গত ১৫ জুন রাতে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিনের সেনাদের মধ্যে যে সংঘর্ষ হয়েছিল এখন তা নিয়ে উত্তাল দুই দেশই। এই হামলায় ভারতের ২০ জন সেনা জওয়ান শহিদ হন। নিজেদের তরফে প্রাণহানির কথা শিকার করেছে চিনও। এবার এই হামলা নিয়ে এক চাঞ্চল্যকর দাবি করল মার্কিন গোয়েন্দারা। সেদিন ভারতীর সেনার উপর প্রথম বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছিল চিনা বাহিনীই। আর তা হয়েছিস টিনা সামরিক বাহিনীর এক শীর্ষস্থানীয় জেনারেলের নির্দেশই। এমনটাই দাবি করা হয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টে।
মার্কিন গোয়েন্দাদের ওই রিপোর্ট বলা হয়েছে, চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের প্রধান জেনারেল ঝাও জংকি এবং সামরিক বাহিনীতে কর্মরত কয়েকজন প্রবীণ সামরিক কর্তা ওই হামলার সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিলেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, অতীতেও ঝাও-এর নেতৃত্বে ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতে জড়িয়েছিল চিনা বাহিনী।
ভারতকে শায়েস্তা করতেই এই রননীতি ঝাও নিয়েছিল বলে মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। ঝাও এর আগে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন, চিনের উচিত নয় নিজেদের দুর্বল করে দেখানোটা। কারণ তাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা তার শরিক রাষ্ট্রগুলি চিনকে শোষণ করার সুযোগ পেয়ে যাবে। সীমান্ত সংঘাত যাতে অন্তত এক সপ্তাহ ধরে চলে তার পরিকল্পনা করেছিলেন চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের প্রধান জেনারেল ঝাও জংকি।
গত দেড়মাস ধরে লাদাখ সীমান্তে উত্তেজনা বাড়তে থাকলেও গালওয়ানের হামলা নিয়ে চিন জানিয়েছিল, এই সংঘাতের কোনও পরিকল্পনা তাদের ছিল না। স্থানীয় স্তরে পরিস্থিতি আচমকা উত্তপ্ত হওয়ায় তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ফলস্বরূপ, সেখানে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। কিন্তু, মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টের দাবি, গোটাটাই পূর্ব-পরিকল্পিত। ওই রিপোর্টের দাবি, নয়াদিল্লিকে নিজেদের শক্তি জাহির করার চেষ্টা করছিল বেজিং। যে কারণে, বেশ কিছুদিন ধরেই অত্য়ন্ত ঠান্ডা মাথায় সুপরিকল্পিতভাবে এই হামলার ছক করা হয়।
আরও পড়ুন: চিনের দাদাগিরি সহ্য করছে তাইওয়ানও, ভারতীয় সেনাকে প্রকাশ্যে সমর্থন এবার তাই মিডিয়ার
যদিও চিনের এই পরিকল্পনা ঠিকমতো কাজ করেনি, বরং বুমেরাং হয়ে বেজিং প্রশাসনের কাছে ফিরে এসেছে, মার্কিন রিপোর্ট এমনটাই জানাচ্ছে। গালওয়ান হামলার ফলে, ভারত জুড়ে চিন-বিরোধী হাওয়া উঠেছে। যারফলে ভারতের মত বিশাল বাজারে চিনা বিনিয়োগ প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টের দাবি, চিনের উদ্দেশ্য ছিল ভবিষ্যতে যে কোনও দরাদরির সময় ভারতকে বাধ্য করা তাদের শর্তে রাজি হতে। যেমন, বিতর্কিত এলাকা ইস্যু। কিন্তু, বাস্তবে ঘটেছে ঠিক তার বিপরীত। তবে ভারতীয় সেনার ওপর এই হামলার সিদ্ধান্ত সঙ্গে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কতটা জড়িত ছিলেন তা স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেনি এই রিপোর্ট। তবে গোয়েন্দারা আভাস দিয়েছেন, তিনি এই নির্দেশের কথা জানতেন।