ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি: ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে গত ২ বছর ধরে চলা যুদ্ধে আজ (১৩ অক্টোবর) একটি শান্তি চুক্তি হতে পারে। মিশরের শারম-আল-শেখে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ছাড়াও আরও ২০টি দেশের নেতারা অংশ নেবেন। ভারতের পক্ষ থেকে এই বৈঠকে বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং উপস্থিত থাকবেন। এরই মধ্যে হামাস ইজরায়েলের ২০ জন পণবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। উল্লেখ্য, গাজায় হামাসের হাতে এখনও ২৮ জন পণবন্দি রয়েছে, যাদের মধ্যে মাত্র কয়েকজনের বেঁচে থাকার আশা করা হচ্ছে। হামাস ৭ অক্টোবর ইজরায়েলের উপর হামলা চালিয়ে ২৫০ জনকে পণবন্দি করেছিল। এদের মধ্যে ২৮ জন ছাড়া বাকিদের জীবিত বা মৃত অবস্থায় মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
২০ জন পণবন্দিকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে এবার ইজরায়েল হামাসের ২০০০ প্যালেস্তানীয় বন্দিকে মুক্তি দেবে। এই বন্দিদের ট্রাকে করে গাজার নাসের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। অন্যদিকে, হামাস দুই দফায় ২০ জন ইজরায়েলি পণবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে, যাদের রেড ক্রসের দল ইজরায়েলে নিয়ে গেছে।
হামাসের পক্ষ থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, ইজরায়েল তার বেশিরভাগ পণবন্দিকে জীবিত ফেরত পেতে পারত, কিন্তু তাদের নীতির কারণে অনেকেই এখন আর বেঁচে নেই। হামাস যে পণবন্দিদের মুক্তি দিয়েছে, তাদের হাতে হলুদ রঙের রিবন বাঁধা ইজরায়েলি পতাকা ছিল। এই সময় অনেক পণবন্দির চোখে আনন্দের অশ্রু দেখা যায়।
হামাস ৭ অক্টোবর, ২০২৩-এ ইজরায়েলের উপর হামলা চালিয়ে ২৫০ জনকে পণবন্দি করেছিল। এই হামলায় ১২৫০ জনেরও বেশি ইজরায়েলি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছিল। পরের দিনই ইজরায়েল গাজার উপর ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করে। তখন থেকে এখন পর্যন্ত সেখানে ৬৭,০০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, এবং ১.৭০ লক্ষেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
গত ২ বছরে ইজরায়েলি সেনা গাজার ৭৫ শতাংশেরও বেশি বিল্ডিংকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। শহরের চারিদিকে শুধু ধ্বংসাবশেষ আর ধুলোর মেঘ দেখা যায়। রিপোর্ট অনুযায়ী, গাজায় এই মুহূর্তে প্রায় ৫.৪০ কোটি টনেরও বেশি ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে আছে, যা পরিষ্কার করতে ১০ বছরেরও বেশি সময় লাগবে।
রাষ্ট্রসঙ্ঘের (UN) একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, গত দুই বছরে গাজায় হওয়া ধ্বংসযজ্ঞের কারণে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪.৫ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সেখানকার ৯০%-এরও বেশি হাসপাতাল এবং বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস হয়ে গেছে। এর সাথে ১৯ লক্ষ মানুষ সম্পূর্ণ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। গাজার মোট জনসংখ্যা প্রায় ২৩ লক্ষ, যার মধ্যে ৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষের শিকার।