আইপিএলের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে ৫ উইকেটে হারাল রাজস্থান রয়্যালস। প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ১৫৮ রান করে ডেভিড ওয়ার্নারের দল। সানরাইজার্সের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৪ রান করেন মণীশ পাণ্ডে। রান তাড়া করতে নেমে ক্রমাগত উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় স্টিভ স্মিথের দল। শেষে রাহুল তেওয়াটিয়া ও প্রিয়ম গর্গের অবিশ্বাস্য ইনিংসের কারণে ১ বল বাকি থাকতেই জয় পেয়ে যায় রাজস্থান রয়্যালস দল। এদিন টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। তবে শুরুটা ভাল হয়নি তাদের। ধীরে শুরু করার পাশাপাশি পঞ্চম ওভারে প্রথম উইকেট পড়ে সানরাইজার্সের। কার্তিক ত্যাগির বলে আউট হন ফর্মে থাকা জনি বেয়ারস্টো। ১৬ রান করেন তিনি। এরপর ক্রিজে আসেন মণীশ পাণ্ডে। অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে ইনিংসের রাশ ধরেন তিনি। ধীরে ধীরে ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দ্বিতীয় উইকেটে অর্ধশতরানের পার্টনারশিপ যোগ করেন ওয়ার্নার-পাণ্ডে জুটি। ৭৩ রানের রানের পার্টনারশিপ করার পর আউট হন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের অধিনায়ক ডেভিড ও ওয়ার্নার। জোফ্রা আর্চারের বলে ৩৮ রান করে বোল্ড হন ওয়ার্নার। ১৫ ওভার শেষ সানরাইজার্সের স্কোর দাঁড়ায় ৯৬ রানে ২ উইকেট।
১৫ ওভারের শেষে রানারে গতিবেগ কিছুটা বাড়ান মণীশ পাণ্ডে। অপরদিকে ক্রিজে আসেন কেন উইলিয়ামসন। ১৬ তম ওভারে করেন ১৩ রান। ১৭ তম ওভারে নিজের হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন মণীশ পাণ্ডে। ৪০ বলে ২টি চার ও ৩টি ছয়ের সৌজন্যে হাফ সেঞ্চুরি করেন তিনি। ১৭ ওভার শেষে সানরাইজার্সের স্কোর দাঁড়ায় ১১৭ রানে ২ উইকেট। কিন্তু ১৮ তম ওভারে জয়দেব উনাদকাটের বলে আউট হন মণীশ পাণ্ডে। ৫৪ রান করেন তিনি। শেষের দিকে আক্রমণাত্ব ভঙ্গিতে ব্যাটিং করেন কেন উইলিয়ামসন। ১৯ ওভার শেষে রান দাঁড়ায় ১৪৭ রানে ৩ উইকেট। শেষ ওভারে আসে ১১ রান। ২০ ওভার শেষ বলে ১৫ রান করে রান আউট হন প্রিয়ম গর্গ। ২০ ওভারে সানরইজার্সের স্কোর ১৫৮ রান। রাজস্থান রয়্যালসের টার্গেট ১৫৯ রান।
রান তাড়া করতে শুরুতেই একের পর এক উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় রাজস্থান রয়্যালস। ওপেনিংয়ে নামেন এবারের আইপিএলে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা বেন স্টোকস ও জস বাটললার। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারেই খালিল আহমদের বলে ৫ রান করে আউট হন স্টোকস। ৭ রানে প্রথম উইকেট পড়ার পর, চতুর্থ ওভারে ২৫ রানে দ্বিতীয় উইকেট পড়ে। রান আউট হন স্টিভ স্মিথ। ৫ রান করেন তিনিও। পঞ্চম ওভারে আউট হন জস বাটলার। ১৬ রান করার পর খালিলআহমেদের শিকার হন তিনি। ২৬ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর ইনিংসের রাশ ধরার চেষ্টা করেন রবিন উথাপ্পা ও সঞ্জু স্যামসন। এরপর ধধীরে পার্টনারশিপ গড়ার চেষ্টা করেন সঞ্জু স্যামসন ও রবিন উথাপ্পা। কিন্তু ৩৭ রানেপ পার্টনারশিপ করার পর আউট হন উথাপ্পা। দলের ৬৩ রানের মাথায় রাশিদ খানের বলের শিকার হন তিনি। উথাপ্পা করেন ১৮ রান। ১০ ওভার রাজস্থানের স্কোর দাঁড়ায় ৬৭ রানে উইকেট।
এরপর সঞ্জু স্যামসন ও প্রিয়ম গর্গ ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও, তারা সফল হননি। ১২ তম ওভারে সঞ্জু স্যামসনের শিকার করেন রাশিদ খান। ২৬ রান করে আউট হন সঞ্জু। এরপর ক্রিজে আসেন রাহুল তেওয়াটিয়া। কিছুটা ধৈর্য ধরে ব্যাট করার চেষ্টা করেন তিনি। ১৫ ওভার শেষে রাজস্থানের স্কোর দাঁড়ায় ৯৪ রানে ৫ উইকেট। ওভার পিছু রানরেট বাড়তে থাকায় রানের গতিবেগ কিছুটা বাড়ানোর চেষ্টা করেন তেওয়াটিয়া ও প্রিয়ম গর্গ। ১৭ ওভার শেষে রাজস্থান রয়্যালসের স্কোর দাঁড়ায় ১২৩ রানে ৫ উইকেট। ১৮ তম ওভারেও মারকাটারি ব্যাটিং করেন তেওয়াটিয়া ও গর্গ। আসে ১৪ রান। শেষ ২ ওভারে রাজস্থানের জয়ের জন্য দরকার ছিল ২২ রান। ১৯ তম ওভারে বিধ্বংসী ব্যাট করে ম্যাচ রাজস্থানের হাতের মুঠোর নিয়ে আসে তেওয়াটিয়া ও প্রিয়ম গর্গ। শেষ ওভারে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে ১ বল বাকি থাকতে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলে নেয় রাজস্থান রয়্যালস। ২৬ বলে ৪২ রান করে অপরাজিত থাকেন প্রিয়ম গর্গ ও ২৮ বলে ৪৫ রান করে অপরাজিত থাকেন তেওয়াটিয়া। ষষ্ঠ উইকেটে ৮৫ অবিশ্বাস্য পার্টনারশিপ করে স্টিভ স্মিথের দলকে জয়ের সরণিতে ফেরান দুই তরুণ তারকা।