আইপিএলে হাড্ডাহাড্ডি ম্য়াচে চেন্নাই সুপার কিংসকে ১০ রানে হারাল কেকেআর। প্রথমে ব্যাট করে ১৬৭ রান করে কলকাতা। সর্বাধিক ৮১ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন রাহুল ত্রিপাঠী। জবাবে সিএসকের ইনিংস শেষ হয় ১৫৭ রানে। এদিন টসে জিতে ব্য়াটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন কেকেআর অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক। ওপেনিংয়ে চমক দিয়ে শুভমান গিলের সঙ্গে এদিন নামেন রাহুল ত্রিপাঠী। শুরুটা দুরন্ত করেন শুভমান কেকেআরের নতুন ওপেনিং জুটি। কিন্তু ওপেনিং পার্টনারশিপ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি নাইটদের। পঞ্চম ওভারে শার্দুল ঠাকুরের বলে ১১ রান করে আউট হন শুভমান গিল। ৩৭ রানে প্রথম উইকেট পড়ে কেকেআরেরে। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে শেষে কেকেআরের স্কোর দাঁড়ায় ৫২ রানে ১ উইকেট। পাওয়ার প্লের শেষে রানের গতিবেগ আরও বাড়ান রাহু ত্রিপাঠী। তাকে যোগ্য সঙ্গত দেওয়ার চেষ্টা করেন নীতিশ রানা। কিন্তু নবম ওভারে করণ শর্মার বলে আউট রানা। মাত্র ৯ রান করেন তিনি। এরপর দ্রুত রান তোলার জন্য নামেন সুনীল নারিন। অপরদিকে দুরন্ত ইনিংস খেলে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করে পেলেন রাহুল ত্রিপাঠী। ১০ ওভার শেষে নাইটদের স্কোর দাঁড়ায় ৯৩ রানে ২ উইকেট।
১১ তম ওভারে করণ শর্মার বলে আউট হন নারিন। ১৭ রান করেন তিনি। এরপর নামেন ইয়ন মর্গ্যান। রাহুল ত্রিপাঠীর সঙ্গে তিনি এগিয়ে নিয়ে যান কেকেআরের ইনিংস। ১৪ তম ওভারে চতুর্থ উইকেট পড়ে কেকেআরের। স্যাম কুরানের বলে আউট হন ইয়ন মর্গ্যান। তিনি করেন ৭ রান। ব্যাট হাতে এদিনও নিরাশ করেন আন্দ্রে রাসেল। ১৬ তম ওভারে শার্দুল ঠাকুরের বলে মাত্র ২ রান করে আউট হন রাসেল। ১৬ ওভার শেষে কেকেআরের স্কোর দাঁড়ায় ১৩৩ রানে ৫ উইকেট। ১৭ তম ওভারে শেষ হয় রাহুল ত্রিপাঠীর ইনিংস। ৫১ বলে ৮১ রান করে ডোয়েইন ব্রাভোর বলে আউট হন তিনি। ১৮ তম ওভারে কিছুটা আক্রমণাত্বক রূপ নেন প্যাট কামিন্স। শার্দুল ঠাকুরের বলে একটি ৪ ও একটি ৬ মারেন তিনি। ওভার শেষে স্কোর দাঁড়ায় ১৫৪ রানে ৬ উইকেট। ১৯ তম ওভারে স্যাম কুরানের বলে দীনেশ কার্তিক আউট হন ১২ রান করে। শেষ ওভারে আরও দুটি উইকেট পড়ে কেকেআরের। ব্রাভোর বলে নাগোরকোটি ও শিবম মাভি। শেষ বলে রান আউট হন বরুণ চক্রবর্তী। ২০ ওভার শেষে অলআউট হয়ে যায় কেকেআর। স্কোর দাঁড়ায় ১৬৭ রান।
১৬৮ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল করেন সিএসকের দুই ওপেনার ফাফ ডুপ্লেসি ও শেন ওয়াটসন। দ্রুত গতিতে রান তোলাও শুরু করেন তারা। কিন্তু এদিন বড় রানের ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হন প্রতিযোগিতায় দুরন্ত ফর্মে থাকা ফাফ ডুপ্লেসি। চতুর্থ ওভারে শিবম মাভির বলে আউট হন তিনি। ৩০ রানে প্রথম উইকেট পড়ে সিএসকের। ১৭ রান করে আউট হন ডুপ্লেসি। এরপর ক্রিজে আসেন অম্বাতি রায়ডু। অপরদিকে থেকে ফর্ম ফিরে পেয়ে নিজের পুরোন ছন্দে ব্যাট শুরু করেন অজি তারকা শেন ওয়াটসন। একের পর এক আক্রমণাত্ব শট খেলেন তিনি। পাওয়ার প্লের ৬ ওভার শেষে স্কোর চেন্নাইয়ের স্কোর দাঁড়ায় ৫৪ রানে ১ উইকেট। পাওয়ার প্লের পরও নিজের আক্রমণাত্ব ব্যাটিং চালিয়ে যান ওয়াটসন। তাকে যোগ্য সঙ্গত দেন ফাফ ডুপ্লেসি। কেকেআরের সব বোলাররা মিলেও রায়ডু ও ওয়াটসনের পার্টনারশিপ ভাঙতে পারছিলেন না। নিজের মধ্যে ৫০ রানের পার্টনারশিপও পূরণ করে ফেলেন শেন ওয়াটসন ও অম্বাতি রায়ডু জুটি। ১০ ওভার শেষে চেন্নাই সুপার কিংসের স্কোর দাঁড়ায় ৯০ রানে ১ উইকেট।
১০ ওভারের পরও নিজেদের পার্টনারশিপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন রায়ডু ও ওয়াটসন জুটি। অবশেষে ১৩ তম ওভারে ভাঙে সেই পার্টনারশিপ। নাগোরকোটির বলে ৩০ রান করে আউট হন অম্বাতি রায়ডু। এরপর ক্রিজে আসেন এমএস ধোনি। ১৩ তম ওভারেই নিজের অর্ধশতরানও পূরণ করেন শেন ওয়াটসন। কিন্তু ১৪ তম ওভারের প্রথম বলেই নারিনের শিকার হন ওয়াটসন। ৫০ রান করে আউট হন তিনি। ওয়াটসনের পর ক্রিজে নামেন স্যাম কুরান। এসেই আক্রমণাত্বক শট খেলা শুরু করেন তিনি। কিন্তু ১৭ তম ওভার আরও একটি উইকেট পড়ে সিএসকের। ১১ রান করে আউট ধোনি। ১৭ ওভার শেষে সিএসকের স্কোর দাঁড়ায় ১২৯ রানে ৪ উইকেট। ১৮ ওভারের শুরুতেই স্যাম কুরানকে আউট করেন আন্দ্রে রাসেল। তিনি করেন ১৭ রান। ১৮ তম ওভারে মাত্র ৩ রান দেন রাসেল। ১৯ তম ওভার বল করেন নারিন। আসে মাত্র ১০ রান। শেষ ওভারে সিএসকের জয়ের জন্য দরকার ছিল ২৬ রান। শেষে ওভারে আসে ১৬ রান। ১৫৭ রানে শেষ হয় চেন্নাইয়ের ইনিংস। ১০ রানে ম্যাচ জিতে লিগ টেবিলের তৃতীয় স্থানে পৌছ গেল কলকাতা নাইট রাইডার্স।