কুয়েতের রাস্তায় আপনি যদি গাড়ি চালিয়ে যান, রাস্তায় কোনও মহিলাকে দেখতে পাবেন না। তা দেখে আপনি অবাক হতেই পারেন। এটা অবাক হওয়ারই পালা। কিন্তু জানেন, কুয়েতের মহিলারা কেন রাস্তায় বের হন না। দিনের পর দিন বন্ধ দরজায় জীবন কাটাচ্ছেন। জীবনের মৌলিক অধিকার থেকে তাঁরা আমৃত্যু বঞ্চিত। কারণ, তাঁরা বাইরে বের হলে যৌনদাসীদের বাজারে বিক্রি হয়ে যেতে পারেন। কুয়েতে চার দেওয়ালে বন্দি অনেকেই যৌনদাসী। রাষ্ট্রসংঘের এমন একটি রিপোর্টে বিশ্বজুড়ে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।
না, আইএসের কোনও খিলফৎ শাসনের সময় নয়, মধ্যপ্রাচ্যে ছোট অথচ ধনী দেশ কুয়েত। সেখানেই রমরমিয়ে চলছে যৌনদাসীদের ব্যবসা। কুয়েতের বেশিরভাগ মহিলারা মূলত ঘরের কাজ করেন। বাইরের কাজ বা চাকরি থেকে তাঁরা সব সময়ই বঞ্চিত হয়ে থাকেন। ঘরে থেকেও নিজেদের বিক্রি আটকাতে পারেন না ওই মহিলারা। কারণ ঘরের পুরুষ অনেক সময় তাঁদের বিক্রি করে দেন। এর জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে পাচারচক্র প্রকাশ্যে ব্যবসা করছে। তারা ফেসবুক, ইস্টাগ্রামের মতো জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের ব্যবসা ফেঁদেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় মহিলাদের ছবি দেওয়া থাকে। কিনতে ইচ্ছুক কোনও ব্যক্তির সঙ্গে দর কষাকষি চলে ফোনে। জানা গিয়েছে, এই যৌন কেনা বেচার বেশিরভাগটা হয় অনলাইনে।
আরও পড়ুন 'আজাদি মার্চ'-এ প্রবল চাপে ইমরান খান, দুই দিনের মধ্যে পদত্যাগের হুঁশিয়ারি
যৌনদাসী কেনা বেচার ক্ষেত্রে অ্যাপসও রয়েছে। জানা গিয়েছে, প্রায় ৫৭টি অ্যাপ থেকে এই লেনদেন চলে। গুগল প্লে থেকে এই ধরনের অ্যাপস ডাউন লোড করতেও তেমন অসুবিধা হয় না বলেই জানা গিয়েছে। বিদেশেও যৌনদাসী পাচার হয়। বিদেশ থেকেও আমদানি করা হয় যৌনদাসী। এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আফ্রিকার দেশগুলো থেকে যৌনদাসী নিয়ে আসা হয়। জানা গিয়েছে, মূলত মধ্যপ্রাচ্যে এই যৌনদাসী কেনাবেচা চলে। তবে পশ্চিমি দেশেও মাঝে মাঝে বিক্রি করা হয় যৌনদাসীদের। তাঁদের পাসপোর্ট জমা রাখা হয়। শুধু তাই নয়, এদের কে ফোনের ব্যবহারও করতে দেওয়া হয় না। ঘর থেকে কখনই বের হতে দেওয়া হয় না। দেশ বিদেশের যৌনদাসী বিক্রেতাদের কাছে থাকে। এই বিক্রেতা যৌনদাসী বিক্রি করতে গেলে বলে আফ্রিকার যৌনদাসীরা খুব পরিষ্কার হয়, সব সময় হাসিমুখে থাকে। নেপালিরা সব সময় ছুটি চায়। ভারতীয়রা সব থেকে বেশি নোংরা হয়।
আরও পড়ুন অস্বস্তিতে সরকার, হোয়াটসঅ্যাপের দাবি মে মাসেই জানানো হয়েছিল নজরদারির কথা
কুয়েতে এই ধরনের ঘটনা বহু আগে থেকেই। ২০১৫ সালে মহিলাদের রক্ষা করতে কুয়েত প্রশাসন একটা আইন এনেছে। কিন্তু কুয়েতের বেশিরভাগ মহিলা এই আইন সম্পর্কে কিছু জানেন না। একটি তদন্তে দেখা গিয়েছে জনপ্রিয় অ্যাপের মাধ্যমে সৌদি আরবের হাজার থেকে কয়েক শো মহিলাকে বিক্রি করা হয়েছে। কিছু কিছু মহিলাকে আবার ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম থেকে বিক্রি করা হয়েছে।