প্রথমে দুরন্ত বোলিং। তারপর শুভমান গিল আর ইয়ন মর্গ্যানের দুরন্ত ব্যাটিং। দুইয়ের সৌজন্যে আইপিএল ২০২০-র প্রথম জয় পেল কলকাতা নাইট রাইডার্স। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দরবাদকে ৭ উইকেটে হারাল দীনেশ কার্তিকের দল। প্রথমে ব্যাট করে ১৪২ রান করে হায়দরাবাদে। জবাবে গিল-মর্গ্যান জুটির সৌজন্যে ২ ওভার আগেই ম্যাচ জিতে নেয় কেকেআর।এদিন টসে জিতে ব্য়াটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। গত ম্য়াচের ভুল ত্রুটি শুধরে আঁটোসাটো বোলিং কেন কেকেআর বোলাররা। রক্ষাণত্বক ভঙ্গিতে ব্যাট শুরু করেন হায়দরাবাদের দুই ওপেনার। কিন্তু মুম্বই ম্যাচের স্মৃতি ভুলে হায়দরবাদের বিরুদ্ধে দুরন্ত বোলিং করেন প্যাট কামিন্স। যার ফল স্বরূপ চতুর্থ ওভারে জনি বেয়ারস্টো বোল্ড করেন কামিন্স। ২৪ রানে প্রথম প্রথম উইকেট পড়ে হায়দরাবাদের। বেয়ারস্টো করেন ৫ রান। প্রথম পাওয়ার প্লে-র শেষে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের স্কোর দাঁড়ায় ৬ ওভারে ৪০ রানে এক উইকেট। এরপর কিছুটা ইনিংসের রাশ ধরেন ডেভিড ওয়ার্নার ও মণীশ পাণ্ডে।
সেই পার্টনারশিপ বেশিক্ষণ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি তারা। দশম ওভারে তরুণ বরুণ চক্রবর্তীর বলে আউট হন ডেভিড ওয়ার্নার। তিনি করেন ৩০ বলে ৩৬ রান। ১০ ওভার শেষে সানরাইজার্সের স্কোর দাঁড়ায় ৬১ রানে ২ উইকেট। তারপর ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যান ঋদ্ধিমান সাহা ও মণীশ পাণ্ডে। বেশ কিছু দুরন্ক শট খেলেন মণীশ পাণ্ডে। ১৫ ওভার শেষে হায়দরবাদের স্কোর দাঁড়ায় ৯৯ রানে ২ উইকেট। ১৭ তম ওভারে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেন মণীশ পাণ্ডে। বল খেলেন ৩৫টি। ১৭ ওভার শেষে হায়দরাবাদের স্কোর হয় ১১৮। ১৮ তম ওভারে রাসলের বলে শেষ হয় মণীশ পাণ্ডের ইনিংস। ৫১ রান করে আউট হন তিনি। ১৯ তম ওভারের শেষে এসরএইচের স্কোর দাঁড়ায় ১৩৩ রানে ৩ উইকেট। শেষ ওভারে রান আউট হন ঋদ্ধিমান সাহা। ৩০ রান করেন তিনি। ২০ ওভার শেষে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের স্কোর দাঁড়ায় ১৪২।
১৪৩ রানের টার্গেট তাড়া করতে নামে শুরুটা ভাল হয়নি কেকেআরের। দ্বিতীয় ওভারেই খালিল আহমেদের বলে খাতা না খুলেই আউট হয়ে যান সুনীল নারিন। এরপর ক্রিজে আসেন নীতিশ রানা। এসেই আক্রমণাত্বক ইনিংস খেলা শুরু করেন তিনি। খালিলের এক ওবারে পরপর তিনটি চার মারেন তিনি। অপরদিকে থেকে ঠাণ্ডা মাথায় নিজের ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যান শুভমান গিল। কিন্তু পঞ্চম ওভারে দ্বিতীয় উইকেট পড়ে কেকেআরের। নটরাজনের বলে ১৩ বলে ২৬ করে আউট হন নীতিশ রানা। প্রথম পাওয়ার প্লে অর্থাৎ ৬ ওভার শেষে কেকেআরের স্কোর দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৫২। এরপর ক্রিজে আসেন অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক। কিন্তু সপ্তম ওভারে রশিদ খানের বলে খাতা না খুলে এলবিডব্লু আউট হয়ে প্য়াভেলিয়নে ফেরত যান ডিকে। এরপর ইয়ন মর্গ্যান ও শুভমান গিল মিলে ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে থাকেন কেকেরের ইনিংস। ১০ ওভার শেষে কেকেআরের স্কোর দাঁড়ায় ৭২ রানে ৩ উইকেট।
অপরদিক থেকে নিজের ইনিংস খেলতে থাকেন শুভমান গিল। প্রয়োজন মত আক্রমণাত্বক শটও খেলেন তিনি। ১৩ তম ওভারে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেন তিনি। অপরদিক থেকে তাকে যোগ্য সঙ্গত দেন মর্গ্যান। ১৫ তম ওভারে অর্ধশতরানের পার্টনারশিপ পুরো করেন গিল ও মর্গ্যান। একটি বিশাল ছয়ও মারেন ব্রিটিশ তারকা। ১৫ ওভার শেষে কেকেআরেরে স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ১১৩। ১৫ ওভারের পর জয়ের গন্ধ পেতেই রানের গতিবেগ বাড়ায় কেকেআর। ১৭ ওভার শেষে নাইটদের স্কোর হয় ১৩১ ৩ উইকেটে। ১৮ তম ওভারে একটি বিশাল ছক্কা হাঁকান ইয়ন মর্গ্যান। আর ১৮ তম ওভারের শেষ বলেই খেলা শেষ করে দেন মর্গ্যান। ২ ওভার আগেই সাত উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় কেকেআর। ৭০ রান করে নট আউট থাকেন শুভমান গিল ও ৪২ রান করে নটআউট থাকেন ইয়ন মর্গ্যান। আইপিএলে জয়ে ফিরে খুশি কেকেআর শিবির।