স্বপ্নপূরণ হল না দিল্লির। ফাইনালে একাধিপত্ব বজায় রেখে ম্য়াচ জিতল মুম্বই। ৫ উইকেটে দিল্লি ক্যাপিটালসকে হারিয়ে পঞ্চমবারের জন্য আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করে ১৫৬ রান করে দিল্লি। দলের হয়ে জোড়া হাফ সেঞ্চুরি করেন শ্রেয়স আইয়র ও ঋষভ পন্থ। রানতাড়া করতে নেমে মুম্বইয়ের হয়ে ৬৮ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ৮ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে নেয় মুম্বই। ফাইনালে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়র। কিন্তু শুরুটা ভাল হয়নি দিল্লির। প্রথম ওভারের প্রথম বলেই মার্কাস স্টয়নিসের উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট। এরপর তৃতীয় ওভারে দলের ১৬ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট পড়ে দিল্লির। বোল্টের শিকার হন অজিঙ্কে রাহানে। চতুর্থ ওভারে জয়ন্ত যাদবের বলে আউট হন শিখর ধওয়ান। তিনি করেন ১৫ রান। এরপর দিল্লির ইনিংসের রাশ ধরেন অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়র ও ঋষভ পন্থ। ৬ ওভারের পাওয়ার প্লে শেষে স্কোর দাঁড়ায় ৪১ রানে ৩ উইকেট। অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়র একটু ধীরে খেললেও, অপরদিক থেকে নিজের আক্রমণাত্বক ইনিংস চালিয়ে যান ঋষভ পন্থ। দলের রানের গতিবেগও বাড়ান দুই তারকা ব্যাটসম্যান। নিজেদের অর্ধশতরানের পার্টনারশিপও পূরণ করেন শ্রেয়স-পন্থ জুটি। ১০ ওভার শেষে দিল্লির স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৭৫ রান।
১০ ওভারের পরও পার্টনারশিপ চালিয়ে যান দুই ব্য়াটসম্য়ান। ১৩ ওভার শেষে দিল্লির স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৯৯। ১৫ তম ওভারে চার মেরে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেন ঋষভ পন্থ। কিন্তু একই ওভারে ছক্কা মারতে গিয়ে কুল্টারনাইলের বলে আউট হন ঋষভ পন্থ। ৫৬ রান করেন তিনি। এরপর ক্রিজে আসেন শেমরন হেটমায়ার। ১৬ তম ওভারে আসে ৭ রান। ১৭ তম ওভারে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেন শ্রেয়স আইয়র। একইসঙ্গে ওভারে বুমরাকে দুটি চার মেরে রান রেটেও বাড়ান শ্রেয়স। ১৭ ওভার শেষে দিল্লির স্কোর দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ১৩৬। কিন্তু ১৮ তম ওভারের শুরুতেই হেটমায়ারকে প্যাভেলিয়নে ফেরত পাঠান ট্রেন্ট বোল্ট। হেটমায়ার করেন ৫ রান। ওভার শেষে দিল্লির স্কোর ১৪২ রানে ৫ উইকেট। ১৯ তম ওভারে আঁটোসাটো বোলিং করেন বুমরা। দেন মাত্র ৬ রান। শেষ ওভারের প্রথম বলে কুল্টারনাইলের বলে আউট হন অ্যাক্স প্যাটেল। তিনি করেন ৯ রান। শেষ ওভার শ্রেয়স আইয়র একটি ছক্কা মারলেও বেশি রান আসেনি। শেষ বলে রান আউটও হন রাবাডা। ২০ ওভার শেষে দিল্লির স্কোর দাঁড়ায় ১৫৬ রানে ৭ উইকেট। ৬৫ রান করে অপরাজিত থাকেন শ্রেয়স আইয়র।
১৫৭ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে দুরন্ত শুরু করেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের দুই ক্রিকেটার রোহিত শর্মা ও কুইন্টন ডিকক। একের পর এক আক্রমণাত্বক শট খেলতে থাকেন দুই তারকা ব্যাটসম্যান। ওভার পিছু ১০ রানের বেশি গতিতে রান করতে থাকেন রোহিত শর্মা ও কুইন্টন ডিকক জুটি। কিন্তু পঞ্চম ওভারে প্রথম উইকেট পড়ে মুম্বইয়ের। দলের ৪৫ রানের মাথায় মার্কাস স্টয়নিসের বলে ২০ রান করে আউট হন ডিকক। এরপর ক্রিজে আসেন সূর্যকুমার যাদব। দুজন মিলে এগিয়ে নিয়ে যান মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ইনিংস। সূর্যকুমার যাদব একটু ধীরে খেললেও অপরদিক থেকে নিজের আক্রমণাত্বক ইনিংস চালিয়ে যান রোহিত শর্মা। অর্ধশতরান করার আগেই ২টি বাইন্ডারি ও ৪টি ওভার বাউন্ডারি মারেন হিটম্যান। ১০ ওভার শেষে মুম্বইয়ের স্কোর দাঁড়ায় ১ উইকেটে ৮৮ রান। ১১ তম ওভারে দ্বিতীয় উইকেট পড়ে মুম্বইয়ের। ১৯ রান করে রান আউট হন সূর্যকুমার যাদব। এরপর ক্রিজে আসেন ইশান কিষাণ। অপরদিকে ফাইনালে দুরন্ত ব্যাটিংয়ের সৌজন্যে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ১৫ ওভার শেষে মুম্বইয়ের স্কোর দাঁড়ায় ২ উইকেটে ১২৬ রান।
জয়ের দোড়াগোড়ায় পৌছে গিয়ে রানের গতিবেগ আরও বাড়িয়ে দেয় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। ১৬ তম ওভারে আসে ১১ রান। শেষ ৪ ওভারে মুম্বইয়ের জয়ের জন্য় দরকার ছিল মাত্র ২০ ওভার। ফাইনাল জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু ১৭ তম ওভারে নকিয়ার বলে আউট হন রোহিত শর্মা। মুম্বই অধিনায়ক করেন ৬৮ রান। এরপর ক্রিজে নেমে পরপ দুটি চার মারেন কায়ারন পোলার্ড। ১৭ ওভার শেষে মুম্বই স্কোর দাঁড়ায় ১৪৭ রানে ৩ উইকেট। কিন্তু তার পরের ওভারেই কাগিসো রাবাডার বলে ৯ রান করে আউট হন পোলার্ড। এরপর ক্রিজে আসেন হার্দিক পান্ডিয়া। ১৮ ওভার শেষে মুম্বইয়ের স্কোর ছিল ৪ উইকেটে ১৫৪। ১৯ তম ওভারে আরও একটি উইকেট পড়ে মুম্বইয়ের।নকিয়ার বলে ৩ রান করে আউট হন হার্দিক পান্ডিয়া। ৮ বল বাকি থাকতেই জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় লক্ষ্যে পৌছে যায় মুম্বই। ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতে পঞ্চমবারের জন্য আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স পল্টন।