কোয়াড অর্থাৎ ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জোট। শুক্রবার এই রাষ্ট্রগোষ্ঠীরই প্রথম শীর্ষ বৈঠক হল। প্রধানমন্ত্রী মোদীর মুখে শোনা গেল বসুদৈব কুটুম্বকম। কী বললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট?
শুক্রবার, ঐতিহাসিক প্রথম কোয়াড শীর্ষবৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বললেন, কোয়াড আসলে ভারতীয় দর্শন 'বসুধৈব কুতুম্বকম'এরই একটি পরিবর্ধিত রূপ। কোয়াড, অর্থাৎ ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র - এই চার দেশের রাষ্ট্রগোষ্ঠী, যাদের মূল লক্ষ্য ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকাকে কোনও নির্দিষ্ট দেশের, বিশেষত চিনের কবলমুক্ত রাখা। দীর্ঘদিন ধরে বেসরকারি ভাবে এই রাষ্ট্রগোষ্ঠী বেশকিছু সামরিক অনুশীলন ও অসামরিক বৈঠক করলেও, গত বছর থেকেই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে এই রাষ্ট্রগোষ্ঠী চেহারা পেতে থাকে। এদিন ছিল এই গোষ্ঠীর রাষ্ট্রপ্রধানদের প্রথম বৈঠক।
এদিনের ভার্চুয়াল বৈঠকে, প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, দীর্ঘ সময় পার করে এখন, কোয়াড গোষ্ঠী ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এই গোষ্ঠীকে তিনি বৈশ্বিক মঙ্গলের শক্তি বলেও বর্ণনা করেন। তিনি জানান, ভ্যাকসিন বিতরণ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং উদীয়মান প্রযুক্তির মতো বৈশ্বিক কল্যাণের বিষয়ে কোয়াড আলোচনা করে। আসলে কোয়াড হ'ল ভারতের 'বসুধৈব কুতুম্বকম'এর সম্প্রসারণ। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ধর্মনিরপেক্ষতা, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির মতো চার দেশের সাধারণ মূল্যবোধকে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজে একত্রিত হয়ে কাজ করার প্রতিশ্রতিও দেন মোদী।
এদিনের ভার্চুয়াল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ছাড়া অংশ নেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এবং জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সুগা। এই শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন বলেন, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল মুক্ত থাকাটা সকলের ভালোর জন্য প্রয়োজন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোয়াড-এর অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই এলাকার স্থিতাবস্থা বজায় রাখবে। এই রাষ্ট্রগোষ্ঠী বাস্তবসম্মত সমাধান এবং নিখুঁত ফলাফল বের করতে সক্ষম। মার্কিন রাষ্ট্রপতি আরও জানান, আমেরিকা স্থিতিশীল বৈশ্বিক বিকাশ চায়। আর এর মূল শক্তি হল টিকার উৎপাদন বৃদ্ধি করা।
এর জন্য কোয়াডের সকল সদস্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চান তিনি। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন, একবিংশ শতাব্দীতে ভারত-প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলই ঠিক করে দেবে বিশ্ব কোনদিকে যাবে। এই অঞ্চলের মহান চার গণতন্ত্রিক দেশের মৈত্রী, শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি আনতে পারে এবং এর সঙ্গে সঙ্গে ভবিষ্যতে এই অঞ্চলের অন্যান্য অনেক দেশের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারবে এই গোষ্ঠী।