
১,২৫০ বছরের ধারাবাহিকতা ভেঙে দিল জাপানের ফুমিও কিশিদা-শাসিত সরকার। হনশু দ্বীপে পুরুষদের নগ্ন উৎসব ‘হাদাকা মাতসুরি’-তে এবার সামিল হওয়ার অধিকার পেলেন মহিলারাও। প্রায় সাড়ে বারোশ বছর ধরে চলে আসা ওই উৎসব এতদিন শুধুমাত্র দূর থেকেই দেখতেন জাপানের মহিলারা। দীর্ঘদিন ধরেই এতে অংশ নেওয়ার জন্য দাবি জানিয়ে আসছিলেন তাঁরা। এতদিন ধরে তাঁদের কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে, সেই একগুঁয়ে ট্র্যাডিশন ভেঙে এ বছর থেকে মেয়েদেরও 'নগ্ন' পুরুষ উৎসবে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
-
প্রত্যেক বছর ফেব্রুয়ারি মাসের তৃতীয় শনিবার হনশু দ্বীপে পালিত হয় 'হাদাকা মাতসুরি' (Hadaka Matsuri) উৎসব। সূর্যোদয়ের দেশে এই উৎসব 'নগ্ন পুরুষ উৎসব' নামেই পরিচিত। সাইদাইজি কানোনিন টেম্পলে পালিত হয় এই উৎসব। ওই মন্দিরে নগ্ন হয়ে হাজির হন প্রায় ১০ হাজার পুরুষ। তাঁদের সবার লক্ষ্য থাকে কাঠের শিঙি পাওয়া। ওই কাঠের শিঙি প্রাপ্তিকে জীবনের সমৃদ্ধি হিসাবেই মনে করেন স্থানীয়রা। সবাই অবশ্য যে শিঙি পান তা নন। মন্দির যাজকের ছুড়ে দেওয়া শিঙি পেতে কার্যত হুড়োহুড়ি পড়ে যায় সকলের মধ্যে। এর জন্য প্রথাগতভাবে লড়াইতেও মেতে ওঠেন অংশগ্রহণকারী পুরুষরা।
-
এই উৎসবে অংশ নিলেও মহিলাদের জন্য রাখা হয়েছে একাধিক শর্ত। মাত্র ৪০ জন মহিলা এবছর ওই উৎসবে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছেন। যাঁরা অনুমতি পেয়েছেন তাদের নাওইজাসা প্রথা মেনে পোশাকে আচ্ছাদিত বাঁশ নিয়ে প্রবেশ করতে হবে তাঁদের। শর্তগুলির মধ্যে অন্যতম হলো, কোনও মহিলা সম্পূর্ণভাবে বিবস্ত্র হতে পারবেন না এবং পুরুষদের কাছ থেকে দূরে দূরে থাকতে হবে তাঁদের।
-
মহিলাদের তরফ থেকে বহু আবেদন পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফুমিও কিশিদার সরকার। ফসলের প্রাচুর্য, সমৃদ্ধি ও উর্বরতার জন্যই মূলত পালন করা হয় এই 'হাদাকা মাতসুরি' উৎসব। তবেম নামে ‘নগ্ন’ হলেও একেবারে সুতোবিহীন হন না অংশগ্রহণকারী পুরুষরা। তাঁদের শরীরে থাকে নামমাত্র পোশাক। পায়ে টাবি নামের সাদা মোজা ও ফানডোশি নামের কটিবস্ত্র পরে থাকেন তাঁরা।