দুই মামলায় দু' বার মৃত্যুদণ্ড, হাইকোর্টে ফের বাঁচল পচাত্তর বছরের আনিসুর

  • মাদক পাচারে অভিযুক্ত আনিসুর রহমান
  • বর্তমানে দমদম সেন্ট্রাল জেলে বন্দি সে
  • আনিসুরকে ফাঁসির সাজা দেয় বারাসত আদালত
  • ফাঁসির সাজা রদ করল কলকাতা হাইকোর্ট

debamoy ghosh | Published : Nov 27, 2019 6:10 AM IST

একই ব্যক্তি। কয়েক বছরের ব্যবধানে দু'টি পৃথক মামলায় দু' বার মৃত্য়ুদণ্ড হল তার। দু'টি ক্ষেত্রেই অভিযুক্তের ফাঁসির সাজা রদ করে দিল হাইকোর্ট। দমদম সেন্ট্রাল জেলে বন্দি পচাত্তর বছরের আনিসুর রহমানের ক্ষেত্রে এমনটাই ঘটেছে। 

আদালত সূত্রে খবর, ২০০২ সালে মাদক পাচার- সহ একাধিক অভিযোগে প্রথমবার সল্টলেক থেকে আনিসুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার কাছ থেকে দু' কেজি গাঁজা  ও সাড়ে তিন কেজি হেরোইন পাওয়া গিয়েছিল। ধৃত আনিসুরের বিরুদ্ধে আগে থেকেই মাদক পাচার বা এনডিপিএস আইনে একাধিক মামলা ঝুলেছিল। আনিসুর যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন সেই বাড়ির মালিককেও গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এরপর ২০০৬ সালে এনডিপিএস মামলায় চূড়ান্ত শাস্তি হিসাবে  নগর দায়রা আদালত আনিসুরকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।  নিম্ন আদালতের  নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ওই মাদক পাচারকারী কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। ২০১১ সালে  হাইকোর্ট তার মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে ১৪ বছরের জেলের সাজা ঘোষণা করে। 

এর পরেও অবশ্য শুধরোয়নি আনিসুর। দমদম সেন্ট্রাল জেলে বন্দি থাকাকালীন ২০১৪ সালে ফের তার কাছ থেকে সাড়ে তিন কেজি হেরোইন উদ্ধার হয়। সেই মামলায় ফের বারসত আদালত তাকে ফাঁসির সাজা দেয়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ২০১৬ সালে কলকাতার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল আনিসুর। মঙ্গলবার  সেই মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে। দু' পক্ষের সওয়াল জবাবের শেষ পর্যন্ত আনিসুরের মৃত্যুদণ্ডের সাজা মকুব করেন দুই বিচারপতি। 

মামলার শুনানিতে কেন্দ্রীয় সরকারের হয়ে আইনজীবী জীবন চট্টোপাধ্যায় ওই অপরাধীর মৃত্যুদণ্ডের পক্ষেই সওয়াল করেছিলেন।  কিন্ত আনিসুর রহমানের তরফে আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় এবং ইন্দ্রজিৎ দে বলেন, '২০১৪ সালে এনডিপিএস আইনে একটা সংশোধনী আসে। ওই আইনে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি কমানোর কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন শর্তও আরোপ করা হয়েছে। এই সংশোধন অনুয়ায়ী অভিযুক্তকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যায় না।' কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী অবশ্য পাল্টা সওয়াল করে বলেন, 'ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৪ সালের আগে। তাহলে কী করে এই আইন আনিসুরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে?' যদিও দু' পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আনিসুর রহমানের ফাঁসির সাজা মকুব করে ৩০ বছরের জেল ও ৩ লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ দেয় আদালত। বর্তমানে আনিসুর রহমানের বয়স ৭৫ বছর। দমদম সেন্ট্রাল জেলেই বন্দি রয়েছে সে। 
 

Share this article
click me!