আমেরিকার সংবাদমাধ্যম ‘নিউ ইয়র্ক পোস্ট’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২৯ জুন প্রেমিক ড্যানিয়েল মার্শাল ক্রিস্টোফার ‘ডিজে’ উইলিয়ামসের সঙ্গে মেয়ের ‘বিয়ে’র আয়োজন করেছিলেন এমার মা-বাবা অ্যালিনা এবং অ্যারন এডওয়ার্ডস।
সংসার পেতে তিন সন্তানের মা হতে চেয়েছিল ১০ বছরের নাবালিকা। কিন্তু ক্যান্সার সেই সময় দেয়নি তাকে। তবে বিয়ে করার আশা পূর্ণ করেছিলেন ক্যান্সার আক্রান্ত এমা এডওয়ার্ডের বাবা মা। ১০ বছরের এমা মৃত্যুর ১২ দিন আগে বিয়ে করেছিল প্রেমিক ড্যানিয়েল মার্শাল ক্রিস্টোফার ‘ডিজে’ উইলিয়ামসের সঙ্গে।
আমেরিকার সংবাদমাধ্যম ‘নিউ ইয়র্ক পোস্ট’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২৯ জুন প্রেমিক ড্যানিয়েল মার্শাল ক্রিস্টোফার ‘ডিজে’ উইলিয়ামসের সঙ্গে মেয়ের ‘বিয়ে’র আয়োজন করেছিলেন এমার মা-বাবা অ্যালিনা এবং অ্যারন এডওয়ার্ডস। নর্থ ক্যারোলাইনার ওয়ালনাট কোভ এলাকার এই ক্যানসার আক্রান্ত নাবালিকার ইচ্ছাপূরণ করতে এগিয়ে আসেন তাঁদের আত্মীয়রাও।
আইনগত বাধা থাকায় অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের ‘মিথ্যা বিয়ে’র আয়োজন করেছিলেন এমার মা-বাবা। তবে সেই অনুষ্ঠানের জন্য কোনও খামতি রাখেননি এডওয়ার্ডস দম্পতি। ‘বিয়ে’র ১২ দিন পর গত ১১ জুলাই মৃত্যু হয় এমার। তার মা অ্যালিনা বলেন, ‘‘বেশির ভাগ বাচ্চা ডিজ়নিল্যান্ডে যাওয়ার বায়না ধরে। তবে এমা সব সময় বিয়ে করতে চেয়েছিল। তিন সন্তানের মা হওয়ার ইচ্ছেও ছিল তার।’’
এডওয়ার্ডস দম্পতি মেয়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জানিয়েছেন, গত বছরের এপ্রিলে আচমকাই পড়ে যায় এমা। পায়ে চোট লেগেছিল তার। সেই সঙ্গে বমিও করতে শুরু করেছিল। এমার চিকিৎসা শুরু করেন তার মা-বাবা। তবে মেডিক্যাল পরীক্ষায় জানা যায়, সুস্থসবল নাবালিকার রক্ত এবং অস্থিমজ্জায় থাবা বসিয়েছে ক্যানসার। অ্যাকিউট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকোমিয়া (এএলএল)-তে আক্রান্ত এমা।
যদিও, এমার সুস্থতার আশ্বাস দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। জানিয়েছিলেন, শিশু-সহ বয়স্কদের মধ্যে এ ধরনের ক্যানসার বিরল নয়। তবে গত জুনে তাঁরা জানান, এমার হাতে বেশি দিন সময় নেই। আর মাত্র কয়েক দিনের অতিথি সে। অ্যালিনা বলেন, ‘‘চিকিৎসকদের কাছ থেকে এমন কথা শুনব, তা একেবারেই আশা করিনি। আমরা ভেবেছিলাম, অন্য কোনও ভাবে এমার চিকিৎসা করালে তা কাজে লেগে যাবে। তবে কখনও ভাবতে পারিনি যে এমার জন্য কিছুই করতে পারবেন না চিকিৎসকেরা।’’ যাবতীয় চেষ্টা সত্ত্বেও চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, এমার সময় ফুরিয়ে আসছে।
নাবালিকা কন্যার সময় আসন্ন বুঝতে পেরে তার বরাবরের ইচ্ছাপূরণের তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছিলেন এডওয়ার্ডস দম্পতি। তাঁদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন এমার প্রেমিক ডিজের মা। এমা এবং ডিজের বিয়েটি ‘ভুয়ো’ হলেও তাতে একশো জন অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। অ্যালিনা জানিয়েছেন, ২৯ জুন রীতি মেনে ‘বিয়ে’র নানা আচার পালন করেছিলেন এমার বাবা। অনুষ্ঠানে বাইবেল পাঠ করেছিলেন এডওয়ার্ডস পরিবারের এক বন্ধু। জামাই ডিজের প্রশংসায়ও পঞ্চমুখ এমার মা। তবে নাবালিকা কন্যার ‘বিয়ে’র সমস্ত উপহার দান করে দিয়েছেন তাঁরা বলে জানানো হয়েছে পরিবারসূত্রে।