পাকিস্তানে ১০ পরিবারের ৫০ জনকে একসঙ্গে হিন্দু থেকে মুসলমান করা হল। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে এই কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
এক সঙ্গে ৫০ জনকে হিন্দুকে জোর করে ধর্মান্তরিত করা হল। পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে। হিন্দুদের ১০টি পরিবারের সদস্যদের একসঙ্গে ধর্মান্তরিত করে মুসলিম করা হয়েছে। এই গণ ধর্মান্তকরণের ঘটনায় রাষ্ট্র জড়িত রয়েছে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। তবে পাকিস্তান প্রশাসন এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেনি।
বৃহস্পতিবার দ্যা এক্সপ্রেস ট্রিবিউন পত্রিকায় প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, ধর্মান্তরিত ব্যক্তিরা মিরপুরখাস এলাকার বাসিন্দা। শহরের বায়তুল ইমান নিউ মুসলিম কলোনি সেমিনারিতে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানেই তাদের ধর্মান্তরিত করা হয়েছে। যদিও সেমিনারের তত্ত্বাবধায়ক কারি তৈমুর রাজপুর নিশ্চিত করেছেন সকলেই স্বেচ্ছোয় মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। তিনি আরও বলেছেন ১০টি পরিবারের ২৩ জন মহিলা-সহ সকলেই ধর্মান্তরিত হয়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন এই তালিকায় রয়েছে এক বছরের একটি ছোট্ট শিশুকন্যাও। রিপোর্টে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের ধর্ম বিষয়েক মন্ত্রী মুহাম্মদ তালহা মাহমুদের ছেলে মুহাম্মদ শারমরোজ খান এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
পাক মন্ত্রীর ছেলে জানিয়েছেন, সকলেই স্বেচ্ছায় ধর্ম পরিবর্তন করেছেন। কাউকে জোর করে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা হয়নি। ধর্মান্তকরণ অনুষ্ঠানের সময় বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রীর ছেলে তাদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন এরা স্বেচ্ছায় ধর্ম পরিবর্তন করছেন কিনা।
এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন হিন্দুরা। হিন্দু সংগঠনের সঙ্গে যুক্তরা জানিয়েছেন এই ঘটনা রীতিমত উদ্বেগের। ফরিক শিব কুচ্চি , একজন হিন্দু কর্মী, দীর্ঘদিন ধরেই হিন্দুদের ধর্মান্তকরণের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন, তিনি বলেন, মনে হয় রাষ্ট্র নিজেই এই ধর্মান্তকরণের সঙ্গে যুক্ত। তিনি আরও বলেছেন, ধর্মান্তকরণের বিরুদ্ধে আইন লাগু করার দাবিতে বহু মানুষ দীর্ঘদিন সরকারের কাছে আর্জি জানিয়ে আসছে। কিন্তু পাকিস্তান সরকার তা কানে নিচ্ছে না। তবে ধর্মান্তকরণ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া পাক মন্ত্রীর ছেলের উদ্দেশ্যে তিনি জানিয়েছেন, সিন্ধ প্রদেশে ধর্মান্তকরণ একটি বড় সমস্যা। এটি বন্ধ করার ব্যবস্থা নেওয়ার দেশের গুরুত্বপূর্ণ নারগিরকা এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বিষয়টিকে উৎসহ দিচ্ছে।
২০২১ সালের জুলাই মাসে সিন্ধের বাদিন এলাকায় একসঙ্গে ৫৯ জন হিন্দু শ্রমিককে ইসলাম ধর্মের দীক্ষা দেওয়া হয়েছিল। এরা সকলেই ছিল কৃষক। দীর্ঘ দিন ধরে পরুষানুক্রমে এই কাজই করে আসছিলেন। যাদের কৃষি জমি তারাই ধর্মান্তকরণে জোর দিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। শোনাযায় সুরক্ষা আর অর্থনৈতিক সাহায্যের বিনিয়ম ৫৯জন হিন্দু শ্রমিককে মুসলমান করা হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ
পাকিস্তানে ফের বড় জঙ্গি হামলা-আত্মঘাতী বিস্ফোরণে রক্তাক্ত থানা, ক্রমশ বাড়ছে নিহতের সংখ্যা
সংবাদ দুনিয়ায় নক্ষত্র পতন, প্রয়াত প্রখ্যাত পাকিস্তানি কানাডিয়ান সাংবাদিক তারেক ফাতাহ