ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধে ঘটে চলেছে একের পর এক মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনা। রুশ সৈন্যদের বিরুদ্ধে মাতাল অবস্থায় স্বামীকে হত্যা করে চার বছরের পুত্রের সামনেই তাঁকে গণধর্ষণ করার অভিযোগ করলেন এক ইউক্রেনীয় মহিলা।
গত একমাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ। আর প্রতিটি যুদ্ধের মতো, এই যুদ্ধ চলাকালীনও অকুস্থল থেকে উঠে আসছে একের পর এক মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনা। এবার এক মর্মান্তিক ও ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানালেন এক ইউক্রেনীয় মহিলা। ব্রিটিশ গণমাধ্যমে তিনি অভিযোগ করেছেন, মাতাল অবস্থায় রুশ সৈন্যরা প্রথমে তাঁর স্বামীকে হত্যা করেছিল। তার কয়েক মিনিটের মধ্য়েই তাঁর চার বছরের ছেলের সামনেই, তাঁকে কয়েক ঘন্টা ধরে গণধর্ষণ করে তারা।
মহিলার সামনেই গুলিবিদ্ধ স্বামী
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই মহিলার বাড়ি ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের কাছেই শেভচেনকভ নামে এক ছোট গ্রামে। গত ৯ মার্চ রাতে, সেই বাড়িতে হানা দিয়েছিল বেহেড মাতার রুশ সেনাদের একটি দল। প্রথমেই ওই মহিলার চোখের সামনেই, তাঁর স্বামী আন্দ্রে'কে তাঁদের বাড়ির সামনের উঠোনে গুলি করে হত্যা করেছিল তারা।
বয়লার রুমে শিশুপুত্র
চোখের সামনে স্বামীকে মরতে দেখে কিছুক্ষণের জন্য চলৎশক্তিহীন হয়ে পড়েছিলেন ওই মহিলা। কিন্তু, তারপরই দেখেছিলেন, কালো পোশাক পরা সৈন্য়রা পরিবারের অন্যান্যদের খুঁজতে বাড়ির ভিতরে ঢুকছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি তাঁর ৪ বছরের শিশুপুত্রকে ঠেলে বয়লার রুমে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁকে বলেছিলেন সেখানে লুকিয়ে থাকতে।
মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে গণধর্ষণ
মহিলা জানিয়েছেন, মাতাল সেনাদের মধ্যে একজন ছিল রুশ কমান্ডার। সে নিজের পরিচয় দিয়েছিল, মিখাইল রোমানভ। নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী, রুশ সৈন্যরা প্রথমে তাঁর গায়ে থুথু দেয়। তারপর, তাঁর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়েছিল। বলেছিল মুখ বন্ধ রাখতে, নাহলে তাঁকেও হত্যা করা হবে। এরপর, বন্দুকের মুখে কয়েক ঘণ্টা ধরে তাঁকে পালা করে গণধর্ষণ করেছিল ওই রুশ সেনারা।
শিশুকেও হত্যার হুমকি
পুরো সময়টা তাঁর শিশুপুত্র বয়লার রুমে বসে কাঁদছিল। শিশুটির কান্না শুনেও, ওই সৈন্যদের মনে কোনও দয়া মায়া হয়নি। তারা তার মায়ের সঙ্গে বর্বরতা চালিয়ে যায়। এমনকী শিশুপুত্রের উপস্থিতি কথা জানতে পেরে তাকেও হত্যা করার হুমকি দিয়েছিল রুশ সেনারা বলে, অভিযোগ করেছেন ওই ইউক্রেনিয় মহিলা।
ফিরে ফিরে এসে ধর্ষণ
কয়েক ঘন্টা ধরে তাকে ধর্ষণ করার পর, ওই রুশ সেনা চলে গেলেও, ২০ মিনিটের মধ্যেই তারা আবার ফিরে এসেছিল। আবার পালা করে ওই মহিলাকে গণধর্ষণ করা হয়। শুধু তাই নয়, সেই রাতে নিয়মিত বিরতিতে রুশ সেনারা তাঁদের বাড়িতে ফিরে ফিরে এসেছে এবং তাঁকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই মহিলা।
বয়লার রুম দিয়ে ঝুঁকির পলায়ন
কিন্তু, তারা এতটাই নেশাগ্রস্ত ছিল, যে একসময় ক্লান্তিতে তারা সেখানেই ঘুমিয়ে পড়ে। ওই অবকাশে অন্ধকার বয়লার রুম দিয়ে ছেলেকে নিয়ে পালিয়েছিলেন ওই মহিলা। নির্যাতিতা বলেছেন, ওই ঘটনার পর তিনি নিরাপদে জীবিত অবস্থায় সেখান থেকে পালাতে পারবেন, তা আশাই করেননি।