এক বছরে নতুন ১০ অস্ত্র, তাও পারমাণবিক শক্তিতে চিনের থেকে পিছিয়ে ভারত, এগিয়ে পাকিস্তানও

গত এক বছরে ভারত অস্ত্রাগারে যোগ করেছে দশটি নতুন অস্ত্র

কিন্তু তারপরেও পারমাণবিক অস্ত্রে পিছিয়ে চিনের থেকে

একটিও অস্ত্র না বাড়িয়েও এগিয়ে পাকিস্তানও

পারমানবিক শক্তিধর দেশগুলির কাদের হাতে কত অস্ত্র রয়েছে

amartya lahiri | Published : Jun 15, 2020 12:35 PM IST / Updated: Jun 16 2020, 02:18 PM IST

গত এক বছরে ভারতের পারমাণবিক অস্ত্রাগার সম্বৃদ্ধ হয়েছে আরও দশটি নতুন অস্ত্রে। কিন্তু তারপরেও ওয়ারহেড বা ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যায় ভারত প্রতিবেশি দেশ চিনের থেকে তো বটেই, পিছিয়ে আছে এমনকী পাকিস্তানের থেকেও। অস্ত্র বিষয়ে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় গবেষণাকেন্দ্র সুইডেনের স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট বা এসআইপিআরআই তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এই তথ্যই দিয়েছে।

এসআইপিআরআই-এর তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে চিনের অস্ত্রাগারে মোট ৩২০টি ওয়ারহেড রয়েছে। পাকিস্তানে রয়েছে ১৬০টি। আর ভারতের হাতে গত এক বছরের অগ্রগতি সত্ত্বেও ওয়ারহেড রয়েছে ১৫০টি। সংস্থাটি তাদের রিপোর্টে সতর্ক করেছে চিন বর্তমানে তার পারমাণবিক অস্ত্রাগারকে দারুণভাবে আধুনিকিকরণ করছে। স্থল এবং জল এবং আকাশ তিন বিভাগেই তারা পারমাণবিক শক্তি সমৃদ্ধ বাহিনী গড়ে তুলছে। পাশাপাশি ভারত ও পাকিস্তান ধীরে ধীরে তাদের পারমাণবিক শক্তির আকার এবং বৈচিত্র্য বাড়াচ্ছে। তবে সবচেয়ে ভয়ের উত্তর কোরিয়ার অগ্রগতি।  তাদের জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল আবর্তিতই হচ্ছে সামরিক পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে।

২০১৯ সালের প্রতিবেদনে এসআইপিআরআই জানিয়েছিল, চিনের পারমাণবিক অস্ত্রাগারে ওয়ারহেড রয়েছে ২৯০ টি। আর ভারত ও পাকিস্তানের হাতে রয়েছে যথাক্রমে ১৩০-১৪০টি এবং ১৫০-১৬০টি পারমানবিক ওয়ারহেড। অর্থাৎ, গত একবছরে ভারত ও চিন দুই দেশই পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা বাড়ালেও পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা একই থেকে গিয়েছে।

এসআইপিআরআই-এর প্রতিবেদন থেকে আরও জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। ট্রাম্পের দেশে রয়েছে ৫,৮০০ টি ওয়ারহেড। তারপরেই রয়েছে পুতিনের রাশিয়া। ক্রেমলিনের অস্ত্রাগারে ওয়ারহেডের সংখ্যা ৬৩৭৫টি। মোট অস্ত্রের সংখ্যায় রাশিয়া এগিয়ে থাকলেও ডেপ্লয়েড অর্থাৎ কার্ষকরী অবস্থায় থাকা পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যায় এগিয়ে রয়েছে আমেরিকা। এই দুই দেশের পরে রয়েছে যথাক্রমে ব্রিটেন (২১৫) এবং ফ্রান্স (২৯০)।

সব মিলিয়ে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স, চিন, ভারত, পাকিস্তান, ইসরাইল এবং উত্তর কোরিয়া - পরমাণু শক্তিধর ৯ দেশের হাতে সব মিলিয়ে আনুমানিক ১৩,৪০০ টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১৩,৮৬৫। অর্থাৎ বিশ্বে গত একবছরে পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা কমেছে। এর কারণ মূলত, রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পুরোনো পারমাণবিক অস্ত্র গুলি নষ্ট করে দেওয়া। বিশ্বের পারমাণবিক অস্ত্রের ৯০ শতাংশ এই দুই দেশের হাতেই রয়েছে।

এতে আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই বলে সতর্ক করেছে এসআইপিআরআই। কারণ সামগ্রিকভাবে পারমাণবহিক অস্ত্রের সংখ্যা হ্রাস পেলেও পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলি ক্রমাগত তাদের অস্ত্রাগারের আধুনিকায়ন করে চলেছে। যা বলে দিচ্ছে বিশ্বে সামরিক উত্তেজনা বাড়ছে এবং অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের বিশেষ তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। চিন, ভারত বা পাকিস্তানের সরকারগুলি তাদের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা সম্পর্কে বিবৃতি দিলেও, তাদের অস্ত্রাগারগুলির অবস্থান বা আকার সম্পর্কে কোনও তথ্য দেয় না। রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আবার তাদের পারমাণবিক অস্ত্রের উন্নয়নে বিস্তৃত এবং ব্যয়বহুল কর্মসূচি নিয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার অবস্থার ক্রমাবনতি ঘটছে।

 

Share this article
click me!