
২০২৫ সালের এপ্রিলে চীন একটি শক্তিশালী অস্ত্র পরীক্ষা করেছে। এটি কোনও সাধারণ পারমাণবিক বোমা নয়, টিএনটি-ভিত্তিক বিস্ফোরকও নয়। তবে এটিকে আরও বিপজ্জনক বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ এটি হাইড্রোজেন-ভিত্তিক একটি নতুন ধরনের বিস্ফোরক। এটি বৈজ্ঞানিকভাবে ‘ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রাইড’ বিস্ফোরকের উপর ভিত্তি করে কাজ করে।
ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রাইড উত্তপ্ত হলে হাইড্রোজেন গ্যাস নির্গত করে। এই গ্যাস তৎক্ষণাৎ জ্বলে ওঠে এবং ১,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রার একটি বিশাল লাল আগুনের বলয় তৈরি করে। টিএনটি-র মতো প্রচলিত বোমা বিস্ফোরিত হওয়ার সাথে সাথেই ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু এই হাইড্রোজেন বিস্ফোরণ ২ সেকেন্ড স্থায়ী হয়। এটি টিএনটি-র তুলনায় ১৫ গুণ বেশি সময়। অর্থাৎ এটি অনেক বেশি ভেতরে প্রবেশ করে বাঙ্কার, জ্বালানি ডিপো, জাহাজ, যানবাহন পুড়িয়ে ছাই করে দিতে পারে। দুই সেকেন্ডে ১,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় আশেপাশের সবকিছু পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়ার ক্ষমতা এই বোমার রয়েছে।
এই অস্ত্রটি পারমাণবিক বোমা নয় বলে এটি পারমাণবিক চুক্তি লঙ্ঘন করে না। তবে এর প্রভাব ব্যাপক। বিশেষ করে এটি মিসাইল, ড্রোন, টর্পেডো এবং রাডার সিস্টেম ধ্বংস করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। শহরের বাঙ্কার এলাকা পুড়িয়ে দিতেও এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি প্রচলিত পারমাণবিক বোমার মতো তেজস্ক্রিয় বর্জ্য নির্গত করে না। তবে মানুষের জীবন এবং সামরিক স্থাপনার জন্য এটি বিরাট ক্ষতির কারণ হতে পারে।
সম্প্রতি চীন প্রতি বছর ১৫০ টন উৎপাদন করতে সক্ষম একটি উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করেছে। যদিও এই পদার্থের মূল উদ্দেশ্য ছিল পরিষ্কার শক্তি উৎপাদন, এখন সেই একই প্রযুক্তি অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এটি বড় বড় বোমার চেয়ে আলাদা। এটিকে কম সময়ে বেশি ক্ষতি করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। ডিজিটাল সিস্টেম ধ্বংস করার তাপমাত্রা, ধাতু গলানোর শক্তি, ভয়ের প্রতীক হিসেবে এটিকে তৈরি করা হয়েছে। পারমাণবিক বিস্ফোরণের তুলনায় কম খরচে, সহজে ব্যবহারযোগ্য এবং নিয়মিত ট্র্যাকিং সিস্টেমে ধরা না পড়া এই অস্ত্র বিশ্বকে ভয় দেখাচ্ছে।