স্বামীকে গ্রাস করেছে অলসতা, প্রতিবাদে খুন হলেন স্ত্রী

  • রোজগারের জন্য  চাপ দিতেই স্ত্রীকে খুন করলেন অলস স্বামী 
  • ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর থানা এলাকায় 
  •   পিয়ালীর রক্তাক্ত নিথর দেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে তার বাবা 
  • পুলিশে অভিযোগ করতেই দেবব্রতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে 

Ritam Talukder | Published : Feb 6, 2020 1:04 PM IST


রোজগারের জন্য কাজে বেরোতে চাপ দিতেই স্ত্রীকে খুন করলেন অলস স্বামী। ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর থানার অন্তর্গত শুখাআমড়াশোল গ্রামে। মৃতা ওই গৃহবধুর নাম পিয়ালী। জানা গেছে, বুধবার রাতে পিয়ালীকে বেধড়ক মারধর করেছিল দেবব্রত। ধারালো অস্ত্র নিয়ে কোপাতে শুরু করেছিল দেবব্রত। দেবব্রত-র মা বাধা দিতে সে নিজেও ধারালো অস্ত্র জখম হয়েছে। স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করে ফেলে রেখে ফেরার হয়ে গিয়েছিল দেবব্রত। বৃহস্পতিবার গ্রামে এসে পিয়ালীর রক্তাক্ত নিথর দেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে তার বাবা। পুলিশে অভিযোগ করতেই দেবব্রত কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন, গভীর রাতে গ্রামে হাতির হানা, ঘুমন্ত অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ একই পরিবারের তিনজন

ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর থানার অন্তর্গত শুখাআমড়াশোল গ্রামে।  ২০০৮ সালে ওই গ্রামের যুবক দেবব্রত দে এর সঙ্গে ঝাড়খন্ড রাজ্যের পূর্ব সিংভূম জেলার শালদোহা গ্রামের বাসিন্দা বিনয় কুমারের ভোলে-র একমাত্র মেয়ে পিয়ালীর বিয়ে হয়েছিল। দেবব্রত তখন সেই মুহূর্তে তেমন কোন কাজের সাথে যুক্ত না থাকলেও চাকরিরত মায়ের একমাত্র ছেলে ও সচ্ছল সংসার দেখে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন মেয়ের বাবা। ছেলে ব্যবসা করবে এমন প্রতিশ্রুতি পেয়েছিলেন সেই সময়। বিয়ের পরেই অন্য রূপ দেখা যায় দেবব্রত-র। পিয়ালী স্বামীকে অলস রূপে দেখতে পায়। নিজে রোজগার করার কোন লক্ষই তার ছিল না। কিন্তু শাশুড়ির চাকরি থাকার কারণে সংসার চলছিল ঠিকঠাকই। কয়েক বছর হল শাশুড়ি অবসর নিয়েছেন।পেনশনের টাকায় সংসারে সমস্যা আসছে দেখে এবার স্বামীকে নিজের রোজগার করার জন্য চাপ দিতে শুরু করেছিল পিয়ালী। কারণ ইতিমধ্যেই তাদের আট বছরের এক ছেলে, তিন বছরের এক মেয়ে হয়ে গিয়েছিল।

স্বামীকে রোজগার করতে বললেই বেধড়ক মারধর করা হতো পিয়ালী কে। দেবব্রতর মা অবশ্য মারধরের প্রতিবাদ করলেও খুব একটা কাজে আসত না। স্বামীর অত্যাচার চাকুরীজীবি মায়ের একমাত্র সন্তান, সচ্ছল পরিবার, দেখে বিয়ে দিয়েছিল মেয়ের পরিবার। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই স্বামীর অলসতা লক্ষ্য করেছিলেন স্ত্রী। মাঝে মধ্যেই স্বামীকে রোজগার করতে চাপ দিতেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল। শাশুড়ির অবসর নেওয়ার পরে শুধু পেনশনের কথা মাথায় রেখে রোজগারের জন্য চাপ দিতেই স্ত্রীর উপর শুরু হয়েছিল অত্যাচার। শেষমেষ ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করে দিলেন অলস স্বামী। বাধা দিতে গেলে নিজের মাও জখম হয়েছেন। 

আরও পড়ুন, তছনছ হওয়া বাড়িতে মিলল বৃদ্ধের দগ্ধ দেহ, মৃত্যু ঘিরে ঘনাচ্ছে রহস্য়

সূত্রের খবর,  অশান্তি দেখা দিয়েছিল তীব্র গত দু'বছর ধরে।স্বামীর কাছে অত্যাচারিত হয়ে সরস্বতী পুজোর আগে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলো পিয়ালী। পিয়ালির বাপের বাড়ির লোকজন ডেকে নিয়ে কোনভাবে বিষয়টি মিটিয়ে ফেরত পাঠায়। দেবব্রত প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল নিজে কাজের চেষ্টা করছে, আর মারধর করবে না। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে পুনরায় অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাপের বাড়িতে ফোন করেছিল পিয়ালী। এরপরে দেবব্রত এর নামে পুলিশে অভিযোগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পিয়ালির বাবা। তার আগেই বৃহস্পতিবার সকালে পিয়ালির প্রতিবেশীরা তার বাবা মাকে ফোন করে জানিয়ে দেন পিয়ালী কে খুন করা হয়েছে ধারালো অস্ত্র দিয়ে। অভিযোগ পেয়েই পুলিশ গ্রেফতার করেছে গুণধর স্বামীকে।


 

Share this article
click me!