Earth's Safe Zone: পৃথিবী কি ভবিষ্যতে মানুষ-সহ সব ধরনের প্রাণীর বসবাসের উপযুক্ত জায়গা হিসেবে থাকবে? এ বিষয়ে আশঙ্কা বাড়িয়ে দিল এক গবেষণা। জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা না নিলে দ্রুত সারা বিশ্বই বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে উঠতে পারে।
মানুষের কার্যকলাপের জন্য বিপদে সারা বিশ্ব, এখনই নিতে হবে ব্যবস্থা
বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ছে পৃথিবী
মানুষের নানা কার্যকলাপের জন্য পৃথিবীর মোট জমির ৬০ শতাংশই এখন আর নিরাপদ নয়। বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এক গবেষণায় এমনই জানানো হয়েছে। এর ফলে শুধু মানুষেরই বিপদ ঘনিয়ে আসছে না, অন্যান্য প্রাণীদেরও চরম বিপদ। অবিলম্বে যদি বিশ্বকে বাঁচানোর জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে সব প্রাণীই নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে। এই আশঙ্কার কথাই জানিয়েছে গবেষণা।
DID YOU KNOW ?
সারা বিশ্বের বিপদ
বিশ্বের প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি হচ্ছে। এর ফলে সমগ্র জীবজগতের বিপদ।
26
কৃষিকাজ, বিদ্যুৎ উৎপাদনের মতো কার্যকলাপের ফলেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বাস্তুতন্ত্র
মানুষই শেষ করে দিচ্ছে পৃথিবী
সায়েন্স ডেইলি পত্রিকায় পৃথিবীর বর্তমান অবস্থা নিয়ে গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণায় জানানো হয়েছে, কৃষিকাজ, বিদ্যুৎ উৎপাদনের মতো কার্যকলাপ চালিয়ে যাওয়ার ফলে পৃথিবীর পরিবেশ বদলে গিয়েছে। এখন পৃথিবীর বেশিরভাগ জায়গাই নিরাপদ নয়। মানুষের জন্যই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এই গ্রহ। মানুষের ক্ষতিকর কার্যকলাপ বন্ধ না করা হলে বিশ্ব আর কোনও প্রাণীরই বসবাসের উপযুক্ত জায়গা হিসেবে থাকবে না।
৬০
সারা বিশ্বের ৬০ শতাংশ জমিই জীবজগতের পক্ষে বিপজ্জনক
বিশ্বের বেশিরভাগ অঞ্চলেই বসবাস করা এখন অত্যন্ত বিপজ্জনক। মানুষের কার্যকলাপের জন্যই এরকম হয়েছে।
36
পরিবেশের দিক থেকে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় ইউরোপ, এশিয়া ও উত্তর আমেরিকা
তিন মহাদেশের বিপদ
গবেষণায় জানা গিয়েছে, ইউরোপ, এশিয়া ও উত্তর আমেরিকা মহাদেশের বিপদ সবচেয়ে বেশি। এই তিন মহাদেশে শিল্পায়ন, পরিকাঠামো তৈরি, মানুষের বসবাস, আহারের জন্য নানা কার্যকলাপ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেসব করতে গিয়ে পরিবেশ ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। এখনই এই ধরনের ক্ষতিকর কার্যকলাপ বন্ধ না করলে বিশ্বের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। তখন আর এই তিন মহাদেশে কারও পক্ষেই বাস করা সম্ভব হবে না।
জীবজগতের পক্ষে ক্রমশঃ বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে বিশ্বের বেশিরভাগ অঞ্চল
জীবজগতের সমূহ বিপদ
গবেষকরা জানিয়েছেন, যথেচ্ছ গাছ কাটা, যেখানে খুশি কৃষিকাজ করা, বাস্তুতন্ত্রের তোয়াক্কা না করে শহর গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা প্রকৃতির স্বাভাবিক প্রক্রিয়া নষ্ট করে দিচ্ছে। প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পৃথিবীকে নিরাপদ রাখতে হলে ভারসাম্য বজায় রাখা দরকার। কিন্তু মানুষের কার্যকলাপের ফলে সেই ভারসাম্যই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মানুষের কার্যকলাপের জন্যই সারা বিশ্বের জীবজগতের বিপদ ঘনিয়ে আসছে।
56
বিশ্বজুড়ে মানুষের ক্ষতিকর কার্যকলাপের ফলে জীবজগতের অখণ্ডতা বজায় থাকছে না
জীবজগতের অখণ্ডতা কী?
জীবজগতের অখণ্ডতা অর্থ হল, এমন এক অবস্থা যেখানে পৃথিবীতে গাছপালা ও প্রকৃতি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় রাখতে পারবে। প্রাণীজগতের জন্য গাছপালা অত্যন্ত জরুরি। গাছ সূর্যের আলো কাজে লাগিয়ে কার্বন ডাই অক্সাইড ও জলের সাহায্যে সালোকসংশ্লেষে সাহায্য করে। এর মাধ্যমে পরিবেশে কার্বন, জল ও নাইট্রোজেনের ভারসাম্য বজায় থাকে। কিন্তু মানুষের কার্যকলাপের জন্য এই ভারসাম্য নষ্ট করে দিচ্ছে।
66
১৬০০ শতাব্দী থেকেই প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট হয়ে চলেছে, এখন বিপদ বেড়েছে
কয়েক শতাব্দী ধরে চলছে পরিবেশ ধ্বংস
গবেষকরা জানিয়েছেন, ১৬০০ শতকের শুরু থেকেই ইউরোপ, এশিয়া ও উত্তর আমেরিকায় পরিবেশ ধ্বংসের কার্যকলাপ শুরু হয়েছে। ১৯০০ শতকের মধ্যেই বিশ্বের ৩৭ শতাংশ জমি অনিরাপদ হয়ে পড়ে। এর মধ্যে ১৪ শতাংশ অঞ্চলে ঝুঁকি বেশি ছিল। এখন বিশ্বের ৬০ শতাংশ জমিই নিরাপদ নয়। এর মধ্যে ৩৮ শতাংশ অঞ্চলে ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। গাছ কাটা, ঘাস জমিতে চাষাবাদ শুরু করা, জলাশয় বুজিয়ে দেওয়ার মতো কারণগুলির জন্যই প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।