হাকোডেট ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষক তাকাশি ফুজিওকা বলেছেন, তিনি আগেও এই ধরনের ঘটনার কথা শুনেছেন। কিন্তু এই প্রথম এমন ঘটনা প্রত্যেক্ষ করলেন।
মর্মান্তিক ছবি জাপানের সমুদ্র সৈকতে। পা ফেলা যাচ্ছে না। কাতারে কাতারে পড়ে রয়েছে মাছের দেহ। সেই ভয়ঙ্কর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। উত্তর জাপানের একটি সমুদ্র সৈকতে সার্ডিন ও ম্যাকরেল সহ কয়েক হাজার টন মরা মাছ ভেসে আছে। যা দেখে সেখানের প্রশাসনিক কর্তারা রীতিমত অবাক হয়ে গেছেন। মেট্রোর মতে মাছগুলি বৃহস্পতিবার জাপানের উত্তরের প্রধান দ্বীপ হোক্কাইডোর হাকোদাতে উপকূলে ভেসে গেছে। প্রায় আধ মাইস বিস্তৃত সমুদ্র সৈকর যেন মরা মাছের কবরস্থানে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয়রা সেই মাছ সংগ্রহ করতে শুরু করেছিল। অনেকে আবার সেই মাছ বিক্রিও করতে শুরু করেছিল। কিন্তু প্রশাসন সেই মাছ সংগ্রহ ও বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। স্থানীয়দের আপাতত মাছ না খাওয়ার আবেদন জানিয়েছে। তবে কী কারণে এই রহস্যময় ঘটনা ঘটেছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। গোটা বিষয় খতিয়ে দেখছে প্রশাসন। অনেকেই মনে করছে ফুকুশিমা পারমাণিবিক কেন্দ্র থেকে শোধিত তেজস্ক্রিয় জল নির্গত হয়ে সমুদ্রের জলে মিশেছে। আর দূষিত করেছে সমুদ্রের জলকে। সেই কারণে হাজার হাজার মাছের মৃত্যু। তবে এখনও পর্যন্ত প্রশাসন আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।
জাপান টুডে এই বিষয়ে একটি রিপোর্ট করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, হাকোডেট ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষক তাকাশি ফুজিওকা বলেছেন, তিনি আগেও এই ধরনের ঘটনার কথা শুনেছেন। কিন্তু এই প্রথম এমন ঘটনা প্রত্যেক্ষ করলেন। ফুজিওকা বলেছেন, এটির সম্ভাব্য কারণ হতে পারে মাছের দলটিকে একটি বড় মাছ তাড়া করেছে। তাতেই এই মাছের দল ক্লান্ত হয়ে যায়। তারপর একটি বড় ঢেউয়ে ভেসে গিয়েছিল। কোনও কারণে মাছের দলটি একটি ঠান্ডা জলের স্রোতের মধ্যে প্রবেশ করে। ক্লান্ত অবসন্ন মাছের দল ঠান্ডা জলের মধ্যে প্রবেশ করাতেই মৃত্যু হয়েছে। তারপর সমুদ্রের ঢেউএ ভাসতে ভাসতে সেগুলি উপকূলে চলে আছে। কিন্তু এই ঘটনাই ঘটেছে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
এই বছরের অক্টোবরে, জাপান বিকল ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্র থেকে বর্জ্য জল দ্বিতীয়বারের জন্য ছাড়ে জাপান। চিন ও বেশ কয়েকটি দেশে জাপানের এই আচরণে অত্যান্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এর আগে জাপান ২০১১ সালে ১.৩৪ মিলিয়ন টন বর্জ্য প্রশাস্ত মহাসাগরের জলে ফেলে দিয়েছিল। ২০১১ সালে সুনামির কারণে ফুকুসিমা বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।