বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, অন্তত পাঁচ বার রাজ্যপাল বেরিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, শাসকদলের মহিলা বিধায়কেরা তাঁকে বেরোতে দেননি। জগদীপ ধনখড়কে ধাক্কা মারা হয়েছে।
আজ বাজেট অধিবেশন (Budget Session) শুরু হওয়ার ঠিক আগেই উত্তাল হয়ে যায় বিধানসভা (West Bengal Assembly)। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar) উদ্বোধনী ভাষণ শুরু করার আগেই ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখআতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা (BJP MLA)। আর এই বিক্ষোভের জেরে তিনি ভাষণ দিতেই পারছিলেন না। পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও তৃণমূল বিধায়কদের অনুরোধে ভাষণের প্রথম লাইন ও শেষ লাইন পড়েই বিধানসভা ছাড়েন তিনি। ঘণ্টাখানেকের সেই ঘটনার জের চলল দিনভর। এরপর ওই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালকে হেনস্থা করা হয়েছে বলে তৃণমূল বিধায়কদের (TMC MLA) বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে রাজভবনে যান তাঁরা। আর রাজ্যপালকে হেনস্থা করার জন্য সরাসরি শশী পাঁজা, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের মতো তৃণমূল বিধায়কদের দিকে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। এদিকে এই নিগ্রহের কথা শুনেই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharya)।
বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, অন্তত পাঁচ বার রাজ্যপাল বেরিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, শাসকদলের মহিলা বিধায়কেরা তাঁকে বেরোতে দেননি। জগদীপ ধনখড়কে ধাক্কা মারা হয়েছে। শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, "রাজ্যপাল স্বীকার করবেন কি করবেন না, জানি না। তবে রাজ্যপালকে ধাক্কা মেরেছে তৃণমূলের গুণ্ডা বিধায়করা। মুখ্যমন্ত্রীর চোখের ইশারায়, একাধিক মহিলা বিধায়ক শারীরিক নির্যাতন করেছে রাজ্যপালকে।" যদিও রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় নিজে ‘হেনস্থা’-র অভিযোগ করেননি। সরাসরি শশী পাঁজা, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যদের নাম করে ‘গুন্ডা বিধায়ক’ বলেও উল্লেখ করেন শুভেন্দু।
আরও পড়ুন- 'মুখ্যমন্ত্রীর ইশারায় মহিলা বিধায়করা রাজ্যপালকে হেনস্থা করেছে', বিস্ফোরক শুভেন্দু
আর এই ঘটনায় সরাসরি তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় রাজ্যপালকেই কটাক্ষ করেছেন চন্দ্রিমা। তিনি বলেন, "উনি কি ঢং করতে করতে এতই দুর্বল হয়ে গিয়েছেন! অত বড় লম্বা-চওড়া একটা মানুষকে আমরা নির্যাতন করব?" চন্দ্রিমার দাবি, মুখ্যমন্ত্রী হাত জোড় করে রাজ্যপালকে অনুরোধ জানাচ্ছেন, এমন ঘটনা আগে কখনও দেখা যায়নি। ভাষণ পড়তে রাজ্যপালের কাছে হাতজোড় করে অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি রাজ্যপাল সংবিধান অনুসারে কাজ করেননি বলেও দাবি করেন চন্দ্রিমা। তিনি বলেন, "ওনার ভাষণ পছন্দ নাও হতে পারে। কিন্তু, ভাষণ পাঠ করা ওনার সংবিধানিক দায়িত্ব। যা করা উচিৎ ছিল, তা তিনি করেননি।"
আরও পড়ুন- আজ বাজেট অধিবেশন, বহু বিতর্কের পর বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল
এরপর মুখ্যমন্ত্রীর চোখের ইশারাতে ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন শুভেন্দু। সেই প্রসঙ্গে চন্দ্রিমার পাল্টা দাবি, "আদতে রাজ্যপাল আর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর মধ্যেই চোখে চোখে কথা হয়েছে। কী ভাবে অধিবেশন-কক্ষে ২০-২৫ মিনিট ধরে বিক্ষোভে প্রশ্রয় দিলেন রাজ্যপাল? ওয়াকআউট করে যেতে বলেছেন রাজ্যপালই। মুখ্যমন্ত্রীর এত খারাপ অবস্থা হয়নি যে আমাদের চোখের ইশারা করবেন।"
আরও পড়ুন- বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনই উত্তাল বিধানসভা, ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ বিজেপির
রাজ্যে ৩৫৬ লাগু নিয়ে বিজেপি বিধায়করা এদিন ফের দাবি তুললে, তা নিয়েও কটাক্ষ করেন চন্দ্রিমা। পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, "বিরোধীরা কি সংবিধান ভালো করে পড়েছেন? এ নিয়ে আদালতের রায়গুলো পড়ে দেখেছেন? সংবিধান জানা নেই বলেই বারবার ৩৫৬-র কথা বলেন।"