের মধ্যেও ঠেকে যাচ্ছে মানসিক যন্ত্রণা। কবে তার থেকে রেহাই মিলবে জানেন না।