
নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশব্যাপী ঘটে যাওয়া ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হাসিনাকে দোষারোপ করেছে। বুধবার রাত থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে জনতা শেখ হাসিনার সমর্থকদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালাতে থাকে। সাবেক সংসদ সদস্য, মন্ত্রিসভার সদস্য এবং শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লিগের নেতাদের বেশ কয়েকটি স্থাপনায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলছে, বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য নিয়মিত শেখ হাসিনার উস্কানিমূলক বক্তব্যের কারণে বুধবারের হামলা হয়েছে।শেখ হাসিনা ভারত থেকে তার সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার এক ঘণ্টা আগে বিক্ষোভকারীরা তার বাসভবনে হামলা শুরু করে। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র নেতৃত্বাধীন আন্দোলনে ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটলে শেখ হাসিনা ভারতের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন।
'আর কোনো হামলা হবে না' এদিকে শুক্রবার সকালে ইউনূসের প্রেস অফিস থেকে এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতি দিয়ে এ ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করা হয়। শুক্রবার রাতে ড. ইউনূসকে উদ্ধৃত করে আরেকটি বিবৃতিতে বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন নেতা 'অবিলম্বে পূর্ণ আইন-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং শেখ হাসিনার পরিবার ও তাদের সমর্থকদের সম্পত্তির ওপর আর কোনো হামলা হবে না তা নিশ্চিত করতে সব নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ১৯৭১ সালে যে ভবন থেকে রহমান পাকিস্তানের কাছ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন, সেই ভবনে হামলার ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় পর এই বিবৃতি দেওয়া হলো।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছে পুলিশ। বুধবার রাতে হামলার পর শেখ হাসিনার সমালোচক ও ছাত্রনেতারা দিনভর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চালান। তারা রহমানের বাড়ি অভিমুখে বুলডোজার মিছিল করার ঘোষণা দেয়, যা শেখ হাসিনা জাদুঘরে পরিণত করেছিলেন। বিক্ষোভকারীরা যখন ভবনে ঢুকে পড়ে, তখন পুলিশ সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল। পরে একদল সেনা তাদের থামানোর চেষ্টা করলেও পরে তারা চলে যায়।
ভারতের কঠোর অবস্থান ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সহায়তাকারী ভারত বুধবার এক বিবৃতিতে তারেক রহমানের বাসভবন ধ্বংসের নিন্দা জানিয়ে এই স্থানটিকে 'বীরত্বপূর্ণ প্রতিরোধের' প্রতীক হিসেবে অভিহিত করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, 'যারা বাঙালির আত্মপরিচয় ও গর্বকে লালন করে এমন স্বাধীনতা সংগ্রামকে মূল্য দেয় তারা বাংলাদেশের জাতীয় চেতনায় এই বাসস্থানের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন। এই বর্বরতার তীব্র নিন্দা জানানো উচিত। (এপি)