এস জয়শঙ্করের এই সফরের গুরুত্ব এ থেকেও বোঝা যায় যে কিছুদিনের মধ্যেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও ভারতীয়দের প্রশংসা করেছেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কখন শেষ হবে এবং কিভাবে তা ঘটবে? রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের সামনে এমন অনেক প্রশ্ন রয়েছে। তবে এই পরিস্থিতিতে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন সবাই। এই যুক্তির পেছনেও অনেক কারণ রয়েছে। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সোমবার অর্থাৎ আজ রাশিয়া যাচ্ছেন। জয়শঙ্করের এই সফর এমন এক সময়ে রাখা হয়েছে, যখন ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার বিরোধ কয়েক মাস ধরে চলছে। এস জয়শঙ্কর রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানা গিয়েছে। জয়শঙ্কর এর আগে গত বছরের জুলাই মাসে রাশিয়া সফর করেছিলেন, এরপর এপ্রিলে লাভরভ ভারত সফর করেছিলেন।
গত কয়েক মাস ধরে পশ্চিমের অনেক দেশ, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপ সত্ত্বেও, ভারত রাশিয়া থেকে তার অপরিশোধিত তেল আমদানি কমানোর পরিবর্তে বাড়িয়েছে। এস জয়শঙ্করের এই সফরের গুরুত্ব এ থেকেও বোঝা যায় যে কিছুদিনের মধ্যেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও ভারতীয়দের প্রশংসা করেছেন। এস জয়শঙ্করের এই সফর নানা দিক থেকে তাই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
এই পরিস্থিতিতে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বেজিংয়ে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাজ শোলজের সঙ্গে বৈঠকে রাশিয়াকে সতর্ক করে বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার ভুল হবে। জার্মান চ্যান্সেলর চিনের সাথে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ভারতের উন্নয়নের গল্পের প্রশংসা করেছেন। পুতিন বলেন, ভারতের মানুষ অত্যন্ত মেধাবী। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মস্কো সফরের ঠিক কয়েকদিন আগে পুতিনের মন্তব্য এসেছে। পুতিন বলেছিলেন যে ভারতের প্রায় ১.৫ বিলিয়ন জনগণ অবশ্যই উন্নয়নের ক্ষেত্রে দ্রুত পথে এগোবে। এর আগেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। দেশের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং স্বাধীন বিদেশ নীতি অনুসরণ করার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন।
তিনি বলেছিলেন যে ভারতের সাথে আমাদের একটি বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে, যা আমাদের মধ্যে কয়েক দশক ধরে বিশ্বাস ও সম্মানের ওপর তৈরি হয়েছে। ভারতের সাথে আমাদের কখনো কোনো বিরোধ ছিল না, আমরা সবসময় একে অপরকে সমর্থন করেছি এবং ভবিষ্যতেও এই সম্পর্ক থাকবে। পুতিন অতীতে যেভাবে ভারতের প্রশংসা করেছেন তাতে একটা বিষয় স্পষ্ট যে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের মাঝেও ভারতের কাছ থেকে তার অনেক আশা রয়েছে। যুদ্ধের বিষয়ে ভারতের অবস্থান শুরু থেকেই স্পষ্ট এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী এর বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। ভারত যেভাবে চাপ ছাড়াই রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করছে, তাতে এই সফরে আরও কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
রাশিয়া সৌদি আরব এবং ইরাককে পেছনে ফেলে অক্টোবরে ভারতে সবচেয়ে বড় তেল সরবরাহকারী হয়ে উঠেছে। অপরিশোধিত তেল সরবরাহের উপর নজরদারিকারী ভর্টেক্সের তথ্য থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। রাশিয়া অক্টোবরে ভারতকে প্রতিদিন ৯৩৫,৫৫৬ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করেছে।
আরও পড়ুন
রুশ হামলার পর কিয়েভের সাড়ে চার লাখ ঘর অন্ধকার, শহরে বন্ধ জল সরবরাহ-খোলা আকাশের নীচে মানুষ
বিশ্ব কি আরও এক যুদ্ধের মুখে? দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তে ১৮০টি যুদ্ধবিমান পাঠালেন কিম জং