
ইরান-ইজরায়েল সংঘাত সপ্তাহ পার করতে চলছে। ইজরায়েলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ইরানও একের পর এক হামলা চালাচ্ছে। দুই দেশেরই প্রচুর পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে। এই অবস্থায় কিছুটা হলেও পিছিয়ে রয়েছে ইরান। ইরানের সর্বেসর্বা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই কোথায় রয়েছে তা এখন আর স্পষ্ট নয়। বিশেষজ্ঞদের অনুমান এই তিনি লুকিয়ে রয়েছে ব্যাঙ্কারে। আর সেখান বসেই তিনি নাকি তাঁর পরবর্তী উত্তরসুরী খোঁজার কাজ শুরু করেছে।
আমেরিকার সংবাদ মাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই ইতিমধ্যেই তিনজনের নাম বেছেছেন, যাঁরা তাঁর উত্তরসূরি। কিন্তু সেই তালিকায় নিজের ছেলেকে রাখেননি। খেমেনেই তাঁর উত্তরসুরী হিসেবে তিন জন ধর্মীয় নেতার নাম চূড়ান্ত করেছেনয যুদ্ধ পরিস্থিতিতে খামেনেই নিহত হলেই তাদের মধ্যে থেকে কেউ একজন ইরানের দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নেবেন। কিন্তু খামেনেই যুদ্ধের কারণে নিজে যেমন আত্মগোপন করে রয়েছেন, তেমনই তাঁর উত্তরসূরিদের নামও আপাতত গোপন রাখতে চাইছেন। খামেনেই -এর এই পদক্ষেপ থেকে স্পষ্ট সিয়াপন্থী ইরান আপাতত যুদ্ধে ইতিটানার কোনও পরিকল্পনা করছে না।
গত তিন দশক ধরেই ইরানের শাসনভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন ধর্মগুরু ৮৬ বছরের আয়াতোল্লা আলি খামেনেই। বর্তমানে তিনি রয়েছেন গোপন ডেরায়। তাঁর হদিশ তিনি কাউকে দিতে নারাজ। আর সেই কারণে যোগাযোগের জন্য বৈদ্যুতিন কোনও মাধ্যম তিনি ব্যবহার করতে চাইছেন না। বিশ্বস্ত সহচরদের মাধ্যমেই বাকিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। ইরানের সরকারি আধিকারিকদেরও গোপন ডেরা থেকেই সহচরদের মারফত খবর পাঠাচ্ছেন আর প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিচ্ছেন।
খামেনেইর দ্বিতীয় পুত্র মোজতবা ইরানের অন্যতম ধর্মীয় নেতা। তিনি ইরানের ফৌজের এলিট ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ড বাহিনীর অত্যন্ত ঘনিষ্ট। অনেকেই দাবি করছেন ৫৬ বছরের এই নেতাই ইরানের এই শক্তিশালী বাহিনীর দায়িত্বে রয়েছে। শিয়া মুসলিমদের একাধিক পদেও রয়েছেন তিনি। সরকার ও ধর্মীর প্রতিষ্ঠানগুলিতেও তাঁর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। সূত্রের খবর খামেনেইর মনোনীত তিন সম্ভাব্য উত্তরসূরির তালিকায় তাঁর নাম নেই।
খামেনেই-র উত্তরসূরি হিসেবে যে তিন নেতার নাম চর্চায় এসেছে তাঁরা হলেন আলিরেজা আরাফি। তিনি খামেনেই-র ডানহাত। ইরানের একাধিক ধর্মীয় ও প্রশাসনিক পদে রয়েছেন তিনি। তাঁর নির্দেশেই জামকরন মসজিদের চূড়ায় লাল পতাকা উড়িয়ে জেরুজালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল ইরান।
দ্বিতীয় নাম হিসেবে উঠে আসছে আসগর হেজাজির নামও। আয়াতোল্লার রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিষয়ক সমস্ত পদে রয়েছেন তিনি। গোয়েন্দা ও গুপ্তচর সংস্থা পরিচালনার ভার রয়েছে তাঁর হাতে।
তৃতীয় নাম হিসেবে উঠে এসেছে মহম্মদ গোলপায়েগানির নাম। খামেনেইর দফতরের চিফ অব স্টাফ। ইরান সরকারের প্রশাসনিক দফতরের দায়িত্ব তাঁর ওপর।
তবে এই তিন জনের নাম কিন্তু ঘোষণা করেনি খামেনেই।