পৃথিবী কীভাবে তৈরি হয়েছিল- সেই রহস্যের জট খুলতে আরম্ভ করেছেন বিজ্ঞানীরা। বিশ্বের মূল অংশে একটি ফুঁটো পাওয়া গেছে- সেটি ভাবিয়ে তুলছে বিজ্ঞানীদের। কারণ সেখান থেকে বার হচ্ছে হিলিয়াম-৩।
কোটি কোটি বছর আগে তৈরি হয়েছে এই বিশ্ব। কিন্তু এখনও অজানাই থেকে গেছে কীভাবে তৈরি হয়েছিল এই পৃথিবী। তবে আর মনে হয় বেশি দিন অপেক্ষা করতে হবে না। খুব তাড়াতাড়ি সেই রহস্যের সমাধান করে ফেলতে পারবেন বিজ্ঞানীরা। তেমনই আশা দেখাচ্ছে একটি বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্ট। রিপোর্টে বলা হয়েছে, গ্রহের মূল অংশে একটি এমন ফুঁটো রয়েছে যা বিশ্বের গঠন সম্পর্কে ইঙ্গিত দিয়েছে। এটি বিগব্যাং দিয়ে শুরু হয়ে রহস্যের বিস্তার রয়েছে সৌর নিহারিকাতেও।
বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যেই সনাক্ত করেছেন হিলিয়াম-৩। হিলিয়াম গ্যাসের একটি বিরাট আইসটোপ রয়েছে- যেটি পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে বার হচ্ছে। আদিম এই গ্যাসটি বিগ ব্যাং-এর পরেই তৈরি হয়েছিল বলেও মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবী তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি সৌর নিহারিকা থেকে পেয়েছিল। বিজ্ঞানীরা জানার চেষ্টা শুরু করেছেন এই প্রাচীন গ্যাস এখনও পর্যন্ত কতটা বার হয়ে গেছে।। যা শুধুমাত্র একটিকে মধ্যস্তরে দেখা যেত। সেটিকে বলা হয় ম্যান্টেল।
হিলিয়াম-৩ সনাক্তকরণ ইঙ্গিত দেয় যে পৃথিবীতে এই উপাদানটির গভীর জলাধার রয়েছে। তবে এর অবস্থান ও প্রাচুর্য সম্পর্কে এখনও বিস্তারিত তথ্য হাতে পাননি বিশেষজ্ঞরা। সেই রহস্য এখনও অধরা থেকে গেছে। তবে বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, হিলিয়াম - ৩ এই গ্যাস প্রাকৃতিক কারণেও তৈরি হতে পারে। ট্রিটিয়ামের তেজস্ক্রিয় ক্ষয়- থেকেও তৈরি হয় হিলিয়াম- ৩। তবে এই আদিম উপাদানটি মূলত তৈরি হয় নিহারিকাতে।
AGU Geochemistry, Geophysics, Geosystems এই জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে পৃথিবীর গঠন ও বিবর্তনের সময় উদ্বায়ী বিনিয়ন ধাতব কোরকে একটি ফুটো তৈরি হয়েছিল। যা পরবর্তীকালে জলাধারের আকার নেয়। আর গোটা বিশ্বেই হিলিয়ান-৩ সরবরাহ করে। প্রধানত ইউরেনিয়াম ও থোরিয়ামের ক্ষয় দ্বারা উৎপাদিত স্থলজ হিলিয়াম-৩ আদিম উৎসের বড় বিগ ব্যাং এর সংশ্লেষিত হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে এটি গঠনের সময় পৃথিবীতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার মনে নিহারিকা ধূলিকনা আর গ্যাস দিয়ে তৈরি। গ্যাসের বেশিয়ারভাগই হাইড্রোজেন আর হিলিয়াম। একটি নিহারিকাতে ধূলোকনা ও গ্যাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তবে মাধ্যাকর্ষণ ধীরে ধীরে ধুলো আর গ্যাসের গুঁড়োকে একসঙ্গে টানতে পারে। তাতেই মাধ্যাকর্ষণ শক্তিশালী হয়। এভাবেই ক্রমশ বড় হয়ে যায় ধূলিকানা আর দ্যাসের ঝাঁক। তখন এটির মধ্যে নিজস্ব মাধ্যাকর্ষণ তৈরি হয়। পরে ধীরে ধীরে কোরকটি গরম হয়ে নক্ষত্রের আকার নিতে শুরু করে।
গবেষকরা প্রাথমিক গঠনের সময় হিসিয়ামের মডেল তৈরি করেছিলেন। হিলিয়াম এই গ্রমে জমা হয়েছিলষ কিন্তু চাঁদের গঠনরে পরই তা হারিয়ে যায়। বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন প্রায় ৪০০ কোটি বছর আগে পৃথিবী তার আয়তনের প্রায় এক তৃতীয়াংশ বড় কোনও বস্তুতে ধাক্কা মেরেছিল। সেই সময়ই এই গ্রহের কোরকে একটি ফুঁটো তৈরি হয়েছিল- যেখান থেকে এখনই হিলিয়ান নিঃসরণ হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন প্রতি বছর প্রায় ২ কিলোগ্রাম হিলিয়াম গ্যাস বিশ্বের অভ্যন্তর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। কোরটি হিলিয়াম -৩ এর জন্য একটি সম্ভাব্য জলাধার তৈরি করার কারণে বিশ্বের জন্য তা কম ক্ষতিকারক। তবে বিশ্ব তৈরিরসময় যেসব তরল ছিল তার অধিকাংশ এখনও পর্যন্ত এই গ্রহের অন্দরেই রয়েছে। তবে এখনই হাল ছাড়তে রাজি নন বিজ্ঞানীরা। তারা সৃষ্টির আদি কথা জানান জন্য ভূপৃষ্টের আরও গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করছে।