গাড়ির গতি তখন কমপক্ষে ৮০ কিমি। আর সেই গাড়িতে বসেই দেদার মদ্যপান করছিলেন পাঁচ যুবক। ফলে যা হওয়ার, তাই হয়েছে। নিউটাউনে দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে তেমনই অনুমান পুলিশের। মঙ্গলবার বেলার দিকে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। গাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি মদের বোতলও।
কুশল জাওয়ার, নিশিদ জাওয়ার, মায়াঙ্ক জয়সওয়াল, মোহিত জৈন ও সর্বজিৎ সিং। সোমবার রাতে এক সঙ্গে পড়াশোনার করার জন্য জড়ো হয়েছিলেন পাঁচ বন্ধু। পুলিশ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ভোরে বিলাসবহুল গাড়িতে চেপে যখন তাঁরা নারকেলবাগানের দিক থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে দিকে যাচ্ছিলেন, তখন নিউটাউনের ইকো পার্কের কাছে ঘটে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। ইউ টার্ন নেওয়ার সময়ে মেট্রোর নির্মীয়মাণ পিলারে ধাক্কা মেরে উল্টে যায় গাড়িটি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি থেকে পাঁচ আরোহীকে বের করার চেষ্টা করেন পুলিশকর্মীরা। কিন্তু গাড়িটি এতটাই দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছিল যে, কাউকেই বের করা সম্ভব হয়নি। শেষপর্যন্ত গ্যাস কাটার দিয়ে গাড়িটি কেটে ওই পাঁচ যুবককে বের করে আনা হয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান কুশল জাওয়ার, নিশিদ জাওয়ার ও মায়াঙ্ক জয়সওয়াল। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি মোহিত জৈন ও সর্বজিৎ সিং।
কিন্তু কীভাবে ঘটল এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা? পুলিশ জানিয়েছে, রাতের শহরে ফাঁকা রাস্তায় বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন মোহিত। শুধু তাই নয়, গাড়িতে বসেই মদ্যপান করছিলেন পাঁচ বন্ধু। ইকো পার্কে পৌঁছানো আগেও একবার অল্পের জন্য দুর্ঘটনার হাত থেকে রেহাই পান তাঁরা। তখন কোনওরকমে ব্রেক কষে পরিস্থিতি সামাল দেন মোহিত। কিন্তু, ইকো পার্কে কাছে ইউ টার্ন নিতে গিয়ে আর গাড়ির নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি তিনি। নিহত কুশল জাওয়ারের বাড়ি সল্টেলেকে আর বাকি চারজন কলকাতার কাঁকুড়গাছি এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে।
কয়েক মাসে আগে কলকাতার শেক্সপিয়ার সরণী থানা এলাকায় বেপরোয়া গতির বলি হন দু'জন পথচারী। গভীর রাতে শেক্সপিয়ার সরণী-লাউডন স্ট্রিটের সংযোগস্থলে ট্রাফিক সিগন্যাল ভেঙে একটি জাগুয়ার গাড়ি সজোরে ধাক্কা মারে একটি মার্সিডিজ গাড়িকে। সংঘর্ষে তীব্রতা এতটাই ছিল যে, দুর্ঘটনার পর গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারান জাগুয়ারের চালক। গাড়ি ফের দু'জন পথচারীকে ধাক্কা মারে। প্রাণ হারান বাংলাদেশের দুই নাগরিক। ঘটনায় শহরের জনপ্রিয় একটি রেস্তোরাঁ চেনের মালিকের ছেলেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।