অর্থের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানবতা
এই ভারি কথাটা বাস্তব করে দেখালেন সারা বিশ্বের ৮০-রও বেশি ধনকুবের
করোনা মোকাবিলায় দিলেন স্বপ্নের মতো অবিশ্বাস্য প্রস্তাব
কীভাবে বিশ্বকে সহায়তা করতে চান তাঁরা
অর্থের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানবতা। এই ধরণের ভারি ভারি কথা বলাটা সহজ হলেও করে দেখানোটা মোটেই সহজ নয়। কিন্তু, স্বপ্নের মতো হলেও সোমবার সেই ধরণেরই অবিশ্বাস্য প্রস্তাব দিলেন সারা বিশ্বের ৮০ জনেরও বেশি কোটিপতি। এক খোলা চিঠিতে তাঁরা, করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় তহবিল সংগ্রহের জন্য, বিভিন্ন রাষ্ট্রের সরকারদের নিজেরাই যেচে তাদের উপর পর্যাপ্ত পরিমাণে কর আরোপের আহ্বান জানালেন। তাঁরা আরও দাবি করেছেন, শুধুমাত্র দান-অনুদানের মাধ্যমে এই বিপুল সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।
এই স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন অ্যাবিগেল ডিজনি, টিম ডিজনি, মেরি ফোর্ড-দের মতো ধমকুবেররা। এদের বেশিরভাগই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের বাসিন্দা। তাঁরা এই খোলা চিঠিতে বলেছেন, আইসিইউ ওয়ার্ডে অসুস্থদের যত্ন নেওয়া, অ্যাম্বুল্যান্সে করে অসুস্থদের হাসপাতালে নিয়ে আসা, মুদি দোকানের তাকগুলিতে পণ্য পৌঁছে দেওয়া বা ঘরে ঘরে খাবার সরবরাহ করার মতো কাজ তাঁরা করতে পারছেন না। তবে তাঁদের অনেক টাকা আছে। বিশ্বকে এই সংকট থেকে মুক্ত করতে অনেক অর্থের দরকার। শুধু এই মহামারির সময়েই নয়, সামনের বেশ কয়েক বছর প্রচুর অর্থের দরকার হবে পৃথিবীকে আবার ফের জায়গায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে।
তাই তাঁরা লিখেছেন, 'আমাদের মতো মানুষ', অর্থাৎ তাঁদের মতো এই গ্রহের ধনীতম ব্যক্তিদের উপর 'অবিলম্বে', 'যথেষ্ট পরিমাণে' এবং 'স্থায়িভাবে' কর বৃদ্ধি করা হোক। তাতে করে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, স্কুল এবং জননিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে তহবিল পাওয়া যাবে। তাঁরা মনে করছেন করোনা সঙ্কটের প্রভাব কয়েক দশক ধরে থাকতে পারে। যার ফলে অন্তত আরও ৫০ কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাবেন। কোটি কোটি মানুষ কাজ হারাবেন। কোটি কোটি শিশু পড়াশোনার সুযোগ হারাবে। আর বর্তমানে হাসপাতালের শয্যা, প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জাম, এবং ভেন্টিলেটরের অভাব প্রতিদিনই বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অপর্যাপ্ত বিনিয়োগের কথা মনে করিয়ে দেয়।
তাঁরা আরও বলেছেন, বিশ্বব্যাপী করোনা-যুদ্ধের প্রথম সারিতে যারা লড়ছেন, তাঁদের কাছে তাদের অনেক ঋণ রয়েছে। তা তাঁরা এই অতিরিক্ত করদানের মধ্য দিয়ে পূরণ করতে চান। চিঠিতে বলা হয়েছে, যাঁরা প্রতিদিন নিজেদের জীবন বিপন্ন করে জনজীবন চালু রেখেছেন, তাঁরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উপযুক্ত বেতন পান না। এই অবস্থায় দেরী হওয়ার আগেই তাঁরা বিশ্বের ভারসাম্য রক্ষায় এগিয়ে আসতে চান। তাই নিজেদের ধন-দৌলতের ভাগ দিতে চান সেইসব মানুষদের, যাঁদের চাকরি, ঘরবাড়ি বা পরিবার চালানোর মতো ক্ষমতা হারানোর উদ্বেগগ রয়েছে, তাঁদের।