প্রেমের ফাঁদে পা দিলেই যেন সর্বনাশ।
প্রেমিকের বিপদে সবসময় তিনি পাশে থেকেছেন। তাঁর জন্য নাকি আত্মীয়স্বজনের কাছে টাকা ধারও নিয়েছেন। কিন্তু সাত বছর পরে জানতে পারলেন যে, প্রেমিক তাঁকে ভুয়ো পরিচয় দিয়ে রীতিমতো ঠকিয়েছেন। প্রায় ৪ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ নিয়ে এবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন একজন বৃদ্ধা।
ঘটনাটি ঘটেছে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তের খোঁজ শুরু করেছে মালয়েশিয়ার তদন্তকারী সংস্থা বুকিত আমান বাণিজ্যিক অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিসিআইডি)। সংস্থার ডিরেক্টর দাতুক সেরি রামলি মোহাম্মদ ইউসুফ সম্প্রতি এই প্রতারণার মামলাটির কথা প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছেন।
গত ২০১৭ সালের অক্টোবর, ফেসবুকে এক ‘আমেরিকান শিল্পপতি’র সঙ্গে আলাপ হয় মালয়েশিয়ার এই বৃদ্ধার। যুবকের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে ‘ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট’এসেছিল তাঁর কাছে। এরপর তাঁর প্রোফাইল ঘুরে দেখে বৃদ্ধা অ্যাকসেপ্ট করেন। তারপর থেকেই কথাবার্তা শুরু হয়ে যায়। কথায় কথায় বৃদ্ধা জানতে পারেন যে, তাঁর ‘আমেরিকান বন্ধুটি’বড় শিল্পপতি।
জানা গেছে, বিভিন্ন দেশে তাঁর ব্যবসা ছড়িয়ে আছে। সিঙ্গাপুরেই চিকিৎসার সরঞ্জামের ব্যবসা রয়েছে সেই ব্যক্তির। কথায় কথায় বন্ধুত্বও গভীর হয় তাদের। একদিন অনলাইনে প্রেম নিবেদনও করে বসেন সেই ‘শিল্পপতি’। ৬০ বছর বয়সে এসে প্রেমে পড়ে যান সেই বৃদ্ধা। তিনি ‘হ্যাঁ’বলে দেন সেই ‘ফেসবুক ফ্রেন্ড’-কে।
যখন তখন মেসেজ কিছুদিন অন্তর ফোন, ভালই চলছিল প্রেমপর্ব। হঠাৎ একদিন প্রেমিকের একটি মেসেজ পেয়ে নড়েচড়ে বসেন সেই বৃদ্ধা। ‘আমেরিকান প্রেমিক’জানান একটি জায়গায় ট্রান্সপোর্ট ফি দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন। মেসেজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যেন তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৫০০ রিঙ্গিত অর্থাৎ মালয়েশিয়ার মুদ্রা পাঠিয়ে দেন তাঁর প্রেমিকা।
একমাসের প্রেমপর্বে সেই প্রথমবার প্রেমিককে টাকা ধার দেন প্রেমিকা। এইভাবে বছরের পর বছর নানা জায়গায় ‘ব্যবসায়িক সমস্যা’হয়েছে প্রেমিকের। সাহায্যে এগিয়ে গেছেন প্রেমিকা। সবমিলিয়ে, প্রেমিককে ৩০৬ বার অর্থ পাঠিয়েছেন বৃদ্ধা। একই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নয়, তবে আলাদা আলাদা। এইভাবে ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় চার কোটি টাকা ধার দিয়েছেন প্রেমিককে।
কিন্তু তাঁর প্রেমিককে দেখতে ঠিক কেমন? এবারেই হকচকিয়ে যান সেই প্রেমিকা। তিনি তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, তাদের সাত বছরের সম্পর্ক হলেও কেউ কাউকে একবারও চোখের দেখা দেখেননি। ফেসবুক প্রোফাইলে অন্য ছবি ছিল। আর কথাবার্তা যা হত, তা সীমাবদ্ধ ছিল বার্তালাপ এবং শুধু ফোনালাপে। কখনও ভিডিও কলেও কথা বলেননি তারা।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।